ঢাকা,রোববার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

গৃহবধূকে ৪ বছর ধর্ষণ, মেয়েকেও ধর্ষণচেষ্টা, ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে

অনলাইন ডেস্ক ::

ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মানিকগঞ্জের এক গৃহবধূকে চার বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু নিজে ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি, ওই নারীকে অন্য ছেলেদের সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করতো সে।

এখানেই শেষ নয়, শেষ পর্যন্ত তার কুদৃষ্টি পড়ে ওই গৃহবধূর স্কুলপড়ুয়া মেয়ের ওপর। তাকেও ধর্ষণের ফাঁদ পাতেন মো. আলী হোসেন (৪০)নামে ওই যুবক। এর পরই আসল ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।

অভিযুক্ত আলী হোসেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার হেলাচিয়া গ্রামের দরবেশ বেপারীর ছেলে। তিনি বিবাহিত। এলাকায় তার স’মিল, রাইস মিল ও ফার্নিচারের দোকান রযেছে।

ওই নারীর অভিযোগ, উজ্জ্বলের কথামতো না চললে তাকে অমানবিক শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়। তার কথায় সে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতেও বাধ্য হয়েছেন। শুধু তাই নয়, ওই ব্যক্তি তাকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ৮ লাখ টাকা ২৫ হাজার টাকা ঋণ উঠিয়ে নিয়েছে। এখন তার কুনজর পড়েছে তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ের দিকে। মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক না করতে দিলে এ বিষয়ে সে তার স্বামীকে জানাবে এবং তার গোপন ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছে।

প্রথমে মান সম্মানের ভয়ে কাউকে কিছু না বললেও, মেয়ের ইজ্জত বাঁচাতে গত মঙ্গলবার রাতে মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই গৃহবধূ।

অভিযোগে তিনি জানান, তার স্বামী পাঁচ বছর আগে মালয়েশিয়া গেছেন। এই সুযোগে প্রতিবেশী উজ্জ্বল প্রথমে তাকে উত্ত্যক্ত করতো। মোবাইলে কথাবার্তা হওয়ার এক পর্যায়ে তাদের মাঝে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একদিন ফাঁকা বাড়িতে ডেকে নিয়ে উজ্জ্বল তাকে জোর করে ধর্ষণ করে। সে সময় ভিডিওচিত্র ধারণ করে উজ্জ্বল।

তিনি বলেন, ‘এরপর থেকেই আমাকে হুমকি দিতে থাকেন উজ্জ্বল। বলে আমার কথা না শুনলে এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এই ভয় দেখিয়েই চার বছর ধরে ধর্ষণ করছে সে। শুধু তাই নয়, আলী হোসেনের দুই দোকান কর্মচারীসহ অন্য ছেলেদের সাথেও আমাকে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করা হতো।’

ওই গৃহবধূ আরও বলেন, আলী হোসেন বিভিন্ন সময় তার কাছ থেকে ৮ লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। টাকা চাইলেই সে ভিডিওর ভয় দেখায়। এক পর্যায়ে সে তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ের দিকে নজর দেয়। শর্ত দেয় মেয়েকে কাছে পেলেই কেবল ঋণের টাকা পরিশোধ করবে। বাধ্য হয়ে সোমবার দুপুরে তার কথামতো মেয়েকে সাথে নিয়ে ওই নারী মানিকগঞ্জ শহরের সেওতা এলাকায় মনিকা বেগমের বাসায় যান।

বাইরের লোকের আনাগোনা থাকায় বাসাটি আশপাশের সবার নজরে ছিল অনেকদিন ধরেই। তিনতলা ভবনের চিলে কোঠার একটি রুমে আলী হোসেন গৃহবধূর মেয়েকে ডেকে নিলে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। পরে তারা এগিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে ঘটনা জানাজানি হয়। এ সময় সে তার স্মার্টফোন রেখে সটকে পড়ে।

মানিকগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ রকিবুজ্জামান বলেন,এ ব্যাপারে মো. আলী হোসেন এবং তার এই অপকর্মে সহায়তা করার জন্য ওই বাড়ির মালিক মনিরা বেগম মনোয়ারার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে। উদ্ধার হওয়া মোবাইল পরীক্ষা করা হচ্ছে।

ওই হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. লুৎফর রহমান বলেন, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। cbp

পাঠকের মতামত: