ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

পরিবহন শ্রমিক ধর্মঘট, এ কেমন আচরণ?

ডেস্ক নিউজ ::    অযৌক্তিক দাবিতে সারাদেশে ধর্মঘট পালন করছে পরিবহন শ্রমিকরা। তাদের এই কর্মসূচিতে দুর্ভোগে নাকাল হয়ে পড়েছে রাজধানীবাসী। রবিবার সকাল থেকে রাজধানীর কোনো সড়কে গণপরিবহন চলাচল করছে না। বাধ্য হয়ে মানুষ বেশি ভাড়া দিয়ে সিএনজি অটোরিকশা বা রিকশায় গন্তব্যে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া কেউ কেউ উবার-পাঠাওয়ে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার নিয়ে ছুটতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু সেখানেও নিস্তার মিলছে না উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিকদের হাত থেকে।

রাজধানীতে সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকরা এসব যানবাহনের চালক, কোথাও যাত্রীদের মুখে পোড়া মবিল লাগিয়ে দিচ্ছে। কারও আবার মোটরসাইকেলের চাকার হাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে। রিকশা উল্টে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে। বিশেষ করে বাস টার্মিনাল এলাকাগুলোতে নিজেদের জনবল বেশি থাকায় বেপরোয়া আচরণ করছে শ্রমিকরা। হঠাৎ করে এমন বিব্রতকর অবস্থায় অফিসগামী অনেক মানুষকে বিপাকে পড়তে হয়েছে।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি ছাত্রী ও অ্যাম্বুলেন্সও। চালকের মুখে মবিল লাগানোর পাশাপাশি গাড়িতেও মবিল ঢেলে দিচ্ছে শ্রমিকরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। চালক এবং যাত্রীদের মুখে পোড়া মবিল লাগানো ছবি শেয়ার করে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

জুরাইনে কর্মস্থলে আসার সময় উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিকদের রোষানলে পড়েন অনলাইন নিউজপোর্টাল ঢাকাটাইমসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আসাদুজ্জামান। কয়েকজন শ্রমিক তার মোটরসাইকেল থামিয়ে লাইসেন্স দেখতে চায়। পরে তাকে নামিয়ে মোটরসাইলের চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয় এবং চাবি কেড়ে নেয় শ্রমিকরা।

পেশাগত কাজের কথা বলার পর শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আপনিও শ্রমিক আমরাও শ্রমিক। আমরা কাজ না করলে আপনারা কেন কাজ করবেন? এখন লেখেন নিউজ সমস্যা কী।’ পরে এক নেতাগোছের শ্রমিকের হস্তক্ষেপে উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিকদের হাত থেকে রক্ষা পান তিনি। এসময় ছবি তুলতে চাইলে তাকে হুমকি দেয় শ্রমিকরা।

একই সময় ওই এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস আটকে দিয়ে চালককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে শ্রমিকরা। বাসের গ্লাসও ভেঙে ফেলা হয়।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শ্রমিকদের এমন কর্মসূচির পেছনে সরকারের একজন মন্ত্রীর হাত আছে বলে অভিযোগ করছেন অনেকেই। যদিও সেই মন্ত্রীর কাছে দুর্ভোগের বিষয়ে জানতে চেয়েও কোনো উত্তর পাননি সাংবাদিকরা।

সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না ফেসবুকে তার ওয়ালে লিখেছেন, ‘আবারও সম্রাট শাজাহান। রাস্তায় লাশ পড়বে। এতে চালকের দোষ কী? এর বিরুদ্ধে আবার আইন কিসের? মানুষ চোখ-হাত-পা কি কোলে করে রাস্তায় নামে? সবার উপর শাজাহানরা সত্য, তাহার উপরে নাই।’

মবিল মাখা ছবি পোস্ট করে পুলিশ কর্মকর্তা সালেহ এমরান লিখেছেন, ‘আপনাদের জাত চেনাতে এটুকু না করলেও পারতেন। এদেশের মানুষ আর একবার জানলো কতটা অসভ্য আপনারা!’

শ্রমিকরা মবিল মুখে মেখে দিচ্ছেন এমন ছবি পোস্ট করে ফরহাদ হুসাইন নামের একজন লিখেছেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার সবার আছে, কিন্তু জনগণকে নাজেহাল করার অধিকার কারো নেই। অমানুষগুলো বুঝতেছে না, এই কালি মাখিয়ে তারা নিজের দেশটাকেই কলঙ্কিত করছে।’

পাঠকের মতামত: