সিলেট ব্যুরো :: সিলেটের জৈন্তাপুরের ৭নং গ্যাস কূপ সংলগ্ন শিকারখাঁ গ্রামে চলছে পরবেশ বিধ্বংসি পাহাড় (টিলা) কাটার মহোৎসব । নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে বিভিন্ন জাতের চারা ও গাছ । কিন্তু রহস্যজনক কারনে স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছে । তবে অভিযোগ ওঠেছে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ ও উপজেলা ভুমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড)’র বিরুদ্ধে ।
জানা গেছে, বিগত দু’সপ্তাহ ধরে হরিপুর গ্যাস ফিল্ডের দুই কর্মচারীর নেতৃত্বে শিকার খাঁ গ্রামের বাবলু মিয়ার পাহাড় (টিলা) কেটে নির্বিচারে পরিবেশ বিধ্বংস করে টিলার মাটি ব্যবহার করছে হরিপুর গ্যাস ফিল্ড কোম্পানীর আরো একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টান প্যারাডাইস কোম্পানী লিঃ । খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হরিপুর গ্যাস ফিল্ড কোম্পানী কচুঘর বিলেরপাড় এলাকায় একটি নি¤œাঞ্চল ভূমি (প্লট) প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে মাটি ভরাট বরাদ্দের কাজ টেন্ডার দেয় । এ টেন্ডার পেয়ে যান প্যারাডাইস কোম্পানীর সেক্রেটারি তারেক ।
পরবর্তীতে প্যারাডাইস কোম্পানীর সেক্রেটারি নিয়ম বর্হিভুত পুনরায় সাব-টে›ন্ডার দিয়ে দেন হরিপুর গ্যাসফিল্ডের দু”কর্মচারীকে । তারা হলেন, উমনপুর গ্রামের মঈনুল ও বালিপাড়া গ্রামের জালাল উদ্দিন । এরপর প্যারাডাইস কোম্পানীর সেক্রেটারি কৌশলে সঁড়ে দাঁড়ান । শুরু হয়ে যায় এ দুই প্রভাবশালী কর্তার পরিবেশ বিরোধি অভিযান । গোপনে শিকার খাঁ গ্রামের বাবলূ মিয়াকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে পাহাড় (টিলা) হাতিয়ে নেয় তারা । শুরু হয় পাহাড় (টিলা) গাছগাছালি কেটে ফেলার মহোৎসব ।
এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় এলাকার শান্তিপ্রিয় সচেতন নাগরীক পাহাড় (টিলা) কাটার বিরুদ্ধে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত স্বারকলিপি দাখিল করেছেন । কিন্তু রহস্যজনক কারনে আদৌ প্রশাসন তেমন কোন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি । অথচ প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে একটানা রাত ৮টা পর্যন্ত্য তিন তিনটি এস্কোবেটর (ক্যাটার পিলার) মেশিন দিয়ে বীরদর্পে পাহার (টিলা)’র মাটি কেটে পার্শ্ববর্তী কচুঘর বিলেরপাড় নামক স্থানে নিয়ে ফেলা হচ্ছে প্রকাশ্যে দিবালোকে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, থানা পুলিশ ও ভুমি অফিসের দায়িত্বে থাকা তশিলদার প্রতিসপ্তাহে বড় অংকের চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছেন । তারা এসময় প্রতিবেদকের নিকট অভিযোগ করে বলেন, পাহাড় (টিলা) গাছগাছালি কাটার ফলে পাহাড়ি পর্যটন এলাকা এখন হুমকির মূখে । কারন ওই এলাকায় উৎলারপাড় অপরুপ সৌন্দর্যের অগ্নিশিখা চব্বিশঘন্টা প্রজ্বলিত আছে। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রথম গ্যাসক’প হরিপুর গ্যাসক’পে এর প্রভাব বিস্তার করছে । যেকোন সময় কালের গর্ভে এসকল এলাকা তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
উল্লেখ্য থাকে যে, বিগত ১৯ডিসেম্বর ২০১৮ইং তারিখে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান করেন স্থানীয় এলাকার সচেতন নাগরীক ।
এ বিষয়ে গ্যাসফিল্ড কর্মচারী সাব-টেন্ডার নেওয়া ব্যাক্তি জালাল উদ্দিনের সাথে মুটোইফোনে যোগযোগ করলে তিনি কৌশলে পাশ কাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি সিলেট গ্যাসফিল্ডে চাকুরি করি, এ কাজটা গ্যাসফিল্ড নিয়েছে । এবং এলাকার মানুষকে বুঝিয়ে কাজ করার ব্যাপারে বলেছি । মাটি কাটার ব্যাপারে কিছু জানিনা । তার অপর সঙ্গি মঈনূলকে কল দিলে তার মুটোয়ফোন রিসিভ হয়নি । একইভাবে প্যারাডাইস কোম্পানী লিঃ’র সেক্রেটারীও কল রিসিভি করেননি ।
অপরদিকে জৈন্তাপুর উপজেলার তশিলদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এরকম সংবাদ পেয়ে আমি ও আমার এসিল্যান্ড স্যার ঘটনাস্থলে যাই । সেখানে গিয়ে দেখি অনেক গাছগাছালি আছে । তবে এটাকে টিলা বলা যাবেনা , এটা সমতল ভুমির মতো দেখতে । তবে এবিষয়ে জৈন্তাপুর এসিল্যান্ড জানান, আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করে আসছি , সেখানে কোন টিলা কাটা হয় নাই ।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারী মুটোইফোনে কল দিলে মুটোইফোন রিসিভ না হওয়ায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি । তবে জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি মাইনূল জাকিরের সহীত মুটোইফোনে আলাপকালে তিনি এ রকম ঘটনা সর্ম্পকে কিছু জানেননা বলে জানান ।
পাঠকের মতামত: