ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

কক্সবাজার-ঢাকা রুটে ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা

চকরিয়া নিউজ ডেস্ক :

গত ১১ নভেম্বর দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে কক্সবাজারের সঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশের রেল সংযোগ চালু হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ১ ডিসেম্বর থেকে চলবে ঢাকা-কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে দুই জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী কোচের রেক দিয়েই ঢাকা-কক্সবাজার রুটের বিরতিহীন ট্রেন চালাবে রেলওয়ে।

এছাড়া আরও জানানো হয়, প্রথম সপ্তাহেই চট্টগ্রাম থেকে আরও একটি ট্রেন এবং দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা চট্টগ্রাম-দোহাজারী লোকাল ট্রেন সার্ভিস পুনরায় চালু করা হবে।

এবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেলপথের ভাড়া তালিকা ও সময়সূচি চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে (পূর্বাঞ্চল) মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম।

তিনি  বলেন, কক্সবাজারের রেলপথের ভাড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে।

তবে রেলের একটি সূত্র চূড়ান্ত ভাড়ার তালিকা  দিয়েছেন।

সে অনুযায়ী, ঢাকা থেকে শোভন চেয়ারের টিকিট ৫০০ টাকা, এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) ৯৬১ টাকা, প্রথম শ্রেণীর চেয়ার ৭৭১ টাকা, প্রথম শ্রেণীর বার্থ/সিট ১১৫০ টাকা এবং এসি বার্থের টিকিট ১ হাজার ৭২৫ টাকা।

আর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেনে শোভন চেয়ারের টিকিট ২০৫ টাকা, প্রথম শ্রেণীর চেয়ার/সিট ৩১১ টাকা, প্রথম শ্রেণীর বার্থ ও এসি সিট ৪৬৬ টাকা, এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) ৩৮৬ টাকা এবং এসি বার্থ টিকিট ৬৯৬ টাকা।

ঢাকা-কক্সবাজার রুটের প্রথম বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হবে ঢাকা থেকে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের প্রথম ট্রেনটি চলাচল করবে কক্সবাজার থেকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের চট্টলা এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনের অবমুক্ত রেক দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের আন্তঃনগরগুলো চালানো হবে। ঢাকা রুটের ট্রেনটি চালানো হবে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানিকৃত নতুন কোচ দিয়ে।

রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের তথ্য মতে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে আরও দুই জোড়া কমিউটার ট্রেন সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ না হওয়ায় আপাতত ঢাকা থেকে প্রতিদিন এক জোড়া ও চট্টগ্রাম থেকে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে। রেক বা কোচ ও ইঞ্জিন পাওয়া সাপেক্ষে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে আরো একজোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালানো হবে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।

ঢাকার ট্রেনটি (৮১৪) রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছবে। ফিরতি পথে বেলা ১টায় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছবে। সময় লাগবে ৮ ঘণ্টা ১০ মিনিট। ট্রেনটি শুধু চট্টগ্রাম স্টেশনে ৩০ মিনিটের যাত্রাবিরতি দেবে।

অন্যদিকে ৮২৪ নম্বর ট্রেন কক্সবাজার থেকে সকাল ৭টায় ছেড়ে বেলা ১০টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছবে। সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা ৫ মিনিট। অন্য ট্রেনটি (৮২১) সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে ১০টা ২০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছবে। সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট।

ঢাকা-কক্সবাজার আন্তঃনগরে কোচ থাকবে ১৮টি। আসন থাকবে দিনের বেলায় ৮২৪টি, রাতে ৭৭৯টি। অন্তত ২০ শতাংশ আসন চট্টগ্রামের যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের আন্তঃনগর ট্রেনটি ষোলশহর, জালানীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজরা ও রামু স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে কক্সবাজারে যাত্রী পরিবহন করবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ট্রেনটির রেকে মোট কোচ সংখ্যা হবে ১২টি। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রীরা সকালে গিয়ে রাতেই চট্টগ্রামে ফিরতে পারবেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ে (পূর্বাঞ্চল) চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ১ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজারে ট্রেন চালাতে আমরা প্রস্তুত। প্রথম ট্রেনটি চলাচল শুরু করবে ঢাকা থেকে। দ্বিতীয় বাণিজ্যিক ট্রেনটি চলবে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম।

কক্সবাজারকে ঘিরে অন্তত ছয় জোড়া ট্রেনের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হলেও শুরুতে দুই কিংবা তিন জোড়া ট্রেন চালানো হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি ট্রেনগুলো চালানো হবে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে (পূর্বাঞ্চল) চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. শহিদুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, ইঞ্জিন ও জনবল পাওয়া সাপেক্ষে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর কিংবা ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের আরো কয়েকটি ট্রেনের গন্তব্য স্টেশন কক্সবাজার পর্যন্ত বাড়ানো হবে।

পাঠকের মতামত: