ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

বদরখালীতে গোঁয়ারফাঁড়ি খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::  কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন বদরখালীতে গোঁয়ারফাঁড়ি শাখাখালের বিভিন্ন পয়েন্ট দখলে নিয়ে সেখানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। শতবছরের পুরানো গোঁয়ারফাঁড়ি খালটি জবরদখলের কারণে সংকোচিত হয়ে পড়ায় বর্ষাকালে ভারী বৃষ্টিপাত এবং বন্যার পানি নিস্কাশনে বড়ধরণের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসি। অভিযোগ উঠেছে, খালটি রক্ষাবেক্ষনে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান বদরখালী সমিতি এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষথেকে কার্যকর কোন ধরণের প্রদক্ষেপ গ্রহন না করায় সুযোগ পেয়ে দখলবাজ চক্রের লোকজন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ খালের একটি অংশ দখলে নিয়ে সেখানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন নুরুল কাদের নামের একব্যক্তি। অভিযুক্ত নুরুল কাদের বদরখালী ২নং ওয়ার্ডের নয়াপাড়ার বাসিন্দা মৃত কালুমিয়ার ছেলে বলে নিশ্চিত করেছেন বদরখালী সমিতির সম্পাদক নুরুল আমিন জনি।

এলাকাবাসি জানায়, এশিয়ার বৃহত্তম সমবায় প্রতিষ্ঠান বদরখালী সমবায় উপনিবেশ সমিতির আওতাধীন মাতামুহুরীর শাখা গোঁয়াফাঁড়ির মিঠাপানির খালটির অবস্থান চকরিয়া-বদরখালী-মহেশখালী সড়কের (আহমদ কবিরের ঘাট) কালভার্ট পয়েন্ট এলাকায়। এলাকাবাসির দাবি, খালটি রক্ষনা-বেক্ষনে বদরখালী সমিতি ও বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব থাকলেও তাঁরা এব্যাপারে কার্যকর কোনধরণের ব্যবস্থা নেয়নি। এই সুযোগে গত ৪-৫বছরে গোঁয়ারফাঁড়ি খালের বিস্তির্ণ এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে ব্যক্তি মালিকানাধীন অসংখ্য আধাপাকা বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে গোঁয়ারফাঁড়ি খালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের একটি দল। এতে নেতৃত্ব দেন তৎসময়ের সহকারী পরিচালক সরদার শরীফুল ইসলাম। তিনি পরিদর্শন পরবর্তী ২০১৩ সালের ৬ জানুয়ারি খালদখলে অভিযুক্ত ৮জনের নাম উল্লেখ করে বিষয়টি নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকার মহাপরিচালক দপ্তরে। প্রতিবেদনের অনুলিপি একইসময়ে প্রেরণ করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক, ঢাকা সদরের এনফোর্সমেন্ট পরিচালক, জেলা প্রশাসক কক্সবাজার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার চকরিয়া, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চকরিয়াসহ স্থানীয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ।

এর আলোকে ওই খালে কোনধরনের স্থাপনা নির্মাণ না করতে নিষেধ করেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এরপর থেকে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ থাকলে ফের সম্প্রতিসময়ে খালে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দোকানঘর নির্মাণ করছে নুরুল কাদের গং। বর্তমানে ওই দোকান নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।

জানতে চাইলে বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সম্পাদক নুরুল আমিন জনি বলেন, মাতামুহুরীর শাখা নদী গোঁয়ারফাঁড়ী খালটি বদরখালী সমিতির আওতাভূক্ত। আমরা ইতোমধ্যে খালটি দখলের বিষয়ে অবগত হয়েছি। এরই প্রেক্ষিতে সমিতির পক্ষথেকে লোক পাঠিয়ে খালে কোনধরণের স্থাপনা নির্মাণ না করতে নির্দেশ দিয়েছি। তারপরও কাজ করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেবে সমিতি কর্তৃপক্ষ। ##

 

 

পাঠকের মতামত: