ঢাকা,শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজে ধীরগতি

নিজস্ব প্রতিবেদক :: করোনা এবং বৃষ্টির কারনে বহুল প্রতীক্ষিত চট্টগ্রাম দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজ দীর্ঘায়িত হতে পারে। বর্তমানে প্রকল্পের ৪১ শতাংশ কাজ শেষ হলেও করোনা পরিস্থিতির সাথে যুক্ত হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাত। এই কারনে কাজ ধীরগতি হয়ে গেছে।

প্রকল্পের প্রথম ধাপে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত জমি প্রকল্প পরিচালক বুঝে পেলেও ১ কিলোমিটার এলাকায় ঘর-বাড়ি থাকায় বড় ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার অংশে স্বাভাবিক গতিতে কাজ চললেও পদে পদে বাধা চট্টগ্রাম অংশে। কাজও বেশি হয়েছে কক্সবাজার অংশে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভূমি অধিগ্রহণ করে তা প্রকল্প পরিচালককে বুঝিয়ে দেয়া হলেও কাজ করতে গেলে স্থানীয় লোকজন দলবল নিয়ে এসে বলেন-আমরা ভূমি অধিগ্রহনের টাকা পাইনি।

চট্টগ্রাম অংশে বিশেষ করে লোহাগাড়া-সাতকানিয়া এবং চন্দনাইশ এলাকায় কাজ করতে গেলে ভূমি মালিকদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে প্রকল্প কাজের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। চট্টগ্রাম অংশে এক কিলোমিটারের মতো ঘর-বাড়ি পড়েছে। তার উপর রয়েছে মাটির সংকটও।

এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান জানান, আমার এই প্রকল্পের পুরোটা বিদেশি ফান্ডিং। প্রকল্প কাজের টিম লিডার হচ্ছেন ব্রিটিশ। করোনায় লকডাউন শুরুর সাথে সাথেই সব ব্রিটিশ নাগরিক দেশে ফিরে গেছেন। লকডাউনের কারনে পুরো এপ্রিল মাস কাজ বন্ধ ছিল। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে কাজ শুরু করেছি। জুলাই-আগস্ট মাস বৃষ্টির কারনে বাইরে কাজ করা যায়না। সব প্রকল্পে জুলাই-আগস্ট মাস কাজ হয় না। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ। আমরা কাজ শুরু করেছি ২০১৮ সালের শেষের দিকে। করোনা পরিস্থিতি যদি আর না বাড়ে, তাহলে মেয়াদের মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারবো।

প্রকল্পের কক্সবাজারের অংশে মাতামুহুরি নদীসহ বিভিন্ন নদী থেকে মাটি উত্তোলন করা গেলেও মাটির বড়ো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম অংশে। সরকার এখন আইন করেছে কোন ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা যাবে না। এই কারনে চট্টগ্রাম অংশে মাটিরও সমস্যা। জমি থেকে মাটি নেয়া যাচ্ছে না। কষ্ট বেশি হলেও বিকল্প ব্যবস্থায় মাটি আনতে হবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। যার পুরোটাই এডিবির। প্রথম ধাপে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার সদর পর্যন্ত ৯২ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। পরবর্তী ধাপে কক্সবাজার থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ হবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটারে ট্রেন চলবে ঘন্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার যেতে সময় লাগবে ১ ঘন্টা ২০মিনিট। তবে এই প্রকল্পের বড় সমস্যা হলো চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী রেল লাইন। এই লাইনের অবস্থা খুবই শোচনীয়। ১২৮ কিমি রেলপথে স্টেশন থাকছে ৯টি। এগুলো হলো- সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাঁও, রামু, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও ঘুমধুম।

পাঠকের মতামত: