একটি সেতুর অভাবে ৩৫গ্রামের অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদী পৌরসভার তরছঘাট-পূর্ববড়ভেওলা ইউনিয়নের সংযোগস্থলেই নির্মাণ করা হয় কাঠের তক্তার ব্রিজটি। প্রতিদিন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেড়’শ মিটার দৈর্ঘের তক্তার ব্রিজ দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এতে নদীর উপর স্থায়ী সেতু না থাকায় শিক্ষার্থী, কৃষক ও ব্যবসায়ীদের নানা অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত সময়ে তরছঘাট এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান স্থানীয় এলাকাবাসি।
তরছঘাটা এলাকার নাছির উদ্দিন মাহমুদ জানান, বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়ার আশঙ্কায় কাঠের সেতুটি খুলে ফেলা হয়। তখন নৌকা দিয়ে মানুষকে পারাপার করতে হয়। তাছাড়া নদীর পশ্চিম পাড়ে শামসু মিয়ার বাজার, বেতুয়াবাজার, সাহারবিল মাদ্রাসা ও জিএম মিশনারী স্কুল রয়েছে। পূর্বপাশে ঘনশ্যাম বাজার, কয়েকটি মাদ্রাসা ও স্কুল রয়েছে। এই বাজারে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসে কেনা-বেচা করতে। তখন ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। এসময় ছাত্রছাত্রী ও জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের সিকদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা নাছির উদ্দিন নোবেল জানান, নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাশে ৪০ গ্রামে সবজি চাষ সহ নানা রকম ক্ষেত হয়ে থাকে। যাতায়াত অসুবিধার জন্য সেসব বাজারে নেয়া সম্ভব হয় না। এতে তারা ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনেক সময় সবজি পচে যায়। প্রতিদিন খালের উপর নির্মিত তক্তার ব্রিজ দিয়ে শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। তক্তার ব্রিজটি ৩৫ গ্রামের মানুষের একমাত্র চলাচলের রাস্তা। খালটিতে সেতু না থাকায় গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা নেই। এলাকার মানুষের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত, হাটবাজারে যেতে বিকল্প কোন পথ নেই। বর্ষা মৌসুমে খালে কানায় কানায় ভরে থাকায় প্রতিবছর ঘটছে নানা দূর্ঘটনা। অনেকের পা ফসকে গিয়ে কারো হাত ভেঙ্গে যাচ্ছে, কারো পা ভেঙ্গে পঙ্গত্ব বরণ করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন জানানো হয়েছে। এ মাতামুহুরী নদীতে সেতু নির্মিত হলে পৌরসভা, পূর্ববড়ভেওলাসহ ৪টি ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের ভাগ্য বদলে যাবে। পাশাপাশি কৃষকরাও পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাবে। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে তাদের প্রাণের এই দাবিটি তুলে ধরলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। নির্বাচন আসলে জনপ্রতিনিধিরা ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও ভোটের পর আর তা করা হয় না। সবদিক বিবেচনা করে তরছঘাট এলাকায় ব্রিজ নির্মাণ করলে অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষের ভাগ্য বদলে যাবে। ##
পাঠকের মতামত: