নিউজ ডেস্ক ::
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৪০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করার পর মহাজোটের শরিকদের মাঝে বাকি আসন বণ্টন করা হয়েছে। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ পর্যায়ে শরিকদের মধ্যে দু-একটি আসন পরিবর্তন হতে পারে।’
মহাজোটের শরিকদের চূড়ান্ত আসন বরাদ্দের ঘোষণা দিয়ে শুক্রবার সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মহাজোটের শরিক দলের নেতাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রার্থীদের জন্য ২৪০টি আসন রেখে জোটের অন্যান্য শরিকদের ৬০টি আসন ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওবায়দুল কাদের আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আকতার, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের যারা শরিক তারা ইচ্ছে করলে তাদের দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারবেন। তবে শরিকদের যেসব আসনে নৌকা প্রতীক দিয়েছি সেসব আসনের প্রার্থীদের আজ চিঠি দিয়ে জানিয়েদিলাম। এরমধ্যে মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির ৫ আসন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ৩ আসনে, বিকল্পধারা ৩ আসনে, বাংলাদেশ জাসদ ১ আসনে, তরিকত ফেডারেশন ২ আসনে এবং জাতীয় পার্টি-জেপি (মঞ্জু) ২টি আসনের চিঠি দেওয়া হয়েছে। ফলে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি বাদে অন্য দলের জন্য ১৬টি আসনের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
শরিকদের মধ্যে এরশাদের জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীকে ছাড়া অন্য সবাই নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এবারের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জন্য ৪৪ আসন রাখা হয়েছে। যদিও এই ৪৪টি আসনের মধ্যে থেকে দুই-একটি এদিক-সেদিক হওয়ার আভাস দিয়ে রেখেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আমাদের বড় শরিক জাতীয় পার্টির জন্য ৪২-৪৪টি আসন বরাদ্দ করা হয়েছে।
কাদের বলেন, আমাদের শরিকরা ইচ্ছে করলে নিজেদের প্রতীকে আরো বেশি আসনে নির্বাচন করতে পারবেন। শরিক দলের নিজেদের শক্তিমত্তার পরিচয় জানান দিতে তাদেরও সুযোগ দিয়েছি।
এ সময় পাশে বশা বিকল্পধারার মহাসচিব নিচু স্বরে আরো আসনের বিষয়ে বলতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, মান্নান ভাই আপনি চাইলে কুলা মার্কায় আরো প্রার্থী দিতে পারেন। আমরা তিনটার বেশি দিতে পারবো না। শ্রদ্ধেয় বি. চৌধুরী সাহেবের সাথে আমাদের নেত্রী আলাপ করবেন। আমি জানি আপনাদের আরো প্রার্থীর প্রত্যাশা আছে। তবে আমরা নৌকা প্রতীকে এর বেশি দিতে পারব না। আমাদের অন্য শরিকরা সবাই একমত হয়েছেন, আশা করি আপনিও একমত হবেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি বিকল্পধারা চাইলে কুলা মার্কায় নির্বাচন করবে, জাসদ মশাল মার্কা, তরিকত ফুলের মালা মার্কায় তাদের প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করতে পারবে। তবে আমরা যাদের নৌকা প্রতীক দিয়েছি তাদের চূড়ান্ত তালিকা এটাই। আমরা দফায় দফায় আলাপ-আলোচনা করে দলের এবং জোটের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছি। শনিবার আমাদের সভানেত্রীর স্বাক্ষর সম্বলিত তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেব। সেখান থেকে আওয়ামী লীগের কে কোথায় ভোট করছেন তার তালিকা পাওয়া যাবে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি তার সঙ্গে কথা বলে জানাবো তার আসলে কী সমস্যা। আমাদের শরিকদের মাঝে মান অভিমান হবে, আবার একসাথে নির্বাচন করব।
দশম সংসদে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির এমপি ছিল ৩৪ জন, জাতীয় পার্টি (জেপি) দুজন, ওয়কার্স পার্টির ৬ জন, জাসদের ৫ জন, তরিকত ফেডারেশনের ২ জন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাপার প্রার্থী বেড়েছে, কমেছে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের।
পাঠকের মতামত: