ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

লামায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি ॥ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার আশংকা

Photo 05.07.17 (2)মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

লামায় পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতির দিকে। তবে টানা ৫২ ঘন্টা স্থায়ী বন্যার পানি কমতেই বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। নিচু এলাকা গুলোতে ঘরবাড়ি এখনও পানিতে ডুবে আছে। ঘুর্ণিঝড় মোরা‘র আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া লামার ক্ষত না শুকাতেই আবার আকস্মিক পর পর দু’বারের বন্যায় খুবই কষ্টে পড়েছে লামা সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।

এদিকে ফাঁসিয়াখালী খালে পানি বেড়ে যাওয়ায় লামা-চকরিয়া সড়কের কুমারী বেইলি ব্রিজটির একপাশের মাটি সরে গেছে। যে কোন সময় স্টিল ব্রিজটি ছিঁড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের বান্দরবান নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল ইসলাম খাঁন জানিয়েছেন।

টানা তিন দিনের বৃষ্টিপাতের কারণে উপজেলার প্রায় ৪০/৫০ স্থানে পাহাড় ধস হয়েছে। এতে করে পাহাড়ি বাঙ্গালী অনেকের ঘর বাড়ি ভেঙ্গে গেছে। এতে কেউ হতাহত হয়নি। পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ডুবে লামা পৌর এলাকাসহ লামা ৭টি ইউনিয়ন। এতে পানি বন্ধি হয়ে পড়ে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। ঘর-বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নেয় পার্শ¦বর্তী বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসায়। পাহাড় ধস ও বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় লামা-চকরিয়া ও আলীকদম-চকরিয়া সড়কের যান চলাচল দুই দিন স্বাভাবিক হয়েছে।

পাহাড়ি ঢলে লামা পৌর এলাকার নয়াপাড়া, বাসস্ট্যান্ড, টিএন্ডটি পাড়া, বাজারপাড়া, লামা বাজার, চেয়ারম্যান পাড়ার একাংশ, ছোট নুনারবিলপাড়া, বড় নুনারবিলপাড়া, লাইনঝিরি, ফকিরপাড়া, হাজ্বীপাড়া, কলিঙ্গাবিলপাড়া, উপজেলা পরিষদের আবাসিক কোয়ার্টার সমূহ, থানা এলাকা, রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দরদরী, বৈক্ষম ঝিরি, ইব্রাহীম লিডার পাড়া, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা বাজার, হারগাজা, বগাইছড়ি, বনপুর ও লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা, অংহ্লাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

লামা বাজারের ব্যবসায়ী বেলাল আহমদ, জাপান বড়–য়া, শংকর দাশ সহ অনেকে জানান, বন্যার পানিতে মালামাল ভিজে ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়েছে। ফিরে দাঁড়ানো খুব কঠিন হয়ে যাবে। অনেক ব্যবসায়ীর দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তর্পন দেওয়ান বলেন, আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে বন্যার সময় রান্না খিঁচুড়ি দেয়া হয়েছিল। জেলা ত্রাণ তহবিল থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় আপাতত ৫ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

লামা উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী জানান, বন্যার পাশাপাশি পাহাড় ধসের অনেক খবর পাওয়া গেছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে সাধ্যমত শুকনা খাবার চিড়া, মুড়ি, বিস্কুট ও খাবার পানি সরবরাহ করা হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।

পাঠকের মতামত: