ডেস্ক রিপোর্ট :: আসন্ন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৭৭ কোটি টাকা। এ ব্যয় চুতর্থ উপজেলা নির্বাচনী ব্যয়ের প্রায় দ্বিগুণ। থোক বরাদ্দ থেকে নির্বাচনী ব্যয় মেটানো হবে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতে তফসিল ঘোষণা করে মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে পাঁচ ধাপে প্রায় ৫শ’ উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ শুরু করা হবে। এ ক্ষেত্রে সদর উপজেলাগুলোর সকল কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। যেসব উপজেলার মেয়াদ পূর্ণ হবে আরো পরে, সেগুলোতে পরবর্তীতে ভোটগ্রহণ হবে।
নির্বাচন কমিশনের বাজেট শাখা থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাঁচ ধাপে ভোটগ্রহণের জন্য ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছিল নির্বাচন কমিশন। এতে নির্বাচন পরিচালনা খাতে ১৫০ কোটি টাকা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পেছনে ১৮৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিলো।
ইসির বাজেট শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের জন্য থোক বরাদ্দ ছিলো ৪০০ কোটি টাকা। পাঁচ ধাপের সেই নির্বাচনে মোট ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা খাতে ১৫০ কোটি ব্যয় করা হয়েছিলো। এখাতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভাতা ১০০ কোটি টাকা আর রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও ম্যাজিস্ট্রেটদের ভাতা বাবদ ৫০ কোটি টাকা দিতে হয়েছে।
নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার বাহিনীকে ৮০ কোটি টাকা, পুলিশ-র্যাবকে ৬৩ কোটি টাকা, সশস্ত্র বাহিনীকে ২৪ কোটি এবং বিজিবিকে ১৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিলো।
সে সময় দেশের ৪৮৭ উপজেলার মধ্যে পাঁচ ধাপে মোট ৪৫৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হয়। বাকি উপজেলাগুলোতে মেয়াদ শেষে ভোট্রগহণ হয়। সব মিলিয়ে সাড়ে তিনশো কোটি টাকার মতো ব্যয় হয়েছিলো।
ইসির বাজেট শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ এনামুল হক বাংলানিউজকে জানান, পঞ্চম উপজেলা পরিষদের জন্য এবার বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬৭৭ কোটি টাকা। এই বরাদ্দ থেকে ২২৫ কোটি টাকার মতো ব্যয় হবে নির্বাচনী পরিচালনা খাতে। আর বাকিটা ব্যয় হবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়। আগের চেয়ে সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যয় বরাদ্দও বেশি রাখা হয়েছে।
ইসির মুদ্রণ শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী উপকরণ দিয়েই উপজেলা নির্বাচনের অনেকটা অংশ পূরণ হবে। এজন্য এইখাতে কিছুটা সাশ্রয় হবে। নির্বাচনী উপকরণের মধ্যে একটা বিরাট ব্যয় হবে ব্যালট পেপার ও বিভিন্ন মুদ্রণের জন্য। এছাড়া সিল, রশি, ব্যাগ ইত্যাদিও নতুন করে কিনতে হবে।
২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি একযোগে ৪৮১ উপজেলায় ভোট হয়। সে সময় ব্যয় হয়েছিলো প্রায় ১৩৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে নির্বাচন পরিচালনায় ৬৪ কোটি ২৭ লাখ ১২ হাজার টাকা ও আইন শৃঙ্খলায় ৬৬ কোটি ৯৭ লাখ ৪১ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। সে অনুযায়ী, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা ব্যয়ের তুলনায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যয়ের হার ক্রমেই বাড়ছে।
এদিকে ইভিএমে বিরাট আকারে ভোটগ্রহণ করলে মোট ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা, এক্ষেত্রে প্রায় ৭ হাজার ভোটকেন্দ্রের ২১ হাজার এবং ব্যাকআপ হিসেবে আরো ২১ হাজার অর্থাৎ প্রায় ৪২ হাজার ইভিএমের প্রয়োজন পড়বে। প্রতিটি ইভিএম কেনা হচ্ছে ২ লাখ ১০ হাজার টাকায়। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে ইভিএম পরিচালনা ব্যয়। সবমিলিয়ে কেবল এই যন্ত্রে ভোটগ্রহণের জন্যই ব্যয় হবে প্রায় হাজার কোটি টাকা।
পাঠকের মতামত: