চকরিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ আতংক থেকে মুক্তি পেলেও উপকুলীয় এলাকার মানুষের দূর্দশা এখনো কাটেনি। সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে লোকালয়ের খালে বিলে ও চাষাবাদী জমিতে প্রবেশ করা সামুদ্রিক লবণাক্ত পানি বের না হওয়ায় উপজেলার অন্তত ১০ হাজার মানুষ সাইক্লোন শেল্টারসহ বিভিন্নস্থানে আশ্রয়ে রয়েছে। বেড়িবাঁধ ও গ্রামীণ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
চকরিয়ার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহাসান উল্লাহ জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত ৮ মেট্রিক টন চাউল ও নগদ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ এসেছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম জানান, বেশ কিছু এলাকা ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতির একটি বিবরণ বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে তৈরী করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। আংশিক তথ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি দেখানো হয় মৎস্য খাতে। প্রায় ৩০ কোটি টাকার চিংড়ি ভেসে গেছে। পুরো ক্ষতির হিসাব খুব শীঘ্রই পাওয়া যাবে। তিনি আরো জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ৭হাজার ১’শ টি বসতঘর আংশিক ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ২.৬২ কিলোমিটার পাঁকা রাস্তা ও ৬.৫০ কিলোমিটার পাঁকা রাস্তা আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ২.৫৯৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ৮৬.২০ হেক্টর সম্পূর্ণ ও ১.৩৫ হেক্টও আংশিক ফসল নষ্ট হয়ে কৃষকদেও ক্ষতি হয় ২ কোটি ২৬ লাখ ৫’শ টাকার। এছাড়া ক্ষতির পুরোপুরি হিসাব নিরুপনে আরো কয়েক দিন সময় লাগবে ।
অপরদিকে ঘুর্ণিঝড় রোয়ানু’র তান্ডবে চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে বিলীন হয়ে গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ। বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে বর্তমানে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে লবনাক্ত পানি। এতে ওই এলাকার চিংড়ি চাষীরা এবছর আর্থিকভাবে দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সোমবার ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকায় শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। ৪নম্বর ওয়ার্ডের ছয়কুড়িটিক্কা এলাকায় হায়দার বাপের টেক এলাকার কালর্ভাট ভেঙ্গে লবন পানি ঢুকে তলিয়ে যাচ্ছে চিংড়ি ঘের।
স্থানীয় চিংড়ি চাষী নুরুল আবছার জানিয়েছেন, তার চিংড়ি প্রকল্পটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় চার লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। তার মতো ইউনিয়নের অর্ধ শতাধিক চাষীর কমপক্ষে ২০-২৫লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মহিলা মেম্বার আরজ খাতুন।
চকরিয়া-পেকুয়ার সংসদ্য সদস্য আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইলিয়াছ পেকুয়ার দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে অনেক পরিবারকে সাহায্য করেছি। পর্যাপ্ত সাহার্য্য পেতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবো। ##
####################
চকরিয়ার কৈয়ারবিলে পানির স্কীম চালানোর পাওনা টাকা নিয়ে ৩দফা হামলা, আহত ৪
চকরিয়া অফিস :
চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের স্কীমের পানি চালানোর পাওনা টাকার বিষয় নিয়ে তিন দফায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী ও ভাই সহ ৪জন আহত হয়েছে। এনিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
অভিযোগে জানা গেছে, জমিতে স্কীমের পানি ব্যবহার নিয়ে গত ১৮মে দুপুর ১১টার দিকে কৈয়ারবিল ইউনিয়নের সিকদারপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের পুত্র ছরওয়ার মৌলভীর সাথে মধ্যকৈয়ারবিল ছড়ারকুল এলাকার ছৈয়দ নুরের পুত্র ছৈয়দ নুরের পুত্র আনোয়ার হোসেনের মধ্যে। তাদের দু’জনের মধ্যে হাতা-হাতিও হয়েছে। ঘটনার শেষ হয়ে যাওয়ার পর ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয় কৈয়ারবিলের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ হোছাইন চৌধুরীর বাড়ির গরু বিক্রির টাকা আনতে জনৈক আবুল কালামের কাছে যাওয়ার পথে কৈয়ারবিল সিকদারপাড়া এলাকায় নুরুল কবির মিয়ার ছেলে শহিদুর নেতৃত্বে আনোয়ার হোসেনের উপর পূণরায় হামলা চালানো হয়। এসময় আনোয়ারের মুখমন্ডল ফেটে প্রচুর পরিমাণে রক্ত ঝড়ে মুমুর্ষ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধারে তার স্ত্রী শাকিলা আক্তার (২৩) এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করে শহিদু বাহিনী।
সর্বশেষ ২০মে দুপুর ১১টায় আনোয়ার হোসেনের বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন (৩৫) ও জেঠাতো ভাই আবদুস ছাত্তার (৪০) কে বাড়ি হতে ডেকে এনে ৩দফায় হামলা চালিয়ে আহত করেছে।
আহত আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, পানির স্কীমের বকেয়া পাওনা রয়েছে ছরওয়ার মৌলভীর চাচাতো ভাই মহসিনের কাছ থেকে। কিন্তু তার কাছ থেকে টাকা আদায় করতে না পেরে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে তার উপর হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি হামলাকারী শহিদু এলাকায় শালিস বিচারের নামে নানান অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। হামলাকার শিকার আনোয়ার হোসেন এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান।
পাঠকের মতামত: