নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :: জেলায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়েছে। শুধু জেলা শহর নয়, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক সড়কও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কক্সবাজার-টেকনাফ শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কে দিনের পর দিন বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি। প্রচুর খানাখন্দকের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। টেকনাফের সাবরাং এর শাহপরীর দ্বীপ সড়ক বহু আগেই বিলীন হয়ে গেছে। এ সড়কে এখন হাটাও দায়। অনন্যেপায় হাজার হাজার এলাকাবাসী এখন শুষ্ক মৌসুমেও এসড়কে নৌকা দিয়েই চলাচল করে।
জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক বিশেষ করে লালদীঘির পাড় থেকে লিংক রোড পর্যন্ত অংশে দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশা বিরাজ করছে। পৌর শহরের ভেতরের উপ-সড়কগুলোর দৃশ্য আরও ভয়াবহ। সেতু ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরে ভঙ্গুর সড়কের কিছু জায়গায় সংস্কার করা হয়েছে।
নারী উদ্যোক্তা ফাতেমা ইসলাম লাকী বলেন, ‘পর্যটন শহরের রাস্তাঘাটের এমন বেহাল দশা অতীতে আর কোন সময় চোখে পড়েনি। অথচ যোগাযোগ মন্ত্রী আসছেন তাই এখন রাতারাতি সড়কের ওপর প্রলেপ লাগানো হচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক।’
জানা গেছে,দীর্ঘদিন ধরে শহরের প্রধান সড়কটির হলিডের মোড় বাস টার্মিনাল হয়ে আবার হলিডের মোড় পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল সড়ক জনপথ বিভাগের। ২০১৮ সালে যা কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে কউক এই সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছে। চলতি বছরেই কয়েকবারের মতো সংস্কার কাজ পরিচালনা করেছে কউক। এরমধ্যে বাস টার্মিনাল থেকে হলিডে মোড় পর্যন্ত বাস টার্মিনালস্থ ফিলিং স্টেশনের সামনের অংশ, বিজিবি ক্যাম্প, সাবমেরিন ক্যাবল স্টেশন, সিটি কলেজ গেইট, আলীর জাঁহাল, টিএমসি, রুমালিয়ারছড়া হাশেমিয়া মাদ্রাসা, টেকনিক্যাল স্কুল (ভোকেশনাল), তারাবনিয়ার ছড়া, কালুর দোকান, টেকপাড়া বায়তুল ইজ্জত জামে মসজিদ, বার্মিজ মার্কেট, ফায়ার সার্ভিস, লালদিঘির পূর্ব পাড় থেকে থানা রোড, ঝাউতলা সংলগ্ন প্রধান সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে পর্যটকসহ হাজার হাজার জণসাধারণকে চলাচলে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শহরের উপসড়কগুলোও প্রচুর খানাখন্দকে বেহাল।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ, কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে আমরা শহরের প্রধান সড়ক সংস্কারের দায়িত্ব কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) কাছে হস্তান্তর করেছি। বর্তমানে কউক সড়ক সংস্কারের কাজ পরিচালনা করে।’
শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, গত শুক্রবারও কউকের উদ্যোগে সড়কটির সংস্কার কাজ চলছে। শুধুমাত্র সড়কের বড় বড় গর্তগুলোই ইট আর পাহাড়ি মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। এ জন্য সড়কের বিভিন্ন স্থানে রাখা হয়েছে ইট। এসব ইট ব্যবহার করেই করা হচ্ছে সড়ক সংস্কার। পাশাপাশি রোলার কোস্টারও ব্যবহার করা হচ্ছে। কয়েকদিনে বার্মিজ মার্কেট, কালুর দোকান, রুমালিয়ারছড়া এবং আলী জাঁহাল ও সাবমেরিন কেবল স্টেশন সংলগ্ন সড়কের অংশ সংস্কার করা হয়।
কউক সদস্য (প্রকৌশল) লে. কর্নেল আনোয়ার উল ইসলাম চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘আমাদের বাজেট কম, তাই কোনোমতে সড়ক সচল রাখার চেষ্টা করছি। বিটুমিন দিয়ে করতে পারলে ভালো হতো। তবে সড়ক সংস্কারে এক নম্বর ইট ব্যবহার করা হচ্ছে।’
এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে কক্সবাজার-টেকনাফ শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কের পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। গত দু’বছরে এই সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় অসংখ্য গর্ত। ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে হাজার হাজার যানবাহন, প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। যাত্রী ও চালকদের অভিযোগ, রোহিঙ্গার কারনে এই সড়কে যানবাহনের চাপ অত্যাধিক বাড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
এলাকাবাসী জানান, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা কুতুপালং, থ্যাংখালী, বালুখালী, পালংখালী, উচিংপ্রাং, লেদা ও নয়াপাড়াতে আশ্রয় নেয়ার পর কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কগুলোতে দৈণ্য দশা শুরু হয়। রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক, দেশীয় এনজিও ও দাতা সংস্থার হাজার হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক যাতায়াতের কারণে সড়ক চলাচল কার্যত অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই মহাসড়কে যান চলাচল বেড়ে যাওয়ায় উখিয়া-টেকনাফে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। উখিয়ার কোটবাজার ও থ্যাংখালী এলাকায় প্রায়ই পণ্যবাহী ট্রাক খানাখন্দে পড়ে উল্টে যায়। এতে দু’পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে এবং যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হন।
উখিয়া কোট বাজারের সিএনজি চালক রুহুল আমিন চকরিয়া নিউজকে জানান, এই সড়কে গত দশ বছর ধরে গাড়ি চালান তিনি। সড়কের বেহাল অবস্থা এবারের মতো আর কখনো হয়নি। রোহিঙ্গারা আসার পর থেকেই আমাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। কত সুন্দর সড়ক এখন খানা খন্দে পরিণত হয়েছে।
উখিয়ার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহামুদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আসার পর আমরা শুধু অর্থনৈতিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হইনি বিগত দিনে আমাদের এলাকায় অবকাঠামোগত যে উন্নয়ন হয়েছিল সেগুলোও ধ্বংস হয়েছে। অবাধে ত্রাণের ও এনজিওদের গাড়ি চলাচলের কারণে রাস্তাঘাট একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে।’
জেলাব্যাপী দীর্ঘদিন যাবত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় জেলাবাসী বর্তমানে কক্সবাজারে সফররত সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে রাস্তার দুরাবস্থা সরজমিন পরিদর্শন করে এব্যাপারে কার্যকর ও জরুরী পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
প্রকাশ:
২০১৯-০৯-২২ ০৯:২১:৫৮
আপডেট:২০১৯-০৯-২২ ০৯:২১:৫৮
- পেকুয়ায় নিখোঁজ স্কুল শিক্ষকের সন্ধান মেলেনি
- চকরিয়ায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করতে হবে -জামায়াত
- পেকুয়ায় ট্রাক চাপায় মুদি দোকানী নিহত
- খুটাখালীতে সকড় সংস্কারের পূর্বেই ইটগুলো গায়েব নীরব
- তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধ সম্ভব” –ইউএনও চকরিয়া
- চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা হত্যা: মূল হোতা নাছির উদ্দিন ও সহযোগী ডাকাত এনাম গ্রেফতার
- এডভোকেট মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান এর ২৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র
- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের সাথে চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ শিক্ষকদের মতবিনিময়
- নিপীড়িত গরীব দুঃখী মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য জামায়াত কর্মীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে -আবদুল্লাহ আল ফারুক
- ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ওয়াসিমের পরিবারের সাথে সাক্ষাতে সালাউদ্দিন আহমদ
- চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম সরোয়ার খুনের ঘটনায় দুইটি মামলা
- ডুলহাজারায় সেনা কর্মকর্তা তানজিম হত্যার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ
- লেফটেন্যান্ট তানজিম হত্যার ৬ সন্ত্রাসীকে আটক করেন সেনাবাহিনী
- চকরিয়ায় ডাকাতের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হলেন তরুণ সেনা কর্মকর্তা তানজিন
- চকরিয়ার যুবলীগ নেতা কছিরের রয়েছে সম্পদের পাহাড়
- ফাইতং ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবীতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
- সেনা কর্মকর্তা তানজিম হত্যা ও ডাকাতি,খুন,গুমের প্রতিবাদে খুটাখালী বহলতলীবাসী
- চকরিয়ায় ৪৬টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি
- চকরিয়ায় আ,লীগের প্রভাবে দখল হওয়া বাজার ফিরে পেতে চায় ব্যবসায়ীরা
- চকরিয়ায় ডাকাতের গুলিতে লেফটেন্যান্ট তানজিম খুন, মায়ের আহাজারী, শোকের মাতম, জানাযা সম্পন্ন
- ডুলাহাজারার সংরক্ষিত বনে ডাকাতের আস্তানা, সন্ধ্যার পর শুরু হয় লুটতরাজ
- ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ওয়াসিমের পরিবারের সাথে সাক্ষাতে সালাউদ্দিন আহমদ
পাঠকের মতামত: