নিজস্ব প্রতিবেদক :: পবিত্র ঈদ উল আযহা আজ। বিশ্বের অন্যান্য মুসলমানদের সাথে বাংলাদেশেও যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালন পালিত হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও মহামারী করোনার কারণে ভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারাদেশে উদ উযাপন করা হচ্ছে। অনেক ধরনের স্বাস্থ্যবিধি আরোপিত হয়েছে। গ্রামে যাননি অনেকে। আবার অনেকেই করোনা ভীতিকে উপেক্ষা করে শহর ছেড়ে ছুটেছেন গ্রামে।
স্রষ্টার প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আযহা। মহান আল্লাহর নির্দেশে স্বীয় পুত্র ইসমাইলকে (আ.) কুরবানি করতে উদ্যত হয়ে হযরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর প্রতি অগাধ ভালোবাসা, অবিচল আনুগত্য ও আকুন্ঠ আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এরপর থেকে ঈদের নামাজের পর আল্লাহর অনুগ্রহ পাওয়ার আশায় মুসলমানরা পশু কুরবানি করেন।
মহামারীর কারণে এবারও জাতীয় ঈদগাহসহ দেশের অনেক ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। ঈদের আনন্দের দিনে খোলা থাকবে না বিনোদন কেন্দ্রগুলোও।
মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুভেচ্ছা জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আসুন কুরবানির ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে আমরা দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনায় ঈদুল আযহার নামাজ আদায়ের বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, মসজিদে ঈদের নামাজ আয়োজনের ক্ষেত্রে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের পূর্বে পুরো মসজিদ জীবাণুনাশক দ্বারা জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মুসল্লিদের প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে। প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে মসজিদ/ঈদগাহে আসতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদ বা ঈদগাহে ওজুর স্থানে সাবান, পানি ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদ বা ঈদগাহ মাঠের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান ও পানি রাখতে হবে। ঈদের নামাজের জামাতে আগত মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না। ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই অনুসরণ করে দাঁড়াতে হবে এবং এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে। শিশু, বয়োবৃদ্ধ, ও অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের ঈদের নামাজের জামাতে অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করা হয়।
এভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে।
ধবার সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ ক্বারী কাজী মাসুদুর রহমান।
এর আগে সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. আতাউর রহমান।
জামাতের আগে বয়ানে কোরবানির তাৎপর্য তুলে ধরা হয়। নামাজ শেষে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি, দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করেন ইমাম।
করোনার কারণে নামাজ শেষে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা কোলাকুলি থেকে বিরত থাকলেও পরস্পরে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
জাতীয় মসজিদের মতো কক্সবাজার সহ দেশের সকল জেলা-উপজেলার মসজিদগুলোতেও ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পাঠকের মতামত: