অনলাইন ডেস্ক :: দেশে হুন্ডি কারবার ক্রমেই বাড়ছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচারে রয়েছে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশ থেকে প্রতিবছর টাকা পাচার হচ্ছে। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও গড়ে উঠেছে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। বিদেশ গমন, চিকিৎসা ব্যয় মেটানো, ব্যবসা–বাণিজ্য পরিচালনা, বৈদেশিক কেনাকাটা থেকে শুরু করে জীবনযাত্রার নানা ক্ষেত্র এখন হুন্ডির সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে পড়েছে। এসব টাকা হুন্ডি ব্যবসায়ীরা মাদক-সোনাসহ বিভিন্ন চোরাচালানে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একটি গোয়েন্দা সংস্থার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বেশির ভাগ মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানকে সোনা চোরাচালানে অর্থের জোগানদাতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে তারা ডলার পাচার করছে বলেও উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে। প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটি অংশ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠায় হুন্ডির মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, চট্টগ্রামে বছরে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা আসে হুন্ডির মাধ্যমে। অভিযোগ রয়েছে, প্রবাসীরা বৈধ উপায়ে টাকা পাঠালেও দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এ টাকা তুলতে গিয়ে নানা হয়রানির শিকার হন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে তারা হুন্ডিকেই বেছে নেন।
সিএমপির ডিসি ডিবি (বন্দর) মো: শহীদুল্লাহ এ প্রসঙ্গে বলেন, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাতে গিয়ে বিভিন্ন সময় ছিনতাইয়ের স্বীকার হয় ভুক্তভোগীরা। তবুও বৈধ পথে পাঠাতে তাদের দারুণ অনীহা। এর কারণ অনুসন্ধান করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধীরা এর সুযোগ নিচ্ছে। দেশী–বিদেশী কোন চক্র দেশের অর্থ বিদেশে খুব সহজে পাঠিয়ে নিজের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে। এ থেকে সাবধান হওয়ার সময় এখনই।
হুন্ডির ইতিহাস সম্পর্কে যতটুকু জানা যায় তাতে দেখা যায়, মুঘল অর্থনীতির অধীনে বিকশিত হওয়া একটি অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থ লেনদেনপত্র হলো হুন্ডি। এটি ব্যক্তিপর্যায়ে অর্থ প্রেরণের একটি কৌশল হলেও মুঘল সাম্রাজ্যের রাজস্ব কর্মকর্তারা এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে অর্থ প্রেরণের জন্য প্রায়ই হুন্ডি ব্যবহার করতেন। সে সময় মুঘল সাম্রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই হুন্ডি ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। হুন্ডি বলতে সাধারণত বাণিজ্য ও ঋণ লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত আর্থিক দলিলগুলোকে বোঝানো হতো। অর্থ প্রেরণের উপায়, ঋণ প্রদান (অর্থ ধার) এবং বাণিজ্যিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বিনিময় বিল হিসেবেও হুন্ডি ব্যবহৃত হতো। কৌশলগতভাবে বলা হয়ে থাকে, হুন্ডি বলতে এমন একটি লিখিত শর্তহীন আদেশকে বোঝানো হয়ে থাকে, যা এক ব্যক্তির নির্দেশ অনুযায়ী অন্য এক ব্যক্তি লিপিবদ্ধ করে থাকেন এবং নির্দেশনামায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করা হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে দেশে–বিদেশে অবস্থানরত কিছু অসৎ ব্যবসায়ী হুন্ডির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি করে চলেছে।
সামপ্রতিক বিভিন্ন তথ্যমতে, হুন্ডি ক্রমেই ব্যাপক হচ্ছে। হুন্ডি এখন অর্থ পাচারের একটি ভয়ংকর মাধ্যম। হুন্ডিতে মূলত এজেন্টের মাধ্যমে টাকা লেনদেন হয়। এটি পুরোপুরি চলে বিশ্বাসের ওপর। এখানে কোনো কাগজপত্রের লেনদেন হয় না। এ প্রক্রিয়ায় টাকা পাচার হওয়ায় পাচারকারীদের শনাক্ত করা খুবই কঠিন কাজ। এছাড়া হুন্ডির মাধ্যমে টাকা স্থানান্তরে খরচও আবার তুলনামূলক কম। এ কারণেই পাচারকারীরা হুন্ডিকেই পছন্দ করে বেশি। তবে এখানে ঝুঁকি অনেক বেশি। কোনো কারণে টাকা আত্মসাৎ করা হলে তা আর ফেরত পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। আমাদের দেশের অনেক সাধারণ মানুষ, যারা হুন্ডি ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে অনেক সময় সর্বস্বান্ত হচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগ অংশই হুন্ডি সম্পর্কে তেমন কিছুই বোঝেন না। ফলে দেখা যায়, একটি অংশ না বুঝে নিজেদের অগোচরেই জড়িয়ে পড়ছেন এ অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে। তাই হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ করতে জনসাধারণের সচেতনতা বাড়ানো একান্ত প্রয়োজন। পাশাপশি হুন্ডির সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত: গত ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রায় গণহারে ৬০০ প্রতিষ্ঠানকে মানি চেঞ্জার লাইসেন্স দেওয়া হয়। নানাবিধ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই ৩৬৬টি মানি চেঞ্জার লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হয়। বাকিরা নিয়ম নীতি লঙ্ঘনের মাধ্যমেই তাদের টাকা লেনদেনের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক জরিপে দেখা যায়, প্রবাসীরা বিদেশ থেকে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠান, ৪০ শতাংশ আসে ব্যাংকিং চ্যানেলে। ৩০ শতাংশ আসে সরাসরি প্রবাসী বা তাদের আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে নগদ আকারে এবং বাকি ৩০ শতাংশ আসে হুন্ডির মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বছরে প্রায় ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার দেশে হুন্ডিতে আসে। এর মধ্যে ৪৫ শতাংশ চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের। এ হিসেবে যদি অর্ধেকও হয় চট্টগ্রামের তাহলে এক বছরে আসে ৯ হাজার কোটি টাকা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, অর্থ পাচারের প্রধান মাধ্যম এখন হুন্ডি। মাঝারি ও ছোট ব্যবসায়ীরাও বিদেশে অর্থ পাচার করে বাড়ি বানাচ্ছেন,জমি কিনছেন, কারখানা গড়ছেন। ব্যবসায়ীরা দেদার অর্থ পাচার করছেন আমদানি–রপ্তানির আড়ালে; আমদানি পণ্যের দাম বেশি দেখিয়ে আর রপ্তানি পণ্যের দাম কম দেখিয়ে। বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয় দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং ও থাইল্যান্ডে। এর বাইরে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম নিয়ে অনেক দিন ধরেই প্রশ্ন উঠছে। সরকারের একাধিক সংস্থা এ নিয়ে তদন্তও করেছে। এ ব্যাপারে অধিকতর তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশের পৃথক তিনটি ইউনিট এবং অর্থ মন্ত্রণালয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশ দিয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী সংস্থাগুলো তদন্তও শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই প্রতিবেদনে হুন্ডি ব্যবসা প্রতিরোধে পাঁচ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করে সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান পরিচালনা। স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের সক্রিয়তা আরও বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে সুপারিশে। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দেশের বৈধ চ্যানেলে স্বল্প খরচে ও দ্রুততম সময়ে টাকা পাঠানোর নিশ্চয়তা বিধান করার পাশাপাশি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে হুন্ডির মাধ্যমে মুদ্রা পাচারের সম্ভাব্য সহায়তাকারী সন্দেহজনক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড নজরদারিতে আনার। সেই সঙ্গে অনুমোদনবিহীন মুদ্রাবিনিময় ব্যবসায়ীদের কাছে জনগণ যাতে না যায়, সে ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রচারণার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
বিশেষ করে চট্রগ্রাম বিভাগের কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ, বান্দরবানের আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পথে গরু, সোনা কিংবা ইয়াবা চোরাচালানে ব্যাপক হারে হুন্ডির ব্যবহার বেড়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কুড়িগ্রামের ৯টির মধ্যে ৭টি উপজেলা দিয়েই সরাসরি ভারত থেকে প্রবাহিত হচ্ছে ছোট–বড় ১৬টি নদ–নদী। এসব নদ–নদী দিয়ে পাচার হয়ে আসে ভারতীয় বড় গরু। আর রৌমারির খাঁটিয়ামারি, বেহুলার চর ও চান্দারচরে বাঁশের আড়ার সাহায্যে নির্মমভাবে কাটাতার পার করা হচ্ছে ছোট গরু। তবে দু’দেশের ব্যাপারিদের মধ্যেকার বিশ্বাসের ওপরেই চলছে এ গরুর ব্যবসা। গরু আনতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের নগদ অর্থের দরকার হয় না। ওপারের ব্যবসায়ীরা গরু পাঠিয়ে দেওয়ার পরে হুন্ডিতে মূল্য পরিশোধ করেন তারা। এভাবেই হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশি টাকাও।
একই ভাবে জানা গেছে, সোনা ব্যবসার অন্তরালে দেদার চলছে হুন্ডি ব্যবসা। সোনা চোরাচালানের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে হুন্ডি বাণিজ্য। প্রতি বছর হুন্ডির মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে, তার সঠিক তথ্য নেই সরকারের কাছেও। কারা কী ভাবে হুন্ডি করছে সে তথ্যও জানে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, দেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হচ্ছে। দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে হুন্ডি ব্যবসা। বৈধ পথে সোনা আমদানির কোনো নীতিমালা না থাকায় দেশের জুয়েলারি বাণিজ্য পুরোপুরি চোরাচালান নির্ভর হয়ে পড়েছে। হুন্ডির মাধ্যমে চোরাচালানে আসছে পাচার করা হাজার হাজার কোটি টাকায় টন টন সোনা। এসব সোনা সংঘবদ্ধ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাত ঘুরে পৌঁছে যাচ্ছে দেশের আনাচে কানাচে, তিন সহস্রাধিক জুয়েলারি দোকানে। বিরাট এ বাণিজ্যের নেটওয়ার্ক সচল থাকলেও সরকার সেখান থেকে কোনো শুল্ক বা কর পাচ্ছে না। এতে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ। সোনা চোরাচালান মামলার তদন্ত–সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলদেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরাও দ্রুত এ ধরনের একটি নীতিমালা ও এর বাস্তবায়ন চান।
এদিকে সামপ্রতিক সময়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, বিশ্বের নামিদামি সব জুয়ার আসরেও দেশ থেকে টাকা যাচ্ছে হুন্ডিতে। শীর্ষস্থানীয় জুয়াড়িরা হংকং, লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্যাসিনোয় দুই হাতে টাকা ব্যয় করে যাচ্ছেন। তথ্যপ্রযুক্তি মাধ্যম ছাড়াও হুন্ডিতেও বিপুল অঙ্কের টাকা পাচার করে নিচ্ছে তারা বিদেশের ক্যাসিনোয়। সংবাদ মাধ্যমের প্রকাশিত সংবাদমতে, লন্ডনের গ্রসভেনর ভিক্টোরিয়া ক্যাসিনো, পাম বিচ ক্যাসিনো, ক্রকফোর্ডস, গোল্ডেন নাগেট,বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো হংকংয়ের ভেনটিয়ান ম্যাকাওসহ উইন ম্যাকাও, গ্রান্ড লিসবোয়া ও স্যান্ডস ম্যাকাওয়ে জুয়াড়িদের উপস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও হতবাক হন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের দামি ক্যাসিনো লাস ভেগাসের নাভেদা, নিউজার্সির আটলান্টিক সিটি, শিকাগোর ইলিনয়স, মিশিগানের ডেটরয়েটেও বাংলাদেশি জুয়াড়িরা পাল্টা দিয়ে বড় বড় দানে জুয়া খেলেন। আর জুয়াড়িরা জুয়ার এসব টাকা নিচ্ছেন হুন্ডিতে। এছাড়া বিদেশি নিয়োগের নামেও দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি–প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে টাকা পাচার হচ্ছে।
একের পর এক মানি এঙচেঞ্জ বন্ধ করেও প্রতিষ্ঠানগুলোর হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ করা যায়নি। গত ১৫ বছরে প্রায় ৬০ শতাংশ মানি এঙচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি হুন্ডি ব্যবসা প্রতিরোধসহ মানি এঙচেঞ্জ ব্যবসায় আরও স্বচ্ছতা আনতে নীতিমালাও কঠোর করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, টাকা পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন যেন তাদের মাধ্যমে না হয়,সে ব্যাপারেও নীতিমালায় সুস্পষ্ট নানা নির্দেশনা রয়েছে। তা সত্ত্বেও নীতিমালা লঙ্ঘন করে সোনা পাচারের কর্মকাণ্ডেও জড়িত থাকছে বলে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অভিযোগ রয়েছে। তবে হুন্ডিতে কিছু লোকের আয় রোজগারের পথ খুলে যায়। বিদেশে যিনি টাকা সংগ্রহ করছেন দেশে তার একটা নেটওয়ার্ক রয়েছে। এ কাজে নিযুক্তরা ঘরে ঘরে গিয়ে টাকা দিয়ে আসেন। ফলে এক শ্রেণীর বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়ে গেল–এমন মন্তব্যও বিশ্লেষকদের।
হুন্ডি ব্যবসার আড়ালে মানব পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। চক্রটি বাংলাদেশের স্থলবন্দর দিয়ে সোনার বার ও ডলার ভারতীয় সহযোগীদের কাছে হস্তান্তর করত। পরবর্তীতে দেশে ফেরার সময় ট্যাঙ ফাঁকি দিয়ে ভারতীয় শাড়ি,গয়না, কসমেটিকস বাংলাদেশে এনে বিক্রি করত। এসব অপরাধ করার জন্য তারা পুলিশসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম–পদবির ভুয়া সিল ব্যবহার করত। হুন্ডি ব্যবসার আড়ালে যেমন মানব পাচারের ঘটনা ঘটে, তেমন মানব পাচারের আড়ালেও চলছে হুন্ডি বাণিজ্য।
পাঠকের মতামত: