ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

২৬ টাকায় ধান, ৩৫ টাকায় চাল কিনছে : জেলা প্রশাসক

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::  কক্সবাজারে সরকারি ভাবে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান চাল কেনা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। গতকাল ২৩ মে সকালে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে ধান চাল কেনা কর্মসূচী উদ্বোধনকালে জেলা প্রশাসক বলেন, বর্তমান সরকার কৃষকদের পাশে আছে, ভয়ের কোন কারণ নেই আর বর্তমান সরকারের চেয়ে কৃষিবান্ধব সরকার আর হতে পারেনা। অতীতের সরকারের সময় কৃষকরা সারের দাবীতে আন্দোলন করতে গিয়ে গুলি খেলে নিহত হয়েছ আর বর্তমান সরকার কৃষকদের সব কিছুতে ভর্তুকি দিচ্ছে। এছাড়া কৃষি কাজে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সমন্বয় থাকার কারণে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছে দেশ। তিনি বলেন, সরকারিভাবে ধান-চাল কেনার যে কর্মসূচী শুরু হয়েছে এখানে কোন ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না, কোন কৃষক যাতে হয়রানি না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখারও আহবান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, কৃষকরাই হচ্ছে দেশের প্রাণ। কৃষি এবং কৃষক বাঁচলেই দেশ বাঁচবে। তাই কৃষকদের জন্য সব কিছুতে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে এবং সামনে আরো হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কৃষকদের জন্য সব সময় আন্তরিক ছিল এখনো আছে তাই ভয়ের বা শঙ্কার কোন কারণ নেই। আপনাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য অবশ্যই পাবেন। এখানে কোন মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে ভিড়তে না দেওয়ার জন্য তিনি আহবান করেন। সভায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দেব দাশ চাকমা বলেন, সরকার ২৬ টাকা কেজি দরে ধান এবং ৩৫ টাকা কেজি দরে চাল কিনবে। জেলায় এ বছর ১৬৩৯ মেট্রিক টন ধান এবং ৫৩৩৯ মেট্রিক টন চাল কেনা হবে বলেও জানান তিনি। আর প্রতিটি উপজেলায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান চাল কেনার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ছালাউদ্দিন বলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলাতে চলতি বছর ২০৩ মেট্রিক টন ধান (২৬ টাকা) কেজি দরে এবং ৫৪৫ মেট্রিক টন চাল (৩৫ টাকা) কেজি দরে কেনা হবে। তবে ধানের মান ভাল থাকতে হবে বলেও জানান তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এইচ এম মাহফুজুর রহমান, খুরুশকুল ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, উপজেলা কৃষি অফিসার জিবাংশু দাশ, খুরুশকুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিন।
এদিকে চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, চকরিয়া উপজেলায় ইতোমধ্যে ১০ টন ধান সংগ্রহ করা হয়ে গেছে এবং সরকারিভাবে এই কার্যক্রম অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষকরা অত্যন্ত উৎপাদন মুখি এবং সফল কৃষক। আগের চেয়ে জমি কমলেও ফসল উৎপাদন বেড়েছে। আগে প্রতি কানিতে যে পরিমান ধান হতো এখন তার চেয়ে ডাবল হয়। আর সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান চাল কেনার ফলে সাধারণ কৃষকরা খুবই খুশি। অনেক কৃষক আবেগে কান্না করছে। তাদের উৎপাদিত ফসলের ভাল দাম পেয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোয়া করছেন।
এদিকে সরকারি ভাবে ধান চাল সংগ্রহ করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে প্রান্তিক কৃষকরা। এ ব্যাপারে সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের ঘাটকুলিয়া পাড়ার শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, আমার কাছে প্রায় ১২০০ আরি ধান মজুদ আছে, কয়েকদিন আগেও ধানের দাম ছিল আরি (১০ কেজি) ১৪০ টাকা  সে জন্য ধান বিক্রি না করে রেখে দিয়েছিলাম। তবে ধান রাখতে খুবই সমস্যা হচ্ছিল। সে প্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার যে কৃষকদের কাছ থেকে আরিতে ২৬০ টাকা করে ধান কিনছে এই খবর শুনে আমরা খুবই আনন্দিত। এতে আমাদের খরচ বাদে কিছু লাভ থাকবে এবং সামনে আরো উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ধান চাষ করতে পারবো। এ সময় আরেক কৃষক নুরুল হুদা বলেন, এখানে একটি সমস্য আছে সেটা হচ্ছে ধান বিক্রি করতে গেলে কর্মকর্তারা বলে ধানের মান ঠিক নেই ধানে চিকা বেশি তাই এই ধান কেনা যাবেনা। পরে দেখা যায় তারা কিছু বাড়তি টাকা পয়সা দাবি করে আর চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিলে ধান কিনে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হেসেন বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে ধান চাল কেনা এটা একটি বড় সফলতা এবং ভাল সরকারের ভাল উদ্যোগ এখানে কোথাও সামান্যতম অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী কোন অন্যায় করলে সাথে সাথে আমাকে জানালে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

পাঠকের মতামত: