ঢাকা,বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

চকরিয়ায় এসআর খুনে দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিদিয়েছে আশিক বিল্লাহ

এম জিয়াবুল হক ,  চকরিয়া
কক্সবাজারের চকরিয়ায় হেল্থ কেয়ার নামের ওষুধ কোম্পানির এমআর এরশাদ আলী খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিয়েছেন মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া একমাত্র আসামি আশিক বিল্লাহ সুমন। গতকাল সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকরিয়া থানার এসআই কামরুল ইসলাম গ্রেফতারকৃত আসামি আশিক বিল্লাহকে আদালতে হাজির করেন। এদিন বিকাল চারটার দিকে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. জাহিদ হোসাইন তার খাসকামরায় আসামি আশিক বিল্লাহ’র দেওয়া ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর আদালত জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আসামি আশিক বিল্লাহকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, হেল্থ কেয়ার নামের ওষুধ কোম্পানির ওষুধ এক ফার্মেসীর জন্য অর্ডার কেটে বাইরের অন্য ফার্মেসীতে বিক্রি করে দেন এমআর আশিক বিল্লাহ সুমন। বিষয়টি ওষুধ কোম্পানির বাণিজ্যক নীতিমালা ভঙ্গ হওয়ায় কোম্পানির উর্ধবতন মহলকে জানাবেন বলে আশিক বিল্লাহকে হুমকি দেন একই কোম্পানির এসআর এরশাদ আলী। তাতে কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে এরশাদ আলীকে হত্যার পরিকল্পনা নেন ঘাতক আশিক বিল্লাহ। এরই জেরধরে শনিবার ১৫ জুলাই বিকালে একটি চুরি কিনে প্যান্টের পকেটে রাখে আশিক বিল্লাহ। পরে কৌশলে কাজের কথা বলে কক্সবাজার থেকে এরশাদকে চকরিয়া ঢেকে আনেন আশিক বিল্লাহ।

তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে এরশাদ আলী চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতাল মাঠে পৌছালে আশিক মোটর সাইকেলে উঠিয়ে এরশাদকে নিয়ে হাসপাতাল মাঠের পশ্চিমে মসজিদের পাশে যান। সেখানে নেমে দুইজন কোম্পানির ওষুধ বাইরে বিক্রি নিয়ে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন। এরই একপর্যায়ে প্যান্টের পকেটে থাকা ছুরি বের করে অর্তকিত এরশাদ আলীর গলায় চালিয়ে দেন ঘাতক আশিক।

ওসি জাবেদ মাহমুদ আরও বলেন, গলায় ছুরি লাগার পর প্রাণে বাঁচতে এরশাদ আলী ঘটনাস্থলে প্রায় ১৫ ফুট দুরে লাফিয়ে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে। এসময় ঘাতক আশিক পুনরায় সেখানে গিয়ে হাঁটু দিয়ে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দ্বিতীয় দফায় গলায় চুরি চালিয়ে এরশাদ আলীর মৃত্যু নিশ্চিত করে। এ ঘটনার পর তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে পুলিশ ঘাতক আশিক বিল্লাহকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। গ্রেফতারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে একাই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করে আশিক বিল্লাহ।

নিহত এরশাদ আলী (৩২) কুষ্টিয়া জেলার মীরপুর থানা এলাকার সুতাইল গ্রামের শাফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি ওষুধ কোম্পানি হেল্থ কেয়ারের এসআর হিসেবে কক্সবাজারে কর্মরত ছিলেন। অপরদিকে গ্রেফতারকৃত আশিক বিল্লাহ সুমন (৩৪)
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ছনধরা এলাকার আবদুল জলিলের ছেলে। সে একই ওষুধ কোম্পানির চকরিয়া ডিপোর এমআর হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
চকরিয়া থানার অপারেশন অফিসার এসআই রাজীব চন্দ্র সরকার বলেন, ওষুধ কোম্পানির এসআর এরশাদ আলী খুনের ঘটনায় তার চাচা মিয়া রবিউল ইসলাম বাদি হয়ে গ্রেফতারকৃত আশিক বিল্লাহকে একমাত্র আসামি করে রোববার রাতে চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করেছেন। মামলাটি তদন্তের জন্য এসআই কামরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আশিক বিল্লাহ সুমনকে গতকাল সোমবার আদালতে হাজির করা হলে সে আদালতের কাছে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকরিয়া থানার এসআই কামরুল ইসলাম বলেন, জবানবন্দি গ্রহন শেষে বিজ্ঞ আদালত আসামি আশিক বিল্লাহকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে প্রেরণ করেছেন।
তিনি বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ গতকাল পরিবার সদস্যদের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: