মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ::
ক্রেতা সেজে ফাঁদ পেতে লামায় উদ্ধার করা হয়েছিল অস্ত্র ও গুলির বড় চালান ও আটক করা হয় ৪ জনকে। বৃহস্পতিবার রাতে বান্দরবানের লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দূর্গম রাজা পাড়া বিল হতে সেনাবাহিনী ও র্যাব-৭ যৌথ অভিযান চালিয়ে ২৫টি দেশীয় তৈরি বন্ধুক, ২ হাজার ৩৭ রাউন্ড গুলি ও ৪ জনকে আটক করে। এই বিষয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৭) চট্টগ্রাম পতেঙ্গাস্থ অধিনায়কের কার্যালয়ে শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১১টায় সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফ করেন ।
এই ঘটনায় লামা থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি এবং ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনে অপরাধ দেখিয়ে গ্রেফতার ৪ জন সহ আরো অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামী করে দুইটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছেন লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন। মামলা নং- ০৬ ও ০৭। তারিখ- ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ইং।
মামলা দুইটির তদন্ত কর্মকর্তা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক কামাল হোসেন বলেন, অস্ত্র মামলায় ২৫টি দেশীয় বন্ধুক ও ৩৭ রাউন্ড গুলি জব্দ দেখানো হয়েছে। মামলা দুইটির তদন্তের কাজ চলছে।
রাজা পাড়া এলাকায় সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, র্যাব তাদের সোর্স দিয়ে বনপুর বড় মার্মা পাড়ার বাসিন্দা জনৈক মংচানু মার্মার মাধ্যমে কিছু অস্ত্র ক্রয় করবে বলে জালপাতে। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় অস্ত্র গুলো সরবরাহের কথা ছিল। পূর্ব নির্ধারিত যথাসময়ে অস্ত্র ক্রয়ের জন্য আসে র্যাবের সোর্স। এসময় তাদের নিরবে ফলো করে র্যাব ও সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে বনপুর বাজারের দক্ষিণ পাশে রাজা পাড়া বিলের তেতুল গাছের নিচে আসলে চারদিক থেকে সেনাবাহিনী ও র্যাব তাদের ঘিরে ফেলে ও অস্ত্র, গোলাবারুদ সহ ৪ জনকে আটক করে। আটককৃতরা হল, চাইনুং মারমা (৩৬), তুইসা মং (৩৬), মিফং মার্মা (৪১) ও এক্য মার্মা (৪০)। প্রতিটি দেশীয় বন্ধুক ২ হাজার ৫শত হতে ৪ হাজার ৫ শত টাকা করে ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে স্থানীয় অনেকে জানান, গ্রেফতার মিফং মার্মা ছাড়া অন্যান্যরা শ্রমিক ছিল। গ্রেফতার মিফং মার্মা (৪১) পিতা- মৃত চিংফুয়াং মার্মা ইউনিয়নের হারগাজা লাওততা পাড়া বাসিন্দা। সে একজন দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারিগর। অন্যান্যরা টাকার বিনিময়ে অস্ত্রগুলো পরিবহন করেছিল। স্থানীয়রা আশংকা করে বলেন, গয়ালমারা এলাকার দূর্গম রোয়াজা পাড়া ও ত্রিশডেবা মার্মা পাড়ায় দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারখানা থাকতে পারে।
ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার জানান, গয়ালমারা, ত্রিশডেবা ও রোয়াজা পাড়া এলাকা সমূহ সন্ত্রাসীদের অভয়রাণ্যে পরিণত হয়েছে।
পাঠকের মতামত: