ঢাকা,বুধবার, ১ মে ২০২৪

বনে গোপনে হাতি মেরে মাটিচাপা চকরিয়ায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের খুটাখালীতে গোপনে একটি হাতিকে মেরে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। খবর পেয়ে গতকাল রোববার দুপুরে অকুস্থলে গিয়ে ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আবু জাকারিয়ার নেতৃত্বে বনবিভাগের লোকজন মাটি খুঁড়ে হাতিটির মৃতদেহ উদ্ধার করলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভেটেরিনারি সার্জন) ডা. সুপন নন্দী ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। তাঁর সাথে ছিলেন ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন মো. মোস্তাফিজুর রহমান, হাতির মাহুতসহ কর্মচারীরা। তারা বিকেল পর্যন্ত অবস্থান করে হাতিটির সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরি এবং নানা অঙ্গ সংগ্রহ করে ফের মাটিচাপা দিয়ে চলে আসেন।
জানা গেছে, উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের নিয়ন্ত্রণাধীন খুটাখালী বনবিটের খুটাখালী ইউনিয়নের পূর্ব সীমান্ত কালাপাড়া এলাকায় শুক্রবার একটি বন্য হাতিকে গুলি করে বনভূমির অবৈধ দখলদাররা। পরে স্থানীয় সচেতনমহল বনবিভাগে খবর দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এবং তদন্তে এসে এর সত্যতা মিলে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল প্রতিবেদনকারী চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী চকরিয়া নিউজকে জানান, ‘হাতিটিকে সরাসরি মাথার ওপর গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এর পর বনের ভেতরেই গর্ত কুঁড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয় গোপনে। হাতিটি মাদী এবং বয়স প্রায় চারবছরের মধ্যে হবে।’
স্থানীয়রা জানান, চলতি বছরই এ পর্যন্ত ৬টি বন্যহাতি বিভিন্ন কায়দায় মেরে ফেলা হয়েছে খুটাখালী বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়। সর্বশেষ গত শুক্রবার দিবাগত রাতে খুটাখালী বিটের অধীন সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কালাপাড়া এলাকায় গুলি করে হত্যা করা হয় হাতিটিকে। এর পর হাতিটি অনেকটা গোপনেই মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা আরো জানান, খুটাখালী বনবিটের বিভিন্ন মৌজার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছপালা উজাড় এবং বিপুল পরিমাণ বনভূমি দখল করে প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে শত শত অবৈধ বসতি। বনের এসব মৌজায় যেখানে অবৈধ বসতি গড়ে উঠছে সেসব স্থান হচ্ছে বন্যহাতির বিচরণক্ষেত্র। তাই হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতেই পরিকল্পিতভাবে কখনো বিদ্যুতের ফাঁদ আবার গুলি করে হত্যা ছাড়াও বনের ভেতর বড় বড় গর্ত কুঁড়ে ফাঁদ পেতে হত্যা করা হচ্ছে বন্যহাতি। হাতির বিচরণক্ষেত্রে অবৈধ বসতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে স্থানীয় অসাধু বনকর্মকর্তাদের যোগসাজস রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
তবে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আবু জাকারিয়ার বক্তব্য নেওয়ার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।।

 

পাঠকের মতামত: