অনলাইন ডেস্ক ::
ভাষা সৈনিকদের তালিকা আগামী ছয় মাসের মধ্যে চূড়ান্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ পূর্বক আদালতকে প্রতিবেদনও দিতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের নির্দেশের পর শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষায় ও ভাষা সৈনিকদের তালিকা করতে ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট ৮ দফা নির্দেশনা প্রদান করে হাইকোর্ট একটি রায় দেন বলে জানান, মনজিল মোরসেদ। তিনি গণমাধ্যমে আরও জানান সেই রায়ের কিছু কিছু অংশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় ২০১২ সালে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। সেই আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আদালত এই নির্দেশনা দেন। ৮ দফা নির্দেশনার মধ্যে শহীদ মিনারের পাশে একটি মিউজিয়াম নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেটি করা হয়নি। তাছাড়া ভাষা সৈনিকদের তালিকা চূড়ান্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হলেও তা আংশিক বাস্তবায়নের পর চূড়ান্তকরণে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা ও মর্যাদা রক্ষা এবং শহীদ মিনারের পাশে জাদুঘর স্থাপনের নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ জনস্বার্থে রিটটি করে। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট সরকারের প্রতি রুল জারি করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আট দফা নির্দেশনা দেন আদালত। নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে ভাষা সৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরি করে ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ওই তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ, আন্দোলনের স্মৃতিরক্ষার্থে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা এবং ওই এলাকায় ভবঘুরে লোকজনের আনাগোনা ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে পাহারার ব্যবস্থা করা। এছাড়া শহীদ মিনারের মূল বেদীতে সভা-সমাবেশ না করা, তবে বেদীর পাদদেশে সভা-সমাবেশ করা যাবে।
একই সঙ্গে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তিনজন নিরাপত্তা-কর্মী নিয়োগ, ভাষা-আন্দোলেনের শহীদদের মরণোত্তর পদক ও জীবিতদের জাতীয় পদক, জীবিত ভাষা সৈনিকেরা আর্থিক সহায়তা চাইলে তা দেওয়া, ভাষা সৈনিকদের সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো এবং সাধ্যমতো সরকারি সুযোগ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ ও এর মর্যাদা রক্ষা, শহীদ মিনারের পাশে একটি গ্রন্থাগারসহ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা এবং ওই জাদুঘরে ভাষা-আন্দোলের ইতিহাস-সমৃদ্ধ তথ্যপঞ্জিকা রাখার নির্দেশ দেন আদালত।
পাঠকের মতামত: