ঢাকা,রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

গর্ভবতী স্ত্রীর লাশ ফেলে স্বর্ণালংকার নিয়ে পালালেন স্বামী-স্বজনরা

উখিয়া প্রতিনিধি :: হাসপাতালে ৮ মাসের গর্ভবতী স্ত্রীর লাশ রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর ও শাশুড় বাড়ীর লোকজনের বিরুদ্ধে। হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় ইয়াছমিন আক্তার সেতু (১৯) নামক এক গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর স্বামী আবদু সালাম ও শাশুড় বাড়ীর লোকেরা।
খবর পেয়ে নিহত ইয়াছমিনের এক আত্বীয় স্কুল শিক্ষক মো: আলী হাসপাতালে এলে ইয়াছমিনের ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার খুলে নিয়ে মৃতদেহ হাসপাতালে রেখে কৌশলে পালিয়ে যান পাষন্ড স্বামী ও শাশুড়ি, ভাই ও বোনেরা।
নিহত গৃহবধূ ইয়াছমিন আক্তার সেতু উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের পূর্ব দরগাবিল বাগানপাড়া এলাকার রফিক উদ্দিনের মেয়ে এবং জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনারপাড়া গ্রামের আবদু সালামের স্ত্রী।
নিহত ইয়াছমিনের মা সদর হাসপাতালের মর্গের সামনে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘ইয়াছমিনের বিয়ে হয়েছে মাত্র ১০ মাস। মেয়ে এখন ৮ মাসের গর্ভবতী। ইয়াছমিনকে মেয়ের জামাই আবদু সালাম ও তাঁর পরিবারের লোকজন মেরে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। তিনি আরো বলেন,জামাতার মা ও ভাইয়ের সাথে ইয়াছমিনের ঝগড়ার বাহানা তুলে বারবার শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন করতো।
সর্বশেষ মঙ্গলবার(২৪ ডিসেম্বর) রাতে আবদু সালামের বাড়িতে হত্যা করে ইয়াছমিনকে। বুধবার ভোরে গুরুতর অবস্থায় ইয়াছমিনকে শাশুড় বাড়ীর লোকেরা উখিয়ার কোর্টবাজারে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান।সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সদর হাসপাতালে চিকিৎসক হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
নিহত ইয়াছমিনের ভাই তোফাইল বলেন, আমার বোন উখিয়া বঙ্গমাতা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছে। তাঁর বোনকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। না হলে হাসপাতাল থেকে তারা কেন পালিয়ে গেলো। তিনি দাবী করেছেন, ইয়াছমিনের ব্যবহার্য স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে গেছে স্বামী ও স্বজনরা।
প্রত্যক্ষদর্শী মো: আলী জানান,উখিয়ার অরিজিন ও জেলা সদর হাসপাতালে আমি নিহত ইয়াছমিনের সাথে ছিলাম। হঠাৎ সদর হাসপাতাল থেকে স্বামী আবদু সালাম ও তার মা, ভাই ও বোন লাশ রেখে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: শাহিন আবদুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ইয়াছমিনের মৃত্যু হয়েছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল মনসুর বলেন, এরকম একটি ঘটনা শুনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তে এটি হত্যা প্রমাণ মিললে গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: