ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

উপকূলে শতভাগ বিদ্যুতায়নে প্রধান বাঁধা পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদার

সৈয়দুল কাদের, কক্সবাজার ::
উপকূলীয় এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়নে প্রধান বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদার। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ যথা সময়ে ঠিকাদারের বিল পরিশোধ করলেও গ্রাহকের কাছ থেকেও আদায় করছেন টাকা। চাহিদামত টাকা না দিলে বিদ্যুতের লাইন টানা হয় কয়েক বছর।
ঠিকাদারের অনিয়ম ও গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা জন্য কাজের গাফিলাতি করার কারণে ২০১৯ সালের মধ্যে উপকূলীয় এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। একজন ঠিকাদার সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধান বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে।
মহেশখালীর শাপলাপুরের ষাইটমারা গ্রামের মমতাজ আহমদ জানিয়েছেন, প্রতিটি লাইনে পল্লী বিদ্যুতের টিকাদারকে গ্রাহক থেকে অন্তত ৭০/৮০ হাজার টাকা করে দিতে হয়। টাকা না দিলে লাইন টানতে কয়েক বছর বিলম্ব করেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে গ্রাহকরা টাকা দিতে বাধ্য হয়। কোন গ্রাহক অভিযোগ করলে তাকে বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়।
চকরিয়ার দরবেশ কাটার খাইরুল বশর জানিয়েছেন, বিদ্যুতের খুটি দেওয়ার কথা ছিল অনেক আগে, কিন্তু এখনো দেওয়া হয়নি। ঠিকাদার ৭০ হাজার টাকা দাবী করেছে তা না দেওয়ায় তিনি আর বিদ্যুতের খুটি দেন নি। এই উপকূলীয় এলাকার মানুষ ঠিকাদারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি বিদ্যুৎ সরবরাহ শতভাগ হওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে মানুষ মরিয়া হয়ে উঠেছে। মানুষের অতি আগ্রহকে পুঁিজ করে টাকা আদায় করছে ঠিকাদার।
বিদ্যুৎ সরবরাহ কাজে সহযোগিতাকারী আবদুল হান্নান আযাদ জানিয়েছেন, পল্লী বিদ্যুতের এক সময়ের লাইনম্যান জাহাঙ্গীর এখন সবচেয়ে বড় টিকাদর। পল্লী বিদ্যুতের কক্সবাজারের পুরো বিভাগ এখন জিম্মি করে রেখেছে এই একজন ঠিকাদার। এমন কোন লাইন নাই তিনি টাকা নেননি। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ কয়েক দফা তাগদা দেওয়ার পরেও তিনি কর্ণপাত করেননি। স্থানীয় সংসদ সদস্যরা নির্বাচনের আগে বিদ্যুতের লাইন সম্প্রসারণের জন্য বললেও তিনি কি কারণে কাজ করেন নি তা রহস্যময়। ২০১৯ সালের মধ্যে সরকার শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিলেও তিনি তা করছেন না।
পল্লী বিদ্যুতের জিএম নুর মোহাম্মদ আজম জানিয়েছেন, বিদ্যুতের লাইন সম্প্রসারণের ব্যাপারে ঠিকাদরকে কয়েক দফা অবহিত করা হয়েছে। এ ছাড়া এই বিভাগটি যিনি দেখেন রোরার ইলেক্টিফিকেশন’র প্রধান প্রকৌশলীকেও অবহিত করা হয়েছে। আমরা চাই দ্রুত লাইন সম্প্রসারণ করে উপকূলীয় এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করতে।
রোরার ইলেক্টিফিকেশন’র প্রধান প্রকৌশলী  জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, তিনি দ্রুত এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। সরকার নির্ধারিত লক্ষ্য আমরা যথাসময়ে পুরণ করতে চাই।
ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, কোন গ্রাহক থেকে টাকা নিয়েছে এমন প্রমাণ নেই। অন্য উপজেলায় কাজ চলছে তাই উপকূলীয় এলাকায় কাজ বন্ধ রয়েছে।

পাঠকের মতামত: