মোহম্মদ রফিকুল ইসলাম, বান্দরবান প্রতিনিধি ঃ
১৩৯ বছরের ঐতিহ্যকে ধারণ করে বান্দরবানে ৪দিন ব্যাপী রাজপূন্যাহ উৎসব শুরু হয়েছে। সানাইয়ের সুর আর সৈন্য-সামন্ত পরিবেষ্টিত ঢাল তলোয়ার নিয়ে রাজভবন থেকে রাজকীয় বেশে নেমে এলেন বোমাং সার্কেলের ১৭তম বোমাং রাজা উ চ প্রু চৌধুরী। এসময় তার সৈন্য-সামন্ত, উজির-নাজির, সিপাহী শালাররা রাজাকে গার্ড দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল মঞ্চে নিয়ে যান। বুধবার সকাল থেকে জমকালো আয়োজনের মধ্য রাজপূণ্যাহ মেলা আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
রাজকর আদায়ের উৎসব রাজ পূণ্যাহ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, চট্টগ্রাম সেনাবাহিনীর এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল যুবায়ের মোহাম্মদ ছালেহীন, চট্টগ্রাম পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি সাখাওয়াত হোসেন, বান্দরবান পাবত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, রাঙ্গামাটি পাবত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ ক্ষেত চাকমা, খাগড়াছড়ি পাবত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কুজেরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বনিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় সহ সরকারী-বেসরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।
বোমাং রাজা সিংহাসনে উপবিষ্ট হলে সারিবদ্ধভাবে বান্দরবান জেলার ৭টি উপজেলার ৯৫টি মৌজা এবং রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই ও রাজস্থলী দুটি উপজেলার ১৪টি মৌজাসহ মোট ১০৯টি মৌজার হেডম্যান, ৮ শতাধিকেরও বেশি কারবারী, রোয়াজারা রাজাকে কুর্ণিশ করে জুমের বাৎসরিক খাজনা ও উপঢৌকন রাজার হাতে তুলে দেন।
১৮৭৫ সাল থেকে বংশ পরস্পরায় ধারাবাহিক ভাবে প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী রাজপূণ্যাহ উৎসব হয়ে আসছে। রাজপূণ্যাহ মেলায় বসেছে নাগর দোলা, সার্কাস, বিচিত্রা অনুষ্ঠান, পুতুল নাচ, মৃত্যুকূপসহ ব্যাতিক্রমি নানা আয়োজন। এছাড়াও হরেক রকম জিনিসপত্রের দোকান এবং সারারাত ব্যাপী চলবে যাত্রা অনুষ্ঠান। রাজপূণ্যাহ পরিণত উৎসব পাহাড়ী-বাঙ্গালীর মিলন মেলায় পরিনত হবে। শুধুমাত্র বান্দরবান, রাঙামাটি নয় রাজপূণ্যাহ মেলা দেখতে ভীড় জমাচ্ছেন দেশী-বিদেশী হাজারো পর্যটকও।
উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজাম্মান খাঁন কামাল এমপি এর আগে পাবত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে বালাঘাটা পুলিশ লাইন স্কুলের উদ্ধোধন করেন।
পাঠকের মতামত: