প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
ডেস্ক রিপোর্ট – জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ইচ্ছুকের সংখ্যা সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ৪৫টি আসনের বিপরীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ফরম কিনেছেন এখন পর্যন্ত ১০৫৫ জন। এটা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন রেকর্ড। লক্ষণীয় যে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে তারকাদের ঢল নেমেছে। ২০০১ সালে যারা হাওয়া ভবনে লাইনে দাঁড়িয়ে তারেক জিয়াকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, তাঁরাও এবার আওয়ামী লীগের টিকেটে সংরক্ষিত আসনে এমপি হওয়ার জন্য দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সেলিব্রেটি নয় বরং ৫ যোগ্যতার ভিত্তিতে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের যোগ্য, ত্যাগী এবং পরীক্ষীতদেরই মহিলা এমপি হিসেবে মনোনীত করবেন। তারকা হলেই মনোনয়ন পাবে এমন কোন কথা নেই।’ জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সংরক্ষিত আসনের জন্য ৫ টি যোগ্যতা চুড়ান্ত করেছেন। এই ৫ মাপকাঠির ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবেন, একাদশ জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ মনোনীত ৪৫ জন এমপি। এই ৫ মাপকাঠি হলো:
১. যেসব জেলায় গতবার এবং তার আগেরবার কোন মহিলা এমপি মনোনীত হননি। সেই জেলাগুলো থেকে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের অগ্রাধিকার দয়া হবে। আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, এরকম জেলার সংখ্যা ২১ টি।
২. দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগ বা অঙ্গসংগঠন করে মূল দলে বা মহিলা অঙ্গসংগঠনে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
৩. ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় আহত, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর ক্ষতিগ্রস্থ এবং নির্যাতিত এবং ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনে সক্রিয়দের ব্যাপারে প্রাধান্য দেয়া হবে।
৪. দীর্ঘদিন রাজনীতি করছেন, কিন্তু গত দশবছরে কিছু পাননি এমন নিবেদিত প্রান নেতা-কর্মীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
৫. আওয়ামী লীগের সঙ্গে সক্রিয় জড়িত, পাশাপাশি স্বপেশায় আলোচিত, প্রশংসিত এমন চিকিৎসক, শিক্ষক, আইনজীবী, শিল্পীদের বিবেচনা করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এমপি হিসেবে যারা সংসদে এবং এলাকায় অবদান রাখতে পারবেন, তাদেরকেই আমরা বিবেচনা করবো।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ত্যাগী এবং পরীক্ষিতদের এবার মূল্যায়ন করা হবে সবার আগে।’ আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি হওয়ার যোগ্যতার মাপকাঠি যেমন চূড়ান্ত করা হয়েছে, তেমনি চূড়ান্ত করা হয়েছে ৫ অযোগ্যতা। যারা মনোনয়নে বিবেচিত হবে না। এই অযোগ্যতাগুলো হলো-
১. যারা কখনো আওয়ামী লীগ সরাসরি করেননি, হঠাৎ করেই মনোনয়ন চেয়েছেন।
২. যারা বিগত সময়ে এমপি ছিলেন কিন্তু সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন অথবা তাদের কর্মকান্ডে দল বিব্রত হয়েছে।
৩. যাদের নিয়ে বিতর্ক আছে বা বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ আছে।
৪. বিএনপি বা জামাত করতেন এখন আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন।
৫. ওয়ান ইলেভেনে সংস্কারপন্থী ছিলেন অথবা সংস্কারপন্থীদের ঘনিষ্ট ছিলেন।
তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, চূড়ান্তভাবে কারা মনোনয়ন পাবেন তা ঠিক করবেন দলের সভাপতি।
পাঠকের মতামত: