ঢাকা,রোববার, ২ জুন ২০২৪

চকরিয়ায় অজ্ঞান করে রাস্তায় ফেলে দিল অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে!

মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:

চকরিয়ায় স্বামীর অধিকার চাইতে গিয়ে গর্ভবতী স্ত্রীকে অমানুষিক মারধর করে রাস্তায় ফেলে দিলেন শশুড়বাড়ির লোকজন। অচেতন অবস্থায় পথচারীরা উদ্ধার করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে জ্ঞান ফিরে না আসায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজ পাড়া উলুবনিয়া রাস্তার মাথা নামক এলাকায় এমনই অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতিত অন্তঃসত্ত্বা রোজিনা আক্তার (২২) ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড পুর্ব মাইজ পাড়া গ্রামের মৃত মমতাজ আহমদের কন্যা। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, রোজিনার সাথে দুবছর আগে একই এলাকার মৃত মোক্তার আহমদের পুত্র জয়নাল আবেদীন (২৬)এর সাথে কোর্টের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পেশায় সে ডুলাহাজারা বাজারের ফল ব্যবসায়ী। স্বামী জয়নাল আবেদীন পরিবারের অজান্তে বিয়ে করায় তারা বিভিন্ন ভাড়া বাসায় বসবাস করছিল। স্ত্রী রোজিনার পিত্রালয়ে অসচ্ছলতা ও যৌতুক না পাওয়ায় জয়নাল পরিবারের সদস্যরা তাকে মেনে নিতে পারেননি। তারপরও পিতার বাড়ি থেকে নগদ পঞ্চাশ হাজার ও গরু বিক্রি করে ত্রিশ হাজার মোট আশি হাজার টাকা স্বামীর হাতে তুলে দেয় স্ত্রী রোজিনা।

এদিকে জয়নালকে ফুসলিয়ে স্বজনরা আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রোজিনাকে রেখে তার অজান্তে আরো একটি বিয়ের আয়োজন করে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের (১নং ওয়ার্ড) রইঙ্গা এলাকার ওসমানের কন্যার সাথে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। পরে কারণে অকারণে পূর্ব স্ত্রী রোজিনার উপর নির্যাতন চালিয়ে বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসতে জোর চাপ সৃষ্টি করেন জয়নাল। এর সমাধান ও স্ত্রীর অধিকার নিয়ে শশুড়বাড়িতে উঠতে মেম্বার-চেয়ারম্যানের নিকট শরণাপন্ন হয়।

সর্বশেষ ঘটনার দিন শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় উলুবনিয়া রাস্তার মাথা পূর্ব মাইজ পাড়া গ্রামে চলাচল রাস্তায় বোরকা পরিহিত একটি মহিলা পড়ে থাকতে দেখে পথচারীরা। এলাকার লোকজন জানায় তাকে স্বামী জয়নাল আবেদীনসহ পরিবারের লোকজন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রোজিনাকে প্রচন্ড মারধর করে গাছের সাথে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে চলাচল পথে ফেলে রেখে বসত বিল্ডিংয়ে ঢুকে পড়ে জয়নাল পরিবারে লোকজন। সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে মহিলাটিকে কেউ চিনেনা বলে জানায় নির্যাতনকারীরা। পরে স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরিদুল আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অজ্ঞান অবস্থায় এ মহিলাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানান, চেষ্টার পরও সন্ধ্যা পর্যন্ত রোগীর জ্ঞান ফিরেনি। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ইতিপূর্বে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছিল। জয়নালকে প্রথম স্ত্রীকে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে ভরণ পোষণে কোন প্রকার ত্রুটি না হয় সে ভাবে চলতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সে নির্দেশ অমান্য করে বিপরীত কার্যক্রম শুরু করে এবং ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময় প্রথম স্ত্রীকে মারধর করেছিল বলে জানতে পারি।

পাঠকের মতামত: