কক্সবাজারের রামু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে পাহাড় কাটা। ইট তৈরির মৌসুম শুরু হওয়ায় পাহাড় কাটা বেড়ে গেছে। পাহাড় কেটে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়।
পরিবেশবাদী সংগঠন কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল দাশ গুপ্ত বলেন, রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে অন্তত ৩৫টি ইটভাটা আছে। এর মধ্যে অন্তত ২৭টি ভাটার লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কোনো ইটভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও নেই। বনাঞ্চলের কাঠ ও পাহাড় কাটার মাটি পুড়িয়ে এসব ইটভাটায় ইট তৈরি করা হচ্ছে। এতে এলাকার পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে।
গত শুক্রবার সকালে উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনা পাহাড়ে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকেরা সরকারি একটি পাহাড় কাটছেন। তারপর পাহাড় কাটা মাটি ছোট ট্রাকে বোঝাই করে বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
আমির হোসেন নামের এক শ্রমিক বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হাবিব উল্লাহ ও একটি ইটভাটার মালিক দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরিতে পাহাড় কাটার জন্য তাঁদের নিয়োগ করেছেন। ১৫ দিন ধরে পাহাড় কাটা চলছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কেউ বাধা দেয়নি।
উখিয়ারঘোনা এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, ইউপি সদস্য হাবিব উল্লাহ নিজের বাড়ির পাশের আরও একটি পাহাড় কেটেছেন।
স্থানীয় গৃহবধূ আয়েশা বেগম বলেন, খাস খতিয়ানভুক্ত এ পাহাড় দীর্ঘদিন ধরে তাঁর স্বামী মকতুল হোসেনের দখলে ছিল। কিন্তু পাহাড়টি শ্রমিক দিয়ে কেটে ফেলছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিব উল্লাহ। তিনি পাহাড় কাটা মাটি ইটভাটায় বিক্রি করছেন। পাহাড় কাটার কারণে এলাকার মানুষ ঝুঁকিতে পড়েছেন। বৃষ্টি হলে বাকি পাহাড় ধসে পড়তে পারে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য হাবিব উল্লাহ মুঠোফোনে বলেন, কয়েক দিন আগে তিনি রাস্তা সংস্কারের জন্য চার গাড়ি পাহাড় কাটা মাটি কিনেছিলেন। পাহাড় কাটার সঙ্গে তিনি মোটেও জড়িত নন। পাহাড় কাটছেন স্থানীয় একটি ইটভাটার মালিক।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কাউয়াখোপ ছাড়াও উপজেলার রাজাকুল, মরিচ্যা, খুনিয়াপালং এলাকায় আরও কয়েকটি পাহাড় কাটা হচ্ছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম বলেন, এলাকার কয়েকটি স্থানে বেশ কয়েকটি ইটভাটা চালু হয়েছে। ভাটাগুলোতে পাহাড় কাটা মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম বলেন, রামুর ইটভাটাগুলোতে বনাঞ্চলের কাঠ পুড়িয়ে এবং পাহাড়ি ও ফসলি জমির মাটি দিয়ে ইট তৈরি হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য শিগগিরই অভিযান চালাবে পরিবেশ অধিদপ্তর।
পাঠকের মতামত: