ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় টিআইবি সনাকের মানববন্ধনে বক্তাদের দাবি

প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে ৩১ অক্টোবর ২০২১ থেকে শুরু হতে যাওয়া কপ-২৬/জলবায়ু সম্মেলনকে সামনে রেখে কয়লাভিত্তিক জ¦ালানি ব্যবহার বন্ধ ও নবায়নযোগ্য জ¦ালানি প্রসার ও প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাক, টিআইবি, চকরিয়া। রবিবার ৩১ অক্টোবর সকাল ১১টা থেকে বারোটা উপজেলার চিরিঙ্গা নিউ মার্কেটের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এই দাবি তুলে ধরেন।

সনাক-টিআইবি, চকরিয়া কর্তৃক আয়োজিত এই মানববন্ধনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), চকরিয়া উপজেলা শাখা তাদের নিজস্ব ব্যানারে অংশগ্রহণ করে।

সনাক-টিআইবি, চকরিয়া’র ইয়েস সদস্য মো: ইসফাতুল হোসাইন এর সঞ্চালনায় মানববন্ধন পরবর্তী সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় সনাক সভাপতি বুলবুল জান্নাত শাহিন বলেন, বৈশি^ক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য ১৯৬টি দেশ ছয় বছর আগে প্যারিস চুক্তিতে সম্মত হলেও চুক্তি বাস্তবায়নের পথরেখা চূড়ান্ত করতে পারেনি। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঠেকানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা কার্বন নিঃসরণকারী জীবাশ্ম জ্বালানি বিশেষ করে কয়লার ব্যবহার ও রপ্তানি বেড়েছে এবং কয়লাভিত্তিক জ¦ালানি প্রকল্পে অর্থায়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নবায়নযোগ্য জ¦ালানি প্রসারে প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রতিশ্রুত উন্নয়ন সহায়তার ‘অতিরিক্ত’ এবং ‘নতুন’ প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিল হিসাবে প্রদানে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য মুখ্যত দায়ী শিল্পোন্নত দেশসমূহ ব্যর্থ হয়েছে। সার্বিকভাবে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রদত্ত অঙ্গীকার প্রতিপালনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও শুদ্ধাচার নিশ্চিতে ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। কয়লার ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করা, ২০৫০ সালের মধ্যে ‘নেট-জিরো’ গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়ন প্রদান, বর্ধিত স্বচ্ছতা কাঠামো ও প্যারিস রুলবুক চূড়ান্ত করাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমঝোতায় এবছর কপ-২৬ সম্মেলনকে শেষ সুযোগ হিসাবে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঠেকাতে দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানি আহরণ ও ব্যবহার কমানোর কথা থাকলেও বাস্তব চিত্র উল্টো।

শিল্পোন্নত দেশগুলো ২০৩০ সাল নাগাদ জীবাশ্ম জ্বালানি, বিশেষ করে কয়লা উৎপাদন ও ব্যবহার ১১০ ভাগ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে কয়লার উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ২৪০ ভাগ, তেল ৫৭ ভাগ আর গ্যাস ৭১ ভাগ। জীবাশ্ম খাতে জি-২০ দেশগুলো বাড়তি ৩০০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করার পরিকল্পনাও করছে। জাপান, চীন ও কোরিয়াসহ বিশে^র উন্নত দেশসমূহ বাংলাদেশে ১৯টি কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক প্রকল্পে অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলায় বন ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হবে এবং ১ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষের জীবন ও জীবিকা আরও হুমকির মুখে পড়বে।

মানববন্ধনে অন্যান্যদেও মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযুদ্ধা কার্য পরিচালনা কমিটির আহবায়ক হাজী মো: বশিরুল আলম, সচেতন নাগরিক কমিটি, সনাক-টিআইবি, চকরিয়ার এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মো: আবু বকর, সনাক-টিআইবির সদস্য মহব্বত ছৌধুরী সহ সনাক ও বাপা’র স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।#

পাঠকের মতামত: