ঢাকা,রোববার, ১৯ মে ২০২৪

কক্সবাজারে কলেজ ছাত্র রিদুয়ান হত্যাকাণ্ড: আত্মগোপনে পুরো কিশোর গ্যাং

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ::  কক্সবাজার শহরের সিটি কলেজ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিতে কলেজছাত্র রিদুয়ান সিদ্দিকীকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়েছিল একটি কিশোর গ্রুপ। পরিকল্পনা অনুসারে গত সোমবার রাতে রিদুয়ানকে হত্যা করে সানি গ্যাংয়ের লোকজন। সানি গ্রুপে রয়েছে ২০ জনের অধিক কিশোর। এরমধ্যে রয়েছে কয়েকজন কলেজ ছাত্রও। রিদুয়ান হত্যাকাণ্ডে সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য বলে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ছায়া তদন্তের উঠে এসেছে। চিহ্নিত হয়েছে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বেশ কয়েকজনও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের সাব মেরিন ক্যাবল বিজিবি ক্যাম্প ও গরু হালদা এলাকার নিয়ন্ত্রণ কিশোর গ্যাং লিডার সানি, আকিব, তামজিদ আহাত ও ছোটন গ্রুপের। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছিল তারা।

রিদুয়ানের চাচাত ভাই শাহজাহান জানান, রিদুয়ান চট্টগ্রাম মহসীন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। এক সপ্তাহ আগে সে এলাকায় আসে ছুটিতে। রিদুয়ান কক্সবাজার শহরের সিটি কলেজ রোডস্থ সাহিত্যিকা পল্লী এলাকার আবু বক্কুর ছিদ্দিকীর ছেলে।

গত সোমবার সকালে একটি মোবাইলকে কেন্দ্র করে রিদুয়ানের সাথে সানি গ্রুপের এক সদস্যের কথা কাটাকাটি হয়। সেটির প্রতিশোধ নেয়ার অজুহাতে সানি গ্রুপের সদস্যরা রিদুয়ানকে টার্গেট করে রাখে। সন্ধ্যার পর রিদুয়ানকে থামিয়ে পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়ার জন্য বলে সানির নেতৃত্বে আসা তার গ্রুপের একাধিক সদস্য। ক্ষমা না চাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রিদুয়ানকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় তারা। পরে পথচারীরা উদ্ধার করে সোমবার রাত আটটার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানে মারা যান কলেজছাত্র রিদুয়ান সিদ্দিকী।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি তদন্ত মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, দুইটি গ্রুপের আধিপত্য নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। আমাদের প্রাথমিক তদন্তেও তা উঠে এসেছে। ওসি তদন্ত বলেন, গত বুধবার এজাহার জমা দিয়েছেন রিদুয়ানের মা ফরমুজা বেগম। এজাহার দায়ের পর মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এতে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা ছাড়াও অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৫ থেকে ৬ জনকে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত একাধিক আসামীকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তাদের বিষয়ে মাঠে কাজ করছে পুলিশের একাধিক টিম।

রিদুয়ান হত্যার পর সানি গ্রুপের সদস্যরা এখন এলাকা ছাড়া। সবাই আত্মগোপনে চলে যায়। এরমধ্যে রয়েছে শহিদুল ইসলাম সানি, হেরাম আল ছোটন, মো. তানজিদ, গরুর হালদা এলাকার কামাল হোসেন, মো. আহাদ, মো. আরমান, বিজিবি ক্যাম্প এলাকার মো. সোহাদ, আকিবুর রহমান আকিব, সমিতি বাজার এলাকার মিনহাজুল ইসলাম জুমা, গরুর হালদা এলাকার সাকিব, মো. রাহাত, মো. ইব্রাহিম, মো. সাদ্দাম ও মো. সায়মন। বর্তমানে এরা সবাই রিদুয়ান হত্যা মামলার আসামি।

কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের হাতে খুন হয়েছে রিদুয়ান। এই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। যেহেতু আসামিদের চিহ্নিত করা গেছে; তাদের গ্রেপ্তারে আমরা কাজ করছি।

পাঠকের মতামত: