ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

করোনামুক্ত পৃথিবী প্রার্থনায়

পাহাড়ে সীমিত পরিসরে বৈসাবী উৎসব শুরু

পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :: পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাহাড়িদের প্রধান সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব বৈসুক, সাংগ্রাই ও বিজু। এক কথায় বৈসাবি উৎসব। পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে খাগড়াছড়িতে সামাজিক দূরত্ব মেনে ক্ষুদ্র পরিসরে পাহাড়িরা পালন করছে এই উৎসব।
গতকাল সোমবার ছিল চাকমা সমপ্রদায়ের ফুল বিজু। চৈত্র মাসের ২৯ তারিখ ভোরের সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ফুল ভাসানো শুরু হয়। গতকাল সকালে চাকমা তরুণ-তরুণীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে বন থেকে সংগ্রহ করা বিজু, মাধবীলতা, রঙ্গনসহ নানা রকমের ফুল নদীর জলে ভাসায়। পরে নদীর পাড়ে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করা হয়। করোনা পরিস্থিতির থেকে নিজেদের রক্ষার্থে, উৎসবমুখর পরিবেশে থাকতে জলদেবীর কাছে প্রার্থনা করে। ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে গ্রহণ করবে তারা। এই উৎসব তিন দিন ধরে চলবে। চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরার লোকজন উৎসবের প্রথম দিনে ফুল দিয়ে ঘর সাজায়।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আয়োজনে পাড়ায় পাড়ায় চলছে উৎসব। নদীতে ফুল ভাসাতে আসা সিনারী চাকমা, সুমি চাকমা ও পারু চাকমা বলেন, বিজু আমাদের প্রধান উৎসব। ফুল বিজুর মধ্য দিয়ে উৎসব শুরু হয়েছে। আগামী তিন দিন বৈসাবীর আনুষ্ঠানিকতা থাকবে। আমরা প্রার্থনা করি, করোনা মহামারি থেকে পৃথিবী মুক্ত হোক।
প্রতি বছর পাহাড়ে বর্ষবরণ উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে বিভিন্ন সংগঠন সংগঠন ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাসহ সপ্তাহব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করে। তবে করোনার কারণে এবারও কোনো কর্মসূচি নেই।
রাঙামাটি : রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, মহামারির মধ্যে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে চাকমাদের বিজু, মারমাদের সাংগ্রাই ও ত্রিপুরাদের বৈসুক উৎসব। গতকাল সকালে বড় কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসিয়ে উৎসবের সূচনা করা হয়।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য বিপুল ত্রিপুরা বলেন, গত বছর করোনার কারণে আমরা বৈসাবী উৎসব পালন করতে পারিনি। এবারও কোভিডের কারণে বৈসাবীর সব উৎসব বাতিল করেছি। এখন শুধু ঘরোয়াভাবে পালন করা হবে।
গতকাল সকালে রাঙামাটি রাজবাড়ি ঘাটে ও বিজয়নগর এলাকায় পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা করে। করোনার কারণে উৎসব না হলেও লোকজন নিজ নিজ গ্রামের নদীতে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে উৎসবের প্রথম দিন অতিবাহিত করে। সন্ধায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলনের আয়োজন করে বিজু, সাংগ্রাই, বিহু আয়োজক কমিটি।
উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টু মণি তালুকদার বলেন, সীমিত পরিসরে ফুল বিজু পালন করেছি। করোনা কারণে আমরা ঘরোয়াভাবে বিজু উৎসব পালন করব। মঙ্গলবার মূল বিজু পালিত হবে। বুধবার ঘরোয়াভাবে গোজ্যেপোজ্যে (নতুন বছর) দিন পালিত হবে।

 

পাঠকের মতামত: