মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ
লামা উপজেলার বিভিন্ন ঝিরি থেকে ৩ লাখ ঘনফুট পাথর উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের বরাবরে করা ৯টি আবেদন তদন্তনাধীন অবস্থায় রয়েছে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে। ৭ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার বেলা ১২টায় কানুনগোদের দেয়া তদন্ত রিপোর্টের অনুমোদন দিতে উপজেলা পরিষদ হলরুমে লামা উপজেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কমিটির সকল সদস্য, ইউপি চেয়ারম্যানগণ, সাংবাদিক, বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা নতুন পাথরের কোয়ারি অনুমোদনের বিরোধীতা করেন এবং এই পাথর কোয়ারির অনুমোদন দিলে পরিবেশ, জীববৈচিত্রের ও পাহাড়ের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হবে বলে মত প্রকাশ করেন।
সভায় লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিন ওয়ান নু এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, লামা উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াই নু অং চৌধুরী। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারাবান তহুরা, লামা থানা অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন, উপজেলা প্রকৌশলী মোবারক হোসেন, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা জুয়েল মজুমদার, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা কাজী শফিকুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা, জাকের হোসেন মজুমদার, জালাল আহমদ, লামা সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ হারুন, সাংবাদিক প্রিয়দর্শি বড়–য়া, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, নুরুল করিম আরমান সহ প্রমূখ।
গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা বলেন, লামা উপজেলার কোন ঝিরিতে ভাসমান পাথর নেই। এই ৩ লাখ ঘনফুট পাথরের অনুমোদন দেয়া মানে নতুন করে শত শত পাহাড় কাটার অনুমতি দেয়ার সামিল। পাহাড়ের সব কয়টি ঝিরিতে পানি প্রবাহ কমে গেছে। সামনে শুষ্ক মৌসুম। দূর্গম পাহাড়ের মানুষ পানির অভাবে মারা যাবে। তাছাড়া গজালিয়া, ফাঁসিয়াখালী, সরই, রুপসীপাড়া ও ফাইতং ইউনিয়নের ইতিমধ্যে অনুমোদন না পেতেই লক্ষাধিক ঘনফুট পাথর মজুদ রয়েছে পাচারের অপেক্ষায়। এই ৯টি পাথরের কোয়ারির আবেদন অনুমোদন করলে পরিবেশ, জীববৈচিত্রের ও পাহাড়ের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হবে। শুধু মাত্র রাজস্ব আয়ের কথা চিন্তা করে এই পাথরের অনুমোদন দিলে তার চেয়ে শত গুণ বেশী সরকারের অবকাঠামো ও পরিবেশের ক্ষতি হবে। তাছাড়া যারা আবেদন করেছে তারা অধিকাংশ অন্য জেলার লোক। তাদের ব্যবসায়ীক মানসিকতার কাছে লামা উপজেলা মানুষের ভাগ্য বিক্রি করা সঠিক হবেনা। তার এই বক্তব্যের সাথে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান, অন্যান্য ইউপি চেয়ারম্যানগণ, সাংবাদিক, বন বিভাগের প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা সহমত প্রকাশ করেন।
সভার সভাপতি লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিন ওয়ান নু বলেন, সকলের মতামত এবং পরামর্শ রেজুলেশন আকারে বান্দরবান জেলা প্রশাসক এর বরাবরে প্রেরণ করা হবে।
পাঠকের মতামত: