অনলাইন ডেস্ক :::
ঘুষ গ্রহণকালে ধরা খেয়েছেন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের (বিআইডাব্লিউটিএ) প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম ফখরুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে বিআইডাব্লিউটিএ ভবনে পাঁচ লাখ টাকা নেওয়ার সময় তাঁকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিশেষ দল। আগে থেকে খবর পেয়ে ফাঁদ পেতে রেখেছিল দুদক। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদকের পরিচালক নাসিম আনোয়ার।
তিনি বলেন, ‘জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণকালে ফখরুল ইসলামকে আমরা হাতেনাতে ধরে ফেলি। বেঙ্গল মেরিন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীর কাছ থেকে তিনি ওই টাকা নিচ্ছিলেন। ’
দুদক সূত্রে জানা যায়, বেঙ্গল মেরিন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস নামের প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২২টি জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য নৌপরিবহন অধিদপ্তরে আবেদন করেছে। অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল অধ্যাদেশ-১৯৭৬-এর ধারা ৫ (ক) অনুযায়ী নকশা জমা হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ অনুমোদন দিতে হয়।
বেঙ্গল মেরিন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের কর্মকর্তা এ এন এম বদরুল আলম জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠান ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে এমভি নওফেল লিহান, এমভি শতাব্দী আদনান, এমভি সূর্য্য বানু, এমভি দারুল মাকাম, এমভি পেয়ারা-৩, ৪, ৫, ৯, এমভি আদিবা তাইয়েবা, এমভি আকতার বানু, এমভি নাবিল খান-৬, এমভি ইউসুফ আরাফাত-৬, ৭, এমভি মারিয়া রহমান-১, এমভি ব্লুরিফ-১, ২, এমভি বোরহান সরদার, এমভি সাউথ মায়ামী, এমভি বিউটি অব নাবিলা, এমভি বিউটি অব নাজিলা, এমভি শেখ মো. লুত্ফুর রহমান ও এমভি রোহানী-১ নামের জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য নৌপরিবহন অধিদপ্তরে আবেদন করে। নকশা অনুমোদনের জন্য প্রতিটি জাহাজের ক্ষেত্রে আকারভেদে পাঁচ থেকে ১৬ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম ফখরুল ইসলাম। টাকা না পেলে তিনি কোনো জাহাজের নকশা অনুমোদন করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ‘এমভি নওফেল লিহান’ নামের একটি জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য গত বছরের ১৩ এপ্রিল আবেদন করে বেঙ্গল মেরিন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস। এর জন্য ফখরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি এ এন এম বদরুল আলমের কাছে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। বদরুলের অভিযোগ পেয়ে গতকাল দুপুরে বিআইডাব্লিউটিএ ভবনের চারদিকে অবস্থান নেন দুদকের ১১ সদস্য। রফা অনুযায়ী প্রধান প্রকৌশলী তাঁর নিজ দপ্তরে বদরুলের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা গ্রহণের সময় হাতেনাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পাঠকের মতামত: