ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

জেলার অবৈধ ৫৪ ইটভাটা বন্ধের সুপারিশ

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: জেলার অবৈধ ৫৪ ইটভাটা বন্ধের জন্য তালিকা প্রস্তুত করে ঢাকায় তাদের অধিদপ্তরে প্রেরণ করেছে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তর। গত ৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম কার্যালয় অবৈধ ইটভাটার তালিকা গ্রহন করেছে। বায়ু দুষন রোধ, নিষিদ্ধ এলাকায় ভাটা স্থাপন, পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকাসহ নানা অনিয়মের কারনে উক্ত ৫৪টি ভাটা বন্ধের জন্য সুপারিশ করে তালিকা প্রেরন করা হয়েছে বলে পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রেরিত চিঠি থেকে নিশ্চিত হয়েছে দৈনিক কক্সবাজার।

কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান কর্তৃক ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে গত ২০ নভেম্বর উচ্ছেদ/বন্ধের জন্য প্রেরিত অবৈধ ইটভাটার নাম ও মালিকেরা হলেন-সদরের পূর্ব খরুলিয়ার শফিউল হক চৌধুরীর মের্সাস এমএস ব্রিক ফিল্ড ও এমএসব্রিকস ম্যানুফেকচারিং, পিএমখালীর বাংলাবাজারের বজল আহমেদ কোম্পানীর বজল এন্ড ব্রাদার্স ব্রিক, চৌফলদন্ডীর হুমায়ুন সিকাদারের মের্সাস আরকেসি ব্রিক, ইসলাবাত ওয়াহেদের পাড়ায়্ দিদারুল ইসলামের মের্সাস দিবা ব্রিকস,খুদইবাাড়ির জসিম উদ্দিনের কক্স ইন এসোসিয়েট ব্রিকস, ভোমরিয়াঘোনার রশিদ আহমদের (বাবুল কোম্পানীর)আর এমএম ব্রিকস, ঈদগড় ধলিরছড়ার ইয়াসিন পারভেজ চৌধুরীর মের্সাস এইচবিএম ব্রিকস, চ্যেফলদন্ডীর রেজাউল করিম সিকদারের আরকেসি ব্রিকস,খরুলিয়ার আফরোজা সুলতানার মের্সাস এমএসআর ব্রিকস।

রামু মেরংলোয়ার আলহাজ্ব ছাবের আহমদের আল হেরাম ব্রিকস, ফতেখারকুলের মোঃ জাহাঙ্গির হোসেনের মেসার্স জেডএসটি ব্রিকস, খুনিয়াপালং এর মোঃ শাহ আলমের মের্সাস এমআরসি ব্রিকস,মধ্যম খুনিয়াপালং মোস্তফা আলমের মের্সাস এসএসবি-২ ব্রিকস,ফতেখারকুল ফরিদুল আলম/জাফর আলমের মেসার্স জেডএন্ডএফ ব্রিকস, মোস্তাক আহমদের মের্সাস এসএসবি ব্রিকস, শাহ আলম চৌধুরীর মেসার্স সাবরিনা ব্রিকস, ধোয়া পালং কালু চেয়ারম্যানের মেসার্স ভাই ভাই ব্রিকস, উখিয়ারঘোনার মেসার্স সাসকো অটো ব্রিবস, খুরলিয়া জাসমাল হোসেনের মেসার্স বিবিএম ব্রিকস, ধলিরছড়ার ওয়াহিদুজ্জামানের মেসার্স জামান এন্ড ব্রাদার্স, ধোয়াপালং এর হাবিবুল ইসলামের মের্সাস এইচএএম ব্রিকস, দক্ষিন খুনিয়াপালং এর মোঃ শাকেরের মের্সাস রায়ানব্রিকস, উখিয়ারঘোনার জাহাঙ্গিার আলমের মেসার্স এরআমএল ব্রিকস, মেরংলোয়ার কামাল মোস্তফার মেসার্স এমকে ব্রিকস, গয়ালমারার শামসুল আলমের এমসার্স এসবিএম ব্রিকস।
চকরিয়ার উত্তর হারবাং সামসুল আলমের এলবিএম ব্রিকস, আরিফ উদ্দিনের মের্সাস আশিক ব্রিকস,ফাসিয়াখালীর গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর মেসার্স জিএলবি ব্রিকস,গয়ালমারার শামসুল আলম কোম্পানীর মের্সাস এবিএম ব্রিকস, উত্তরমানিকপুরের শাহাব উদ্দিনের মদিনা ব্রিকস, মানিকপুরের মাহমুদুল হকের আল মদিনা ব্রিকস-২ এবং এবিএম ব্রিকস, উত্তর মানিকপুরের শাহ আলমের ডায়মন্ড ব্রিকস, রুমখাপালং মোঃ শাহ আলমের মিডিয়া ব্রিকস ফিল্ড, পাগলির বিল হলদিয়া পালং সৈয়দ উল্লাহর জিএমএস ব্রিকস, থাইং খালীর কেআরবি ব্রিকস,হ্নীলার আলী আহমদের মের্সাস জিয়াউর রহমান ব্রিকস, দৈংগাকাটার মোঃ আবুল হাশেমের মের্সাস এ হাশেম ব্রিকস, উত্তর হ্নীলার মোঃ আবদুল্লাহর মেসার্স এ আরবি ব্রিকস ও মের্সাস সালমান ট্রেডিং ব্রিকস,মীর কাশেমের মেসার্স এমকেবি ব্রিকস, হোয়াইক্ষং মোঃ হাশেমের মেসার্স এএইচবি ব্রিকস, রুঙ্গীখালীর মোঃ শাহজাহান মিয়া চেয়ারম্যানের ফোর স্টার ব্রিকস, লতিয়া খোলার মেসার্স এমআরবি ব্রিকস, হোয়াইক্ষং কবির আহমেদ চৌধুরীর মেসার্স পিবিসি ব্রিকস, টৈটং হাজিরবাজার এলাকার আলহাজ্ব আহমেদ নবীর মেসার্স এবিএম ব্রিকস, কুতুবদিয়া কৈয়ারবিলের মোঃ শামসুল আলমের মেসার্স এসএ ব্রিক ফিল্ড।

জানা যায়, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় ১৮১ টি ইটভাটার মধ্যে কক্সবাজারের ৮ উপজেলায় ১৩০টির মত ইটভাটা আছে। এদের মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশের রয়েছে পরিবেশের ছাড়পত্র। ৬০ শতাংশের কোন পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। উক্ত ইটভাটার মালিকরা উচ্চ আদালতে মামলা করে চালাচ্ছে এসব ইটভাটা।
এর মধ্যে কক্সবাজার সদরে ২৭টির মধ্যে ১৭টি, রামুর ৪০টির মধ্যে ২৫টি, পেকুয়ার ৭টির মধ্যে ৪টি, চকরিয়ার ৫২টির মধ্যে ৩৬টি, উখিয়া- টেকনাফের অধিকাংশ ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অনুমতি নেই। এছাড়া কুতুবদিয়ার ১টি, মহেশখালীর ১টি ইটভাটা চলছে দায়সারাভাবে।

কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন-কক্সবাজার যেহেতু জলবায়ু ঝুকিপূর্ণ এলাকা এখানে পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষা জরুরি। কিন্তু অবৈধ ইটভাটা গিলে খাচ্ছে সবুজ পাহাড়ের গাছপালা, ফসলের মাঠের মাটি।ফলে বাড়াচ্ছে চরম পরিবেশ ঝুঁকি। তিনি কক্সবাজার রক্ষায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক দীপক শর্মা দীপু বলেন- সবুজ পাহাড়ের নিকটে কোন ইটভাটা স্থাপন করা যাবেনা এমন আইন থাকলেও তা মানা হয়না। অনেক ভাটা স্কুলের পাশে, পাহাড়ের নিকটে, লোকালয়ে। ফলে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। শিশুদের ক্ষতি হচ্ছে বেশি। পরিবেশ অধিদপ্তরের লোক দেখানো অভিযান নয় চায় সরাসরি এসব অবৈধ ইটভাটার উচ্ছেদ। তিনি মাসোহারার মাধ্যমে জায়েজ করা অধৈধ ইটভাটা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানান।
অবৈধ ইটভাটা বন্ধের পদক্ষেপ বিষয়ে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন- আমরা ৫৪ টি অবৈধ ইটভাটার তালিকা ঢাকায় এবং জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর প্রেরণ করেছি। ঢাকা থেকে ইতোমধ্যে ম্যাজিষ্ট্রেটগণ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছেন। আশা করি, শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে। তিনি বলেন, ভাটার লাইসেন্স অথরিটি জেলা প্রশাসক মহোদয় তিনি চাইলে লাইসেন্স বাতিল করে ব্যবস্থা নিতে পারেন। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই আমরা এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

পাঠকের মতামত: