ঢাকা,শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

ফলাফল কারচুপি অভিযোগে মামলা

ঢেমুশিয়া ইউপি নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার প্রার্থীদের ভোট আদালতে তলব

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোট গণনায় জালিয়তির মাধ্যমে ফলাফল কারচুপির অভিযোগ এবং ভোট পুনঃগননার দাবী জানিয়ে গঠিত নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ও সিনিয়র সহকারি জজ কক্সবাজার সদর আদালতে একটি মামলা করেন (নং ১২/২০২২) ঢেমুশিয়া ইউপির ৪৫৬ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আরজ খাতুন। আদালত গত ২০ জানুয়ারী শুনানীতে বাদির অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযোগমতে তিনটি ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার প্রার্থীদের ভোট পুণঃগণনার নির্দেশনা দেন।

আদেশে আদালত আগামী ১৫মার্চ’২২ এর মধ্যে ব্যালেট পেপারের সীলযুক্ত গানিব্যাগ (সীলগালা) তলব করেন। তবে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা ব্যালট পরিবর্তনসহ বিভিন্নধরণের চলচাতুরীর আশ্রয় নিতে পারেন এইধরণের আশঙ্কা থেকে বাদি আরজ খাতুন পুণরায় আদালতে আবেদন করেন যাকে দ্রুত সময়ে গানিব্যাগ তলব করা হোক। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৫ জানুয়ারি আদালত বাদির নতুন আবেদনটি আমলে নিয়ে পূর্বের আদেশ বাতিল করেন। এরপরিবর্তে আগামীকাল সোমবার (৩১জানুয়ারী) তারিখের মধ্যে ব্যালেট পেপারের সীলযুক্ত গানিব্যাগ আদালতে তলবের আদেশ দেন।

বাদিপক্ষের কৌশলী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবি অ্যাডভোকেট আ.জ.ম মঈন উদ্দিন আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী মেম্বার প্রার্থী আরজ খাতুন মামলার এজাহারে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), কক্সবাজার জেলা ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার, রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৩জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং নির্বাচনে বিজয়ী দেখানো ইউপি সদস্যা নুরুন্নাহার বেগম মুন্নীসহ ১২জনকে বিবাদি করেন।

মামলার আর্জি সূত্রে জানায়, ২০২১ সালের ২৮নভেম্বর চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্টিত হয়। নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ হয়ে ইউনিয়নের ৪৫৬ নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রে ভোট গণনাকালে বিপুল ভোটে বিজয়ী হলেও তিনবারের ইউপি সদস্য আরজ খাতুন (কলম প্রতীক) কে পরাজিত দেখিয়ে অপর প্রার্থী নুরুন্নাহার বেগম (ক্যামরা প্রতীক) বিজয়ী ঘোষনা করা হয়।

ভোট গণনাকালে কলম প্রতীকের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে এবং ভোট গননাকালে থাকতে দেয়া হয়নি। এনিয়ে নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এরপরও গত ১২ডিসেম্বর নির্বাচনী গেজেট প্রকাশ হলে প্রার্থী সংক্ষুদ্ধ হয়ে উল্লেখিত ৩টি ওয়ার্ডের কেন্দ্রের ভোট পুনঃগণনার দাবীতে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ২০ জানুয়ারি এ মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ভোট পূণঃগণনার নির্দেশনা দেন।

প্রথম আদেশে আগামী ১৫মার্চ’২২ এর মধ্যে ব্যালেট পেপারের সীলযুক্ত গানিব্যাগ তলব করেন। উক্ত সময়ের মধ্যে ব্যালট পরিবর্তন সহ নানাবিধ আশঙ্খা প্রকাশ করায় বাদী আরো দ্রুত সময়ে গানিব্যাগ তলব করার আবেদন করলে ২৫ জানুয়ারি আদালত উক্ত আবেদনটি আমলে নিয়ে পূর্বের আদেশ বাতিল করে ৩১জানুয়ারী মধ্যে গানিব্যাগ তলবের আদেশ দেন।

এব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা (সদ্য বদলী) বেনজির আহমদ বলেন, আদালতের দুইটি আদেশের বিষয়ে অবগত হয়েছি। আমি যেহেতু বদলী হয়ে অন্যষ্টেশনে চলে এসেছি, তাই আদালতের আদেশের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলে দেয়া হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, আদালতের পূর্বের আদেশটি হাতে পেয়েছি। পরবর্তী আদেশটি এখনো হাতে পাইনি। বৃহস্পতিবার অফিস সময়ের পর আসায় আদেশটি গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তবে ৩০জানুয়ারী সকালে আদেশটি হাতে পেলে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: