ডেস্ক নিউজ:
২০১৬ সালের মাঝামাঝিতে ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। তিনজন শেয়ারধারী পরিচালক ও চারজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি হঠাৎ করে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে ফের বড় পরিবর্তন আনা হয়। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পরিচালক ও এমডি পদে নতুন করে নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর থেকে বিধি বহির্ভূতভাবে বেশি ঋণ দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় ব্যাংকটির বিরুদ্ধে।
বর্তমানে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সংখ্যা ২০। এর মধ্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠানিক শেয়ারধারণকারী পরিচালকের সংখ্যা তিনজন, শেয়ারধারণকারী দেশি পরিচালকের সংখ্যা ১০ জন এবং স্বতন্ত্র পরিচালক রয়েছেন সাতজন।
তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি পরিচালকরা ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের ২২ দশমকি ১৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছেন। এছাড়া বিদেশি তিন পরিচালকের কাছে রয়েছে ১৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ শেয়ার।
বর্তমানে ব্যাংকটির বিদেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কমছে। আগে যেখানে ৪৮ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ ছিল তা বর্তমানে নেমে ৪২ দশমিক ৬২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক জাগো নিউজকে বলেন, ব্যাংকগুলো যেসব অনিয়ম করছে তা পড়লেই গা শিউরে ওঠে। এসব অনিয়মের দায় বোর্ডকে নিতে হবে। তারা দায় এড়াবেন কীভাবে?
প্রভাবশালী চেয়ারম্যানের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফারমার্স ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভয় পান কি না- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, ‘কিছুটা তো পায়ই। বেসরকারি ব্যাংক হলেও এটি পাবলিক প্রতিষ্ঠান। সরকারের আইনি কাঠামোর মধ্যে এবং জনগণের টাকায় এটি চলে। সেজন্য কমিটি এ বিষয়ে আলোচনা করেছে।’
‘ফারমার্স ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শামীম সংকট কিছুটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন’ বলেও মন্তব্য করেন কমিটির সভাপতি। তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে এ কে এম শামীম উপস্থিত ছিলেন। এমডি হিসেবে তিনি আসার আগে এসব ঘটনা হয়েছে। এখন তারা সংশোধনের চেষ্টা করছেন।
বৈঠকে ইসলামী ব্যাংক নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা যেটা দেখেছি, সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংক এগ্রেসিভ লোন দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা তাদের সতর্ক করেছি।
কমিটি সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, নাজমুল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, ফরহাদ হোসেন, মো. শওকত চৌধুরী ও আখতার জাহান অংশ নেন।
সংসদের গণসংযোগ অধিশাখা থেকে পাঠান প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠক এনএরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ও ফারমার্স ব্যাংক পরিচালনায় অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে অধিকতর তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করে ব্যাংকগুলোকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে গ্রাহকদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনের পর সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লি. এর ঋণ বিতরণের হার আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকটির কোন খাতে কী ধরনের গ্রাহককে কী পরিমাণ ঋণ দিচ্ছে তা আগামী বৈঠকে কমিটিকে অবহিত করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পাঠকের মতামত: