ঢাকা,রোববার, ১৯ মে ২০২৪

চকরিয়ায় পরিবেশ দূষণরোধে সনাকের আট দাবি উপস্থাপন

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

পরিবেশ দূষণরোধে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন টিআইবির সহযোগি প্রতিষ্ঠান সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)। গতকাল মঙ্গলবার (৫জুন) চকরিয়া উপজেলা সনাকের আয়োজনে বিশ^ পরিবেশ দিবসের আলোচনা সভায় পরিবেশ দূষণরোধে আটটি দাবি তুলে ধরা হয়। সনাকের উদ্যোগে বিশ^ পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এদিন র‌্যালি ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে দশটার দিকে চকরিয়ার ভরামুহুরীস্থ সনাক কার্যালয় থেকে র‌্যালি শুরু হয়ে আদালত সড়ক হয়ে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ করে পূণরায় সনাক কার্যালয় এসে র‌্যালি শেষ হয়। র‌্যালিতে সনাক, ইয়েস নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

র‌্যালি শেষে আলোচনা সভা সনাক চকরিয়া কার্যালয়ে অনুষ্টিত হয়। সনাক চকরিয়ার সভাপতি অধ্যাপক এ. কে. এম. শাহাবুদ্দিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সনাক সদস্য এপেক্সিয়ান মহব্বত চৌধুরী, সনাক সদস্য জিয়া উদ্দীন, টিআইবির এরিয়া ম্যানেজার এ.জি.এম.জাহাঙ্গীর আলম, ইয়েস দলনেতা মো. ইউনুচ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ইয়েস সহ-দলনেতা ফাজিয়া তাজমিন মনি এবং দিবসের ধারণাপত্র পাত্র পাঠ করেন সাবেক ইয়েস সহ-দলনেতা হাফছা বেগম।

সভায় বক্তরা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও নিশ্চিত করতে পরিবেশ দূষণ বন্ধ করতে হবে। আর পরিবেশ দুষণ বন্ধ করতে হলে পরিবেশ সুরক্ষায় গৃহিত প্রতিটি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৮ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী “রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্য প্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন” মর্মে সুনির্দিষ্ট সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পবিবেশ সংক্রান্ত সংবিধানের বাধ্যবাধকতাও নিশ্চিত করা হচ্ছেনা।

পরিবেশ দূষণ রোধে সনাক-টিআইবির পক্ষ থেকে নি¤েœাক্ত সুনিদিষ্ট দাবী উত্থাপন করা হচ্ছে। দাবি সমুহের মধ্যে রয়েছে (১) প্লাস্টিকের বেআইনী উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং ব্যবহার রোধে বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং তার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি অনুকরণযোগ্য ইতিবাচক অবদানের জন্য পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। (২) প্লাষ্টিক উৎপাদন ও ব্যাবহার নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক সব অংশীজনের সাথে সমন্বিতভাবে কম্যুনিটিভিত্তিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে হবে। (৩) প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা উন্নত করে উৎপাদিত প্লাস্টিক পুর্নব্যাবহার নিশ্চিতে সরকার ও বেসরকারি খাত কর্তৃক বিভিন্ন প্রণোদনা মূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। (৪) সম্ভাব্য ক্ষেত্রসমূহে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ/সীমিত করতে হবে এবং প্লাস্টিকের পরিবেশবান্ধব বিকল্প উদ্ভাবনের প্রচেষ্টা করতে হবে। (৫) সমুদ্র সম্পদ, বনভূমি, নদ-নদী, খাল-বিল রক্ষা এবং অবৈধ দখল হতে তা উদ্ধার ও সুরক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। (৬) টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ১৪ এর অর্জন নিশ্চিতে সমুদ্র দূষণ রোধের পাশাপাশি সমুদ্র সম্পদের সংরক্ষণ নিশ্চিতে সমুদ্র অধিদপ্তর, কোষ্ট গার্ড, নৌবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত তদারকি এবং দূষণ আইনের ব্যবহারে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহায়তা নিতে হবে (৭) ‘প্যারিস চুক্তি’ বাস্তবায়নে সকল শিল্পোন্নত দেশের অংঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে, বিশেষ করে স্বচ্ছতার সাথে বাংলাদেশসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের জন্য প্রতিশ্রুত তহবিল দ্রুত ও সহজতর পদ্ধতিতে ছাড় করতে হবে। (৮) দূষণ রোধে ব্যবহৃত তহবিলসহ সার্বিকভাবে জলবায়ু অর্থায়নে কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতে গৃহিত সকল কার্যক্রমে জন অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে এবং আর্থিক লেনদেন ও কর্মসম্পাদন প্রতিবেদন স্ব-প্রণোদিতভাবে প্রকাশ করতে হবে। ##

পাঠকের মতামত: