মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::::
কক্সবাজারের পেকুয়া ুউপজেলায় র্যাবের অভিযানে উপকূলের শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. হাসেম ওরফে ডাকাত হাসিম্যাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত হাসেম মগনামা আফজলিয়া পাড়া গ্রামের ওসমান গণির পুত্র। র্যাব-৭ চট্টগ্রামের একদল সদস্য গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল ৪ নভেম্বর রাত ২টা ৫ মিনিটের দিকে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ফুলতলার দক্ষিন পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত জনৈক আমজাদ এর মুরগীর খামারে রক্ষিত মুরগির খাবারের পরিত্যক্ত বস্তার নিচ হতে ০১ টি এসবিবিএল, ০২ টি ওয়ান শুটারগান এবং ০৫ রাউন্ড গুলি (১২ বোর কার্তুজ) উদ্ধার করা হয়। এসময় ওই মুরগির খামার থেকে অস্ত্রসহ হাতেনাতে পেকুয়া ও কুতুবদিয়া উপকূলের শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. হাসেমকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭। এদিকে ডাকাত হাসিম্যাকে র্যাব অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে এ সংবাদ দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা পরস্পর মিষ্টি বিতরণ করে র্যাবকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
র্যাব-৭ জানায়, পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ফুলতলার দক্ষিণ-পূব্র্ পার্শ্বের স্থানীয় আবদুল মান্নানের পুত্র আমজাদের মুরগির খামারে আফজলিয়া পাড়া গ্রামের কতিপয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের সূত্র ধরে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র এএসপি মোঃ সোহেল মাহমুদ (পিপিএম)।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র এএসপি মোঃ সোহেল মাহমুদ (পিপিএম) এ প্রতিনিধিকে জানায়, র্যাব-৭ এর একটি আভিযানিক দল গতকাল রাতে মগনামার ফুলতলার ওই স্থানে পৌঁছালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে আসামী মোঃ হাসেমকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে ধৃত হাসেমের দেহ তলাশী করে ০১ টি ওয়ানশুটার গান এবং ০১ রাউন্ড গুলি (১২ বোর কার্তুজ) উদ্ধার করা হয়। র্যাবের এ কর্মকর্তা আরো জানান, ধৃত হাসেমকে আরো ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেখানো মতে আমজাদের মুরগীর খাবার মজুদ কক্ষের পশ্চিম কোণে মুরগীর খাবারের পরিত্যক্ত বস্তার নিচ হতে আরো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় র্যাব-৭ এর একটি দল অস্ত্র গ্রেফতার মো. হাসেমকে অস্ত্রসহ পেকুয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ্দ করেছে। আর র্যাব বাদী অস্ত্র আইনে ধৃত মো, হাসেমকে আসামী করে পেকুয়া থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৩১ মার্চ মগনামা ইউপি নির্বাচনের পর থেকে নির্বাচিত স্থানীয় এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি ও চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় পুরো মগনামা ইউনিয়নের অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ও মজুদ আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতিপূর্বেও পেকুয়া থানা পুলিশ মগনামা মিয়াজী পাড়া থেকে অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছিল। প্রায় সময় মগানামায় গভীর রাত হলে গুলির শব্দ শুনতে পায় মগানার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দরা। মগনামায় অবৈধ অস্ত্রের মওজদু ও ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়রা চরম আতংকে রয়েছে। ওই প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি ও ইয়াবা ব্যবসায়ীই মগনামায় এসব অবৈধ অস্ত্র এনে তার সাঙ্গপাঙ্গদের সংগঠিত করছে। গতকাল রাতে র্যাবের কাছে ধৃত হাসেম গত ৩১ মার্চ ইউপি নির্বাচনের সময় ওই নির্বাচিত প্রভাবশালী বিতর্কিত জনপ্রতিনিধির ভাড়াটে ক্যাডার হয়ে কাজ করেছিল। স্থানীয়রা দাবী করেছেন, মগনামায় অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ও মওজুদের ব্যাপারে স্থানীয় প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধিকে যদি রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাহলে আরো বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ভান্ডারের সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পেকুয়া থানা পুলিশ জানায়, র্যাবের হাতে অস্ত্রসহ ধৃত মোঃ হাসেমের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় ০৩ টি মামলা রয়েছে।
পাঠকের মতামত: