ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

আতঙ্কে শাহ পরীর দ্বীপবাসি: ১৪৬ কোটি টাকার নিমাণাধীন বেড়িবাঁধ উদ্ধোধনের আগেই ধসে পড়ল সিসি ব্লক !

জসিম মাহমুদ, টেকনাফ ::  টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ১৪৬কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন প্রতিরক্ষার বেড়িবাঁধের অন্তত ১০টি স্থানে জোয়ারের পানির আঘাতে স্থাপিত সিসি ব্লক উদ্ধোধনের আগেই ধসে পড়ল। এতে করে ওই এলাকার ৪০হাজার মানুষের মাঝে আবারো আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)দাবি, নকঁশার কিছুটা ত্রুটি থাকার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নকঁশা পরিবতনের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তবে বেড়িবাঁধ নিমাণাধীন রয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণকাজে তড়িৎগড়ির করায় জোয়ারের পানিতে সিসিব্লক গুলো সরিয়ে সাগরে তলিয়ে যাচ্ছে। বাঁধ নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যে অন্তত ১০টি মতো অধিক স্থানে সিসি ব্লকগুলো ধসে পড়ছে। দ্বীপের ১৪৬কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন দক্ষিণ পাশের মাঝের পাড়া, দক্ষিণ পাড়ার আধা কিলোমিটার বেড়িবাঁধের অংশে ডাম্পিং ব্লক কম দেওয়ায় জোয়ারের পানির আঘাতে সিসি ব্লক উদ্ধোধনের আগেই ধসে পড়ছে। এতে নির্মাণাধীন এ বেড়িবাঁধের টেকসই ও স্থায়ীত্ব নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

পাউবো সূত্র জানায়,২০১২ সালের ২২জুলাই শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়ার বেড়িবাঁধের ৬৮নং ফোল্ডারের একাংশ সাগরের জোয়ারের পানির তোড়ে বিলীন হয়ে যায়। সংস্কারের অভাবে প্রায় তিন কিলোমিটার পর্যন্ত বেড়িবাঁধ অরক্ষিত হয়ে শত শত পরিবার বসতঘর-দোকানপাট-মসজিদ- মাদ্রাসা ও রাস্তা-ঘাট সাগরে বিলীন হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ভোগান্তির পর অবশেষে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় ২ দশমিক ৬৪৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারে ১০৬ কোটির টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে এ প্রকল্পে আরও ৪০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়।

গত ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করেন নারায়ণগঞ্জের সেনাকান্দায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ডকইয়াড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়াকস লিমিটেড। এরপর তারা কাজটি সহযোগি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসটিএ গ্রুপ বরাদ্দ দেন। চলতি ২০২০অথবছরের জুন মাসে নিমাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও অদ্যবধি শেষ করা সম্ভব হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ রক্ষার বেড়িবাঁধটি বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষা। জোয়ারের সময় ঢেউয়ের পানি নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধের আছড়ে পড়ছে। পশ্চিমপাড়া, মাঝেরপাড়া থেকে দক্ষিণপাড়া পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধের সাগরের অংশে দুই রকমের সিসি ব্লক স্থাপিত করা হয়। মাঝের পাড়া থেকে দক্ষিণপাড়া পর্যন্ত আধা কিলোমিটারের গত কয়েকদিনের জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে অন্তত ১০টি স্থানে ব্লক ধসে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ঘর ভিটা হারানো ফজল আহমদ বলেন, গত বছর বেড়িবাধ নিমাণ কাজ শুরু হলে এলাকার শত শত লোকজন আশার আলো দেখতে পেলেও বাঁধে ধসের খবরে আবারো স্থানীয়রা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। কিছুদিন আগে দক্ষিণপাড়া এলাকার বাঁধের শেষাংশে ব্লক বসানোর কাজ গুলো খুবই তাড়াহুড়ার মাধ্যমে করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষক কলিম উল্লাহ চকরিয়া নিউজকে বলেন, এলাকার শত শত পরিবার বসতঘর-দোকানপাট-জমি-জমা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। গত কয়েক বছরের সাতশতাধিক পরিবার ভাঙনের কবলে পড়ে অন্যত্রে চলে গেছে।

সাবরাং ইউপির ৭নং ওয়াডের সদস্য নুরুল আমিন বলেন, সাত বছর অরক্ষিত থাকার পর বাঁধ নির্মাণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আনন্দের দেখা দিয়েছিল। কিন্তু বাঁধের কাজ শেষ না হতেই জোয়ারের পানিতে যেভাবে সিসি ব্লকগুলো ধসে যাচ্ছে তাতে পুরো দ্বীপের মানুষ হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। আবারো ভাঙন থেকে রক্ষা করতে হলে এখননি জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

স্থানীয় প্রবীণ শিক্ষক জাহেদ হোসেন চকরিয়া নিউজকে বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রথম দিকে কাজগুলো খুব টেকসই ভাবে করতে দেখেছি। কিন্তু দক্ষিণপাড়া অংশে যেখানে সাগরের আগ্রাসন বেশি সেখানে এসে কাজে তাড়াহুড়া করতে দেখা গেছে। প্রতিরক্ষা ব্লক স্থাপিত করার আগে বিছানো বালু পর্যন্ত রোলার গাড়ি দিয়ে ভালো ভাবে চেপে দেওয়া হয়নি। তাই জোয়ারের আঘাতে ব্লকগুলো ধসে পড়ছে।

সহযোগী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসটিএ গ্রুপের প্রতিনিধি উত্তম কুমার শাখারী বলেন, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এবং পাউবোর নিয়মিত তদারকিতে বাঁধ নির্মাণ কাজ করছে। সেখানে কোনো

পাঠকের মতামত: