যেভাবে সিলেট গেলেন : রাজধানীর আশকোনায় হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিপরীতে পুলিশ চেকপোস্টে বোমা বিস্ফোরণে এক যুবক নিহত হওয়ার পর সারা রাত দেশের বিভিন্ন এলাকায় র্যাবের অভিযান সমন্বয় করেন তিনি। সিলেটের আতিয়া মহলের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোরা দায়িত্ব নেওয়ার পর সেখানে ছুটে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখান লে. কর্নেল আজাদ। তার সহকর্মীরা বলছিলেন, নিজে কমান্ডো হওয়ার কারণেই সিলেটে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করছিলেন তিনি। র্যাবের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই তাড়াহুড়ো করে সিলেটে যাওয়ার বিমান টিকিট সংগ্রহ করান তিনি। জুনিয়র সহকর্মী মেজর আজাদকে নিয়ে ছুটে যান সিলেটের আতিয়া মহলের অভিযানে। জঙ্গিবাদ দমনে নিজের অভিজ্ঞতার কথা শোনান অভিযানের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র এবং পরিচিত সহযোদ্ধা কমান্ডোদের। সারাদিন সেখানে অবস্থান শেষে রাতেই তার ঢাকায় ফিরে আসার কথা ছিল। সে অনুযায়ী ঘটনাস্থল ত্যাগ করার প্রস্তুতিও নেন তিনি এবং তার অধস্তন মেজর আজাদ। গাড়িতে ওঠার সময়ই লে. কর্নেল আজাদের চোখ পড়ে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক চৌধুরী আবু মোহম্মদ কয়সর এবং জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলামের তল্লাশির দৃশ্যে। এ সময় তাদের ডেকে বলছিলেন, এভাবে তল্লাশি করা ঠিক না। প্রশিক্ষিত বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সহায়তা নেওয়ার জন্য বলেন তিনি। তার মুখের কথা শেষ না হতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় বোমাটি। মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন দুই পুলিশ পরিদর্শক, লে. কর্নেল আজাদ, মেজর আজাদসহ অন্তত ১০ জন। একটি স্প্লিন্টার তার চোখ দিয়ে মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। গুরুতর অবস্থায় তাদের নেওয়া হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় এই দুই সেনাকর্মকর্তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে আসা হয়। পরদিন উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে।
এই সেনা কর্মকর্তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা পেয়েছেন এমন অনেকেই এ প্রতিবেদককে বলেছেন, অনেক অসহায় মানুষের আশ্রয়স্থল ছিলেন লে. কর্নেল আজাদ। তার কাছে গিয়ে কেউ খালি হাতে ফেরেননি। নিজে কিছু না করতে পারলেও অন্তত যেখানে গেলে তারা সহায়তা পাবেন সেখানে নিজ উদ্যোগে বলে দিতেন তিনি।
লে. কর্নেল আজাদের পারিবারিক নাম রাসেল। সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি পড়াশোনা করেছেন বিকেএসপি-তে। তবে বেড়ে উঠেছেন আগারগাঁও তালতলার ছয়তলা সরকারি কলোনিতে। ওই কলোনিরই ওই সময়ের বাসিন্দা বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবী শাহ্ হান্নান মাহ্বুব (পল্লব) এ প্রতিবেদককে বলেন, ১৯৮৪ সাল থেকে শতদল-ঘ ভবনের ৩০৪ নম্বর ফ্ল্যাটে থাকতেন রাসেল ভাইরা (লে. কর্নেল আজাদের পারিবারিক নাম)। আমরা থাকতাম ৪০৪ এ। রাসেল ভাইয়ের আহত হওয়ার খবর শোনার পর থেকে কোনো কাজে মন বসাতে পারছি না। এমন ভালো মানুষ আমার জীবনে কম দেখেছি। তার কাছে ধনী-গরিবের কোনো ব্যবধান নেই। সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পরও মাঝে মাঝেই ছুটে আসতেন কলোনিতে। সৃষ্টিকর্তার কাছে রাসেল ভাইয়ের জীবন ভিক্ষা করছি। কলোনির মসজিদে রাসেল ভাইয়ের জন্য প্রার্থনা হচ্ছে। আমার বিশ্বাস আমাদের মাঝে আবার ফিরে আসবে। সিঙ্গাপুরে সেনা কর্মকর্তা আজাদের চিকিৎসার খোঁজখবর রাখছেন সরকারের এমন এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, আজাদের অবস্থা সংকটাপন্ন। তবে চিকিৎসকরা এখনো আশা ছাড়েননি। একটা মিরাকলের প্রত্যাশা করছেন তারা।
জানা গেছে, কমান্ডো আজাদ শনিবার সিলেট মহানগরীর দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ীতে সেনা নেতৃত্বে জঙ্গি নির্মূল অভিযানে অংশ নিতে যান। সন্ধ্যায়ই তার ঢাকা ফেরার কথা ছিল। বিকালে অভিযানস্থলের অদূরে পড়ে থাকা একটি বস্তায় বিভিন্ন সরঞ্জামাদি পরখ করে দেখছিলেন পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তা পরিদর্শক চৌধুরী মো. আবু কয়সরসহ অন্যরা। এ সময় বিচ্ছিন্নভাবে পুলিশের সদস্যদের সরঞ্জামাদি দেখতে নিষেধ করছিলেন র্যাবের গোয়েন্দা প্রধান আজাদ। কথা বলা শেষ হওয়া মাত্রই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় বোমাটি। ঘটনাস্থলেই নিহত হন পুলিশের ওই পরিদর্শক। গুরুতর আহত হন লে. কর্নেল আজাদ, মেজর আজাদসহ অন্তত ১০ জন। তাৎক্ষণিকভাবে গুরুতর অবস্থায় লে. কর্নেল আজাদকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে ঢাকা সিএমএইচ-এ নিয়ে আসার পর তাকে গঠন করা হয় উচ্চপর্যায়ের মেডিকেল বোর্ড। প্রসঙ্গত, লে. কর্নেল আজাদ বিএমএ ৩৪ লং কোর্সের মাধ্যমে ৫ জুলাই ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ২৬ অক্টোবর ২০১১ সালে মেজর থাকাবস্থায় র্যাবে যোগ দেন। তৎকালীন র্যাবের গোয়েন্দা প্রধান লে. কর্নেল জিয়াউল আহসান (বর্তমানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) এর তত্ত্বাবধানে কাজ করেন গোয়েন্দা শাখায়। একের পর এক সফল অপারেশন করে অপরাধীদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে ওঠেন এই সেনা কমান্ডো। র্যাবে কর্মরত অবস্থাতেই তিনি লে. কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেন। গত বছর রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন কমান্ডো লে. কর্নেল আজাদ। সম্প্রতি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ—বিজিবিতে তার পোস্টিং হয়। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে লে. কর্নেল আজাদের র্যাব থেকে বিজিবিতে যোগদানের কথা।
- চকরিয়ায় ডাকাতের গুলিতে লেফটেন্যান্ট তানজিম খুন, মায়ের আহাজারী, শোকের মাতম, জানাযা সম্পন্ন
- ডুলহাজারায় সেনা কর্মকর্তা তানজিম হত্যার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ
- চকরিয়ায় নারী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় -জেলা তথ্য অফিসের
- চকরিয়ায় আ,লীগের প্রভাবে দখল হওয়া বাজার ফিরে পেতে চায় ব্যবসায়ীরা
- চকরিয়ার যুবলীগ নেতা কছিরের রয়েছে সম্পদের পাহাড়
- চকরিয়ায় ডাকাতের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হলেন তরুণ সেনা কর্মকর্তা তানজিন
- ফাইতং ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবীতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
- চকরিয়ায় ৪৬টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি
- চকরিয়ায় ইট বোঝাই ডাম্পার ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে ভন্ড বৈদ্যের আবির্ভাব
- বৈষম্য মূলক নিয়োগে ফুঁসে উঠেছে চৌদ্দ হাজার সিএইচসিপি!
- ডুলহাজারায় সেনা কর্মকর্তা তানজিম হত্যার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ
- চকরিয়ায় ডাকাতের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হলেন তরুণ সেনা কর্মকর্তা তানজিন
- ফাইতং ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবীতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
- চকরিয়ার যুবলীগ নেতা কছিরের রয়েছে সম্পদের পাহাড়
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- কক্সবাজারে যোগ হচ্ছে রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার :
- চকরিয়ায় ৪৬টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি
- চকরিয়ায় আ,লীগের প্রভাবে দখল হওয়া বাজার ফিরে পেতে চায় ব্যবসায়ীরা
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
পাঠকের মতামত: