ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

পেকুয়ায় তিন কোটিপতির কব্জায় ৮একর সরকারি জমি!

dokholনাজিম উদ্দিন, পেকুয়া :::

পেকুয়ায় তিন কোটিপতির কব্জায় রয়েছে প্রায় ৮একর সরকারি খাস জমি। ভুমিহীন বাছাই প্রক্রিয়া চলছে পেকুয়া উপজেলায়। ওই সম্পত্তি ভোগ করতে এলাকার দরিদ্র, ছিন্নমুল ও ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা সহকারি কমিশন (ভুমি) পেকুয়া বরাবর আবেদন করেন। বাছাই প্রক্রিয়া করন সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে ৮একর সরকারি ১নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত জমি নিয়ে ডিগবাজি দেখা দিয়েছে। উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের উত্তর সুন্দরীপাড়া এলাকায় এ সম্পত্তির অবস্থান। ছনুয়া নদীর জেগে উঠা চরের এ সম্পত্তি কব্জায় নিয়ে আসতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করছে তিন কোটিপতি। তারা পরষ্পর নিকট আতœীয়। এরা হচ্ছেন সুন্দরী পাড়ার মৃত.হাজি¦ মেহের আলীর ছেলে নুরুল আমিন, মৃত.হাজি¦ নুর আহমদের ছেলে জহির উদ্দিন মাতবর ও মৃত.জাফর আহমদের ছেলে দিদারুল ইসলাম মাতবর। নুরুল আমিন রাজাখালী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেনের ছোট ভাই। জহির উদ্দিন মাতবর তার আপন চাচা। দিদারুল ইসলাম তার আপন ভাগিনা। তিনজনই স্থাবর ও অস্থাবর বিপুল সম্পত্তির মালিক। প্রত্যেকের জমি রয়েছে ১০ থেকে ১৫একরও অধিক। নুরুল আমিন বিপুল সম্পত্তির মালিক। সুন্দরী পাড়া আমিন বাজার তার নাম করনে হয়েছে। কোটি কোটি টাকার ব্যবসা বাণিজ্যও আছে তাদের। মেহের সল্ট এর অংশীদার। সারা দেশে মোড়কজাত লবন বাজারজাত হচ্ছে মেহের সল্ট। জহির মাতবর নুরুল আমিনে চাচা। তিনিও বিপুল সম্পত্তির মালিক। সুন্দরী পাড়ার লোকজন জানায় তার প্রায় ১০একর স্থবর সম্পত্তি রয়েছে। বাঁশখালী ছনুয়ায় একশ একর একটি মৎস্য ঘেরে বিনিয়োগ করেছেন। দিদারুল ইসলাম মাতবর নুরুল আমিনের আপন ভাগিনা। তারও বিপুল স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। সাগরে মাছ ধরার ফিশিং বোট, আমিন বাজারে বড় পরিসরে ব্যবসা আছে। আমিন ও দিদারের চট্টগ্রাম শহরে কোটি কোটি টাকা মুল্যমানের বহুতল ভবন আছে। ছনুয়া খালের লাগোয়া জেগে উঠা চর তারা তিন কোটিপতি ভোগ করতে এখন প্রানপন চেষ্টা চালাচ্ছেন। সম্পত্তি দামি হওয়ায় এ তিন নিকট আতœীয় এক হয়েছেন। তারা এলাকার প্রভাবশালী ও জমিদার। এদিকে ডেপুটি কমিশন (ভুমির) মালিকানাধীন ৮একর জায়গা দখলে নিতে তৎপর হয়েছেন তারা। জায়গা সরকারি। বর্তমান মৌজা মুল্যে ওই সম্পত্তির দাম হবে দু’কোটি টাকা। জানা গেছে বর্তমান সরকার খাস জমি বন্টনের উদ্যেগ নিয়েছেন। অতিদরিদ্র, ভুমিহীন জনগোষ্টিকে উপকারভোগি হিসেবে নির্ধারনের জন্য নীতিমালা প্রনীত হয়েছে। সামাজিক অস্বচ্ছল ও ভুমিহীনদের অনুকুলে এসব জমি ব্যক্তি মালিকানায় হস্তান্তর করবে সরকার। বাছাই প্রক্রিয়ায় তারা সঠিক প্রমানিত হলে উপকারভোগিদের অনুকুলে হস্তান্তর করা হবে দলিল ও দস্তাবেস। জানা গেছে ৮একর ওই সম্পত্তির জন্য রাজাখালী ইউনিয়নের উত্তর সুন্দরীপাড়া এলাকা থেকে সহকারি কমিশন (ভুমি) পেকুয়া বরাবর একাধিক আবেদন জমা হয়েছে। আবেদনকারীরা ওই জমিতে পুর্ব থেকে দখলে রয়েছে। অনেকের বসতবাড়িও রয়েছে। নালি জায়গা তারা উৎপাদন উপযোগি কওে প্রতি বছর লবন মৌসুমে উৎপাদন করছে লবন। এছাড়া দুরবর্তী সাগর থেকে মৎস্য আহরন করে ওই জায়গায় শুটকি প্রক্রিয়াকরন করা হয়। শুস্ক মৌসুমে ওই চরে শুটকি চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ সর্বত্রে বিকিকিনি হয়ে থাকে। ৮একর জায়গার মধ্যে কয়েকটি ভুমিহীন পরিবার বসবাস করছে। এরা জেলে পরিবার। সমুদ্র থেকে মাছ আহরন করে জীবিকা চালায়। তারা ওই জায়গা বরাদ্দ পেতে মুলত আবেদন করেছেন। উত্তর সুন্দরীপাড়ার মৃত.আহমুদুর রহমানের ছেলে বদিউল আলম, মৃত.ছৈয়দ আহমদের ছেলে আবুল কালাম, বদিউল আলমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, মৃত.ইজ্জত আলীর ছেলে নুরুল হোসেন, মৃত.আহমদ শফির ছেলে মো.জালাল ওই জায়গা বরাদ্দ পেতে আবেদন করেন। উক্ত জায়গায় একটি মসজিদও প্রতিষ্টা হয়েছে। মসজিদেও পক্ষে মৌলভী ছৈয়দুল হক আবেদন করেন। আবেদনকারী বদিউল আলম জানায় এ জায়গা আমরা যুগ যুগ ধরে সংস্কার ও রক্ষনাবেক্ষন করে আসছি। বাপ-দাদার ঘর ভিটাও আছে এ জায়গার উপর। আমি ২০শতক জমির আবেদন করেছি। ওই জমি আমার নামে লীজ আছে। শাহাদত চেয়ারম্যান প্রায় এক কিলোমিটার দুর থেকে এসে এ জায়গা তার দাবি করে ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। নুরুল হোসেন জানায় তারা কোটিপতি। আমাদের আবেদন বাতিল করতে দৌঁড়ঝাপ করছে। ৮০শতক জায়গা আমি যুগ যুগ ধরে ভোগ করছি। ওই জমির জন্য আবেদন করেছি। এখন আমাদেরকে হুমকি দেয়া হচ্ছে আবেদন তুলে নিতে। আবুল কালামের স্ত্রী নুর বেগম ও মৃত. বাবুলের স্ত্রী আয়েশা বেগম জানায় আমাদের আর কোন জায়গা নেই। এ জায়গাতে আমাদের বাড়িঘর। পরিবার পরিজন নিয়ে এ জায়গাতে বসবাস করছি। আমরা ভুমিহীন। সরকারের কাছে আবেদন করেছি এ জায়গা পেতে। তারা কোটিপতি ও প্রভাবশালী। যেকোন মুর্হুতে এ জায়গা থেকে আমাদেরকে উচ্ছেদ করতে হানাহানি করতে পারে। সহকারি কমিশন (ভুমি) পেকুয়ার সালমা ফেরদৌস জানায় সরকারী নীতিমালা যথাযত অনুসরন করা হবে। যারা প্রকৃত ভুমিহীন অবশ্যই এ সম্পত্তি তারই পাওয়ার যোগ্য। যাচাই বাছাই চলছে। কোন বিত্তবান ও সম্পত্তির মালিককে এ জায়গা বরাদ্দ দেয়ার প্রশ্ন আসেনা। তথ্য গোপন করে শঠামি ও চাল চাতুরির আশ্রয় নিলে অবশ্যই আবেদন অকার্যকর করা হবে।

#############

পেকুয়ায় যুবককে আটকিয়ে টাকা নিল বখাটে

পেকুয়া প্রতিনিধি :::

পেকুয়ায় কুতুবদিয়ার এক যুবককে আটকিয়ে টাকা নিল একদল বখাটে। ওই ঘটনার জের ধরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ছড়াপাড়া এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ইউপি সদস্য জিয়াবুল করিম বিয়য়টি নিয়ে বৈঠক করে। গত সোমবার রাত ১টার দিকে সদর ইউনিয়নের পুর্বমেহেরনামা এলাকায়। স্থানীয়সুত্রে জানা গেছে কুতুবদিয়া উপজেলার ধুরুং ইউনিয়নের পুর্ব বাঁকখালী এলাকার এক যুবক ওইদিন রাতে চট্টগ্রাম শহর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। গভীর রাত হওয়ায় নৌ-পারাপারে বিঘœতা দেখা দেয়। এ সুবাধে ওই যুবক রাতে মেহেরনামা এলাকায় মকবুল আহমদের বাড়িতে রাত্রি যাপন করতে যায়। মকবুল আহমদ গত কয়েক বছর আগে কুতুবদিয়া থেকে পেকুয়ায় চলে আসে। মকবুল আহমদ ওই যুবকের আতœীয়। যুবক ছড়াপাড়া বাজার থেকে যাওয়ার পথে তার পিছু নেয় একদল বখাটে। তারা মকবুল আহমদের বাড়ির কাছাকাছি জায়গায় ওতপেতে থাকে। মকবুল আহমদের স্ত্রী শওকত আরা বেগম জানায় কুতুবদিয়া ছেলেটি আমাদের আতœীয়। রোগি নিয়ে চট্টগ্রামে যায়। বাড়ি ফিরছিলেন। রাত হওয়ায় আমার বাড়িতে থেকে যায়। রাত ২টার দিকে ছড়াপাড়া এলাকার মৃত.নুরুচ্ছফার ছেলে মোর্শেদ, শামসুল আলমের ছেলে নাজেম উদ্দিন, আলীঘোনার পেচুমিয়ার ছেলে হোসেন, নুরুল কবিরের ছেলে নুরুল আবছার, জামাল হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলামসহ ৬-৭জন বখাটে আমার বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় তারা ওই যুবক ও আমার মেয়েকে টানা হেছড়া করে বাড়ি থেকে বের করে। তারা নারী কেলেংকারীতে জড়ানোর অপবাধে ওই ছেলেকে আটকিয়ে ১০হাজার টাকা দাবি করে। ৫হাজার টাকা দিয়ে কোন রকম দায় মুক্তি হই। আমার মেয়েকে টানা হেছড়া ও শ্লীনতাহানির চেষ্টা করে। তারা বারবার আমার বাড়িতে এভাবে হানা দেয়। আমার মেয়েটি তাদের কারনে একাধিক বেইজ্জতি হয়েছে। আমার পরিবার অসহায়। স্বামী অসুস্থ। মানুষের বাড়িতে জিইয়ের কাজ করে সংসার চালায়। কুতুবদিয়া থেকে এসে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। গরীব বলে তারা বারবার অপবাধ দিয়ে আমাকে ব্যভিচার চালাচ্ছে। মোর্শেদ জানায় এ পরিবারে এসব নোংরামি চলছে। আমরা কয়েকবার বাধা দিয়েছি। দু’হাজার টাকা নিয়েছি। ইউপি সদস্য জিয়াবুল করিম জানায় মকবুল আহমদের স্ত্রী মোর্শেদসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে আমার এখানে এসেছে। বিষয়টি মিটমাট করার চেষ্টা করছি। স্থানীয়রা জানায় তারা মুলত বখাটে। এভাবে মানুষকে আটকিয়ে টাকা আদায় করেছে অহরহ।

 

পাঠকের মতামত: