ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

আলীকদমে টিআর কাবিখার এককোটি টাকার প্রকল্পের কাজ আটকে আছে, অগ্রিম বিলে হিসাব রক্ষণ অফিসের ‘অবজেকশান’

alikadam loguমমতাজ উদ্দিন আহমদ, আলীকদম (বান্দরবান) :::

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ (টি.আর/কাবিখা) ২য় পর্যায়ের প্রায় এককোটি টাকার উন্নয়ন কাজ এখনো শুরু হয়নি। উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসার প্রকল্পের বিলে স্বাক্ষর না করায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। শুরু থেকেই এসব প্রকল্প গ্রহণ, প্রকল্পের কমিটি গঠন নিয়েও রয়েছে স্বচ্ছতার অভাব।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ২য় পর্যায়ে আলীকদম উপজেলায় টি.আর ও কাবিখা খাতে ৯৭ লক্ষ ৪৬ হাজার ৩৯৯ টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে এসব বরাদ্দের বিপরীতে ৮৩টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, ‘আগামী ৪ জুন আলীকদমের চারটি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই প্রকল্পগুলো স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি দিয়ে বাস্তবায়ন করা হবে। ইতোমধ্যে ৮৩টি প্রকল্পের অগ্রিম বিল ছাড় করার জন্য উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসারের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তিনি বিলে স্বাক্ষর করছেন না। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা রয়েছে জুন মাস পর্যন্ত। প্রকল্প বিলে স্বাক্ষরে বিলম্ব হওয়ায় ঠিকসময়ে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে সমস্যা দেখা যেতে পারে‘।

প্রকল্প বিলে স্বাক্ষর প্রদানে গড়িমসির কথা অস্বীকার করে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসার মোঃ শাহীন নওশাদ বলেন, প্রকল্প কমিটি দিয়ে বিল উপস্থাপন না করায় আমি ৪৪ ও ২৯ লক্ষ টাকার দু’টি অগ্রিম বিল ফেরত পাঠিয়েছি। পিওআই অফিস অগ্রিম বিল দাবী করছে। কিন্তু ত্রাণ অধিদপ্তরের বরাদ্দপত্র অনুযায়ী অগ্রিম বিল দেওয়ার সুযোগ নেই। তাছাড়া প্রকল্প কমিটির সভাপতির নামে বিল উপস্থাপন হওয়ার কথা। এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটায় আমি ‘অবজেকশন’ দিয়েছি। পিআইও অফিস আমার কাছে প্রকল্প কমিটির তালিকাও উপস্থাপন করেনি‘।

এদিকে, উপজেলা পরিষদের ২০% বরাদ্দসহ অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যেসব প্রকল্প কমিটি নিয়েও রয়েছে অভিযোগ। প্রকল্পের কমিটি গঠনে করা হয়েছে আত্মীয়করণ। প্রকল্পগুলো গ্রহণের শুরু থেকেই চলছে উপজেলা পরিষদ বনাম প্রশসনের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দুরত্ব। যে যার মতো করে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কমিটি গঠন করেছে। মানা হয়নি নীতিমালা। শুরু থেকেই স্বচ্ছতার অভাব থাকায় এখন প্রকল্প বিলে অগ্রিম স্বাক্ষর না দিয়ে ‘অবজেকশান’ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা! ফলে চলতি অর্থবছরের মধ্যে প্রায় এককোটি টাকার ৮৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সন্দেহ।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, হিসাব রক্ষণ অফিসারের চাওয়া-পাওয়া একটু বেশী। গতবারের বরাদ্দেও বিল স্বাক্ষর করতে অগ্রিম টাকা দাবী করেছেন। পরে অডিট আসলে অডিটরদের দিয়ে আমাদের ৪০/৪২ লাখ টাকার একটি আপত্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, বিলে সমস্যা থাকলে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর ও কর্মকর্তা কিভাবে স্বাক্ষর করলেন। যে বিলে পরে অন্য অডিটর আপত্তি দিলেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হিসাব রক্ষণ অফিসার প্রকল্প বিলে স্বাক্ষর দিতে বিলম্ব করলে প্রকল্পের কাজ হবে না, সরকারি বরাদ্দ ফেরত যাবে।

পাঠকের মতামত: