ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ঝান্ডুফুলে ভাগ্য বদল

এম আবুহেনা সাগর, ঈদগড় থেকে ফিরে ::  ঘরবাড়ী পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজে পাহাড়ে জন্মানো ঝাড়ু ফুলের বিকল্প নেই। গ্রামগঞ্জ থেকে শুরু করে প্রতিটি ঘরেই রয়েছে এর কদর। নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী আর রামুর ঈদগড়ের বিভিন্ন এলাকার পাহাড়ের ঢালে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ঝাড়ু ফুল স্থানীয় দের চাহিদা মিটিয়ে এখন যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ঝাড়ুফুল সংগ্রহ ও বিক্রি করে বাড়তি উপার্জন করছেন স্থানীয়দের অনেকে। এ নিয়ে ভাগ্যের বদল হয়েছে বহুজনের। বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় স্থানীয় মানুষ প্রাকৃতিকভাবে পাহাড়ে জন্মানো ঝাড়ু ফুলের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনেন।

পাহাড়ের পতিত জমি থেকে নারী-পুরুষ এসব ঝাড়ু ফুল সংগ্রহ করে থাকেন। কাঁচা অবস্থায় এই ঝাড়ু ফুলের ৫-৬ ফুট দৈর্ঘ্যের শলাকা কেটে এক জায়গায় জড়ো করা হয়। শুকানোর পর ১২-১৫টি শলাকা বেঁধে বানানো হয় ছোট ছোট আঁটি। আবার ছোট ছোট এ ধরণের ৫০-৬০টি আঁটি দিয়ে বাঁধা হয় এক একটি বোঁঝা। এরপর ঐসব বোঝা বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয় স্থানীয় বাজারে পাইকারদের কাছে। আর পাইকারদের কাছে এসব ছোট আঁটি বিক্রি হয় ২০-২৫ টাকায় আর বড় বোঝা ৫’শ থেকে ৬’শ টাকায়।

৩রা মার্চ সকালে ঈদগড়ের পশ্চিম পাড়াস্থ খোলা বিলেসহ নানান স্থানে ঝাড়ু ফুল শুকানোর দৃশ্য চোখে পড়ে। বাজারে বিক্রেতারা ঝাড়ু ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেন এখানে। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারী ও খুচরা ক্রেতারা সেখানকার হাট থেকেই সংগ্রহ করেন ঝাড়ুফুল।

একই দিন বিকেল ঈদগাঁও বাজারে ঝাডুফুল বিক্রি করতে আসা ঈদগড়ের এক ব্যাক্তি কক্সবাজার প্রতিদিনকে জানান,বর্তমানে সব খানে ঝান্ডুফুল বেচাবিক্রি চলছে। ঘর পরিস্কারের ক্ষেত্রে এ ফুলের কদর রয়েছে তুঙ্গে।

ধুমছাকাটাসহ বিভিন্ন স্থানের কজন ঝান্ডুফুল বিক্রেতারা জানান, শুক্রবার ও সোমবার ঈদগড় বাজারে পাহাড় থেকে ঝাডুফুল কেটে বিক্রি করতে আনে। পূর্বে অনেক পাইকারী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দাদন হিসেবে টাকাও নিয়ে থাকে। সেটি মৌসিমে ঝাড়ুফুল দিয়ে শোধ করে থাকের ব্যবসায়ীরা। জুমের পতিত অংশে জন্মানো এই ফুল বাড়তি উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম। পাহাড়কে জুমের জন্য প্রস্তুত করার পূর্বে এ ঝাড়ুফুল বিক্রি করে বাড়তি উপার্জন করা হয়। এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অনেকে। ঈদগড়-বাইশারী থেকে পাইকারী দামে কিনে ঝাড়ুফুল সরবরাহ করে চট্রগ্রাম বিভাগসহ দেশের নানা এলাকায়। এসময় ঝান্ডুফুল সংগ্রহ করে ব্যবসায়ীরা ট্রাকযোগে দুর দুরান্তের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে নিয়ে যায়।

স্খানীয়দের মতে, ঈদগড় বাজারে ঝাড়ুফুল ১০/১২ টাকা হারে বিক্রি করে। পাশাপাশি জেলা সদর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে স্থানীয় খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকেও পাইকাররা ভিন্ন ভিন্নদামে সংগ্রহ করে থাকেন গৃহস্থালি কাজের অন্যতম প্রয়োজনীয় এ ঝাড়ুফুল। অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে এই ফুল। সংরক্ষণ করা গেলে পাহাড়ের অর্থনীতিতে এ পণ্যটি বিশেষ অবদান রাখতে পারবে বলে মনে করেন তারা।

পাঠকের মতামত: