মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ
গ্রীষ্মের শুরুতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে আলীকদম উপজেলায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের বসবাসকৃত জনগোষ্ঠীর পানিয় জলের চাহিদা মেটানো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নলকূপ, ড্রিপ টিউবয়েল, ঝিরি-ঝর্ণার, পুকুর, ছড়া, খাল-বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে ঝিরি-ঝর্ণা, খাল-বিল ও ছড়ার দূষিত পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এতে করে আক্রান্ত হচ্ছে পানিবাহিত নানা রোগে।
উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের আনাচে কানাছে স্থাপিত বেশীরভাগ রিংওয়েল ও টিউবওয়েল গুলোতে পানি নেই বললে চলে। দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ। দুর্গম এলাকার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার চিত্র আরো ভয়াবহ। শুল্ক মৌসুমে পানীয় জলের চরম সংকট থাকলেও সমাধানে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনা। আলীকদম উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় আদিবাসী ও বাঙ্গালী নারীরা পানিয় জলের অভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা পায়ে হেটে কয়েক মাইল পাহাড়ী পথ পাড়ি দিয়ে পানিয় জল সংগ্রহ করছে।
আলীকদম সদরের স্থানীয় বাসিন্দা সামরি মার্মা বলেন, আলীকদম সদর, চৈক্ষ্যং, নয়াপাড়া ও কুরুকপাতা ইউনিয়নের প্রত্যেকটি ঝিরি খাল শুকিয়ে যাওয়ায় রীতিমত পানির দুর্ভিক্ষ লেগেছে এলাকায়। আলীকদম উপজেলায় উত্তরপালং পাড়া, পূর্বপালং পাড়া, প্রভাত পাড়া, সিলেটি পাড়া ও আবুমাঝি পাড়া, বাঘেরঝিরি, যোগেন্দ্র পাড়া, তারাবনিয়া, রোয়াম্ভূ বশির সর্দার পাড়া, নয়া পাড়া এলাকায় যে সব নলকূপ ও রিংওয়েল রয়েছে সেগুলোতে পানি পাচ্ছে না। একইভাবে পানিয় জলের জন্য হাহাকার অবস্থা সৃষ্টি হয় পোয়ামূহুরী, কুরুকপাতা, দোছরী ও মাংগু পল্লীগুলোতে। সেখানে শতাধিক পরিবারের বসবাস করলেও সেখানে এখন নিরাপদ পানির উৎস বলতে নেই।
এ ব্যাপারে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, জেলায় নির্বিচারে বৃক্ষনিধন, অবাধে পাথর উত্তোলনে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। তাই গ্রীষ্মের শুরুতেই পানির সংকট দেখা দেয়।
বনাঞ্চল উজাড় রোধ, অবাধে পাথর উত্তোলন বন্ধ, অকেজো রিংওয়েল ও নলকূপ গুলো সংস্কার এবং দুর্গম পাহাড়ী জনপদের গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলে গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির সংকট কমে আসবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
পাঠকের মতামত: