ঢাকা,মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারের ১৫৭ দখলদারের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দুদক

অনলাইন ডেস্ক :: কক্সবাজার জেলার প্রধান নদী বাঁকখালী ভরাট করে চলছে দখলের প্রতিযোগিতা। প্রতিদিন কক্সবাজার শহরের টনকে টন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। ফলে এককালের খরস্রোতা নদীটি ভরাট হতে হতে সংকুচিত হয়ে পড়েছে। উজাড় হচ্ছে নদীকূলের প্যারাবন। নদীতীরে পুরনো অবৈধ স্থাপনার সঙ্গে গড়ে উঠছে নতুন নতুন অবৈধ স্থাপনা। ফলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী বাঁকখালী। কক্সবাজার শহরসংলগ্ন বাঁকখালীর অব্যাহত দখল ও দূষণ থামাতে তালিকাভুক্ত ১৫৭ জন দখলদারের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২-এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরিফ উদ্দিন জানিয়েছেন, দুদক এরই মধ্যে বাঁকখালীর কিছু দখলদারকে নোটিশ দিয়েছে। চট্টগ্রামের দুদক কর্মকর্তারা জানান, পর্যায়ক্রমে নদীটির সব দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার-পরবর্তী সময়েও কক্সবাজার শহরের বদরমোকাম মসজিদসংলগ্ন বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট থেকে চট্টগ্রামমুখী যাত্রীবাহী জাহাজ ছাড়া হতো। চট্টগ্রাম থেকে পণ্যবাহী জাহাজও ভিড়ত কস্তুরাঘাটে। কিন্তু সেই দিন এখন যেন স্বপ্ন। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়টি হলো, গত দুই দশকে বাঁকখালী ব্যাপকভাবে জবরদখলের শিকার হয়েছে। পরিবেশবাদীদের অভিযোগ, নদীটির কমপক্ষে ৫০০ একর জমি দখল করেছে দখলবাজরা। এ রকম দখলবাজ প্রভাবশালী ১৫৭ জনের তালিকা রয়েছে দুদকের কাছে।

নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া থেকে মাঝেরঘাট পর্যন্ত নদীর প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় ভরাট ও দখল তৎপরতা বেশি। কস্তুরাঘাটের বিআইডাব্লিউআইটি টার্মিনালসংলগ্ন নদীর ভরাট জমিতে গড়ে উঠেছে নানা স্থাপনা। এলাকাটিতে তৈরি করা হয়েছে চিংড়িঘের, লবণ উৎপাদনের মাঠ, প্লট বিক্রির হাউজিং কম্পানি, নৌযান মেরামতের ডকইয়ার্ড, ময়দা ও বরফ কল, শুঁটকিমহালসহ অসংখ্য ঘরবাড়ি।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বাঁকখালী নদী দখলদারদের তালিকা তৈরি করে তাদের উচ্ছেদ এবং দূষণের উৎস চিহ্নিত করে তা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে আদালত নদীর তীরবর্তী জমিতে চিংড়ি, তামাক বা ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে ইজারা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ ১০ সরকারি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত নদীটি রক্ষায় সীমানাই নির্ধারণ করা হয়নি। সমানতালে চলছে নদী ভরাট ও দখল।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে বাঁকখালী নদীর অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

 

পাঠকের মতামত: