অনলাইন ডেস্ক :: ১০২ ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পণের পর লিস্ট অনুযায়ী অবশিষ্ট সংখ্যা ছিল ১০৫১। আত্মসমর্পণের পর আরও ৫শ’ ইয়াবা কারবারির নাম তালিকা করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ৫শ’ জনের নাম পাওয়া গেছে আত্মসমর্পণকারীদের দেয়া তথ্যের ভত্তিতে। ফলে আত্মসমর্পণের বাইরে রয়েছে এ সংখ্যা এখন ১৫৫১। এছাড়া ইয়াবা ব্যবসার নেপথ্যে অর্থ পাচারকারীর নাম পাওয়া গেছে ৩০জনের। উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারীর উপস্থিতিতে ১০২ জন ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পণ করে বর্তমানে জেলে রয়েছে। এদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩০ জন আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ইয়াবা কারবারে জড়িত ছিল এবং আত্মসমর্পণের বাইরে রয়েছে এমন অনেকে সরকারের কাছ থেকে দ্বিতীয় দফায় আত্মসমর্পণের একটি সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী গত বুধবার সংসদে আত্মসমর্পণকারী মাদক ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে মাদকাসক্ত যারা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, তাদের পরিবারকেও সহায়তা দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে, যারা মাদক ব্যবসায় জড়িত থেকে আত্মসমর্পণ করেছে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাচ্ছে তাদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাতে কিছু করার সুযোগ পায় সে পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা মাদকসহ ইয়াবা কারবারে জড়িত যারা ছিল তাদের ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে।
টেকনাফ-উখিয়ার স্থানীয় এবং প্রশাসনের সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা আত্মসমর্পণের বাইরে থাকা ইয়াবা কারবারিদের জন্য নতুন একটি সুযোগ এনে দিতে পারে-এ আশায় অনেকেই দ্বিতীয় দফায় একটি সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী সরকার গৃহীত মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুযায়ী অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত মাদক উদ্ধার ও দমনে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জন।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ইয়াবা কারবারিদের বিরুদ্ধে ‘অল আউট’ এ্যাকশনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষে। ইয়াবা কারবারিরা এখন নিশ্চিত আত্মসমর্পণ ছাড়া তাদের বিকল্প কোন পথ খোলা নেই। ফলে বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে এসব ইয়াবা কারবারে জড়িতরা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। যদিও এ পর্যন্ত এ সংখ্যা কত তা জানা যায়নি। এছাড়া সরকার পক্ষে নতুন করে আত্মসমর্পণের সুযোগ দেয়া হবে কি না সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আগামী সপ্তাহে এ সংক্রান্তে একটি সরকারের উচ্চপর্যায়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে দ্বিতীয় দফা আত্মসমর্পণের সুযোগ দেয়া হবে কিনা সে বিষয়ে আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আত্মসমর্পণে মিডিয়ায় জড়িতদের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ১০২ ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পণ করার প্রক্রিয়ায় অন্যরা সাহস করতে পারেনি পরবর্তী ঘটনা কি হতে পারে। ইয়াবা কারবারের মাধ্যমে এদের উপার্জিত সম্পদের বিষয়টি নিয়েও তারা চিন্তিত। এদের সম্পদের বিষয়টি নিয়ে এখন দুদক, এনবিআর ও সিআইডি কাজ করছে। এ অবস্থায় এখনও আত্মসমর্পণে আওতার বাইরে থাকাদের বড় একটি অংশ নিশ্চিত ধারণা পোষণ করছে সরকার পক্ষে প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন সেটাই বাস্তবে কার্যকর হবে। এ সুযোগ হাতছাড়া করা আর ঠিক হবে না। বাঁচার একটাই সুযোগ। আর সেটা হচ্ছে আত্মসমর্পণ। এ বিষয়ে এখন সংশ্লিষ্ট মহলগুলো অপেক্ষা করছে সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য। বিভিন্ন সূত্রে বলা হচ্ছে দ্বিতীয় দফায় আরেকবার সুযোগ দেয়া হলে ইয়াবা চোরাকারবার যেমন অনেকাংশে রোধ হবে, তেমনি মিয়ানমারে উৎপাদিত মরণনেশা মাদক এই ইয়াবার চালান আসাও ক্রমাগতভাবে হ্রাস পাবে।জনকণ্ঠ
পাঠকের মতামত: