ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

রামুর চাকমারকুলে টিসিবি’র পন্য বিক্রয়ে অনিয়ম

রামু প্রতিনিধি ::
চলমান করোনা পরিস্থিতির একদিকে আর্থিক দৈন্যতা, অপরদিকে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারণে মানুষের করুণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এরই মধ্যে সাধারণ মানুষের কাছে কমমূল্যে পন্য ক্রয়ের একমাত্র ভরসা টিসিবি’র বিক্রয় কেন্দ্র। কিন্তু রামু উপজেলার চাকমারকুলে টিসিবি’র পন্য বিক্রয় কেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়মের কারণে সাধারণ ক্রেতারা ন্যায্য মূল্যে পণ্য ক্রয়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমনকি অনিয়মের প্রতিবাদ করায় উল্টো নাজেহাল ও মারধরের শিকার হয়েছেন অনেক ক্রেতা।
জানা গেছে, রামুর কলঘর বাজারে দীর্ঘদিন টিসিবি’র পণ্যে ডিলার হিসেবে পণ্য বিক্রয় করে আসছেন ব্যবসায়ি আমিন উল্লাহ। কিন্তু বাজারের লোকজনের সমাগম বেশী থাকায় পণ্য বিক্রিয় অনিয়ম প্রায়সময় জনসমক্ষে ধরা পড়ে। এ কারণে কৌশলে আমিন উল্লাহ পণ্য বিক্রয় কেন্দ্রটি কয়েকমাস আগে বাজার থেকে সরিয়ে চাকমারকুল মাদ্রাসা গেইট এলাকায় নিয়ে যান। ফলে দূরবর্তী হওয়ায় অনেকে সেখানে গিয়ে পন্য সরবরাহ করতে গিয়ে দূর্ভোগের সম্মুখিন হন।
জানা গেছে- চাকমারকুল ইউনিয়নের জন্য বরাদ্ধকৃত টিসিবি’র অধিকাংশ পন্য চলে যায় কালোবাজারে। অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি ন্যায্যমূল্যের এসব পন্য নিয়ম লংঘন করে অতিরিক্ত ক্রয় করেন। ফলে এসব পণ্যের দাবিদার হত-দরিদ্র লোকজন ক্রয়ের সুযোগ বঞ্চিত হচ্ছে।
গত বুধবার সরেজমিন গেলে অনিয়মের চিত্র চোখে পড়ে। লাইনে দাঁড়ানো অনেককে চলে যেতে বলেন ডিলার আমিন উল্লাহ ও তার সহযোগিরা। এসময় এ অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নাজেহাল হন স্থানীয় বাসিন্দা ওসমান গনি। তিনি দক্ষিণ চাকমারকুল আলী হোছন সিকদার পাড়ার মৃত পিয়ার মোহাম্মদের ছেলে। তিনি জানান-সকাল থেকে লোকজন পন্য ক্রয় করার জন্য দোকানের সামনে যান। কিন্তু ডিলার তাদের পন্য বিক্রি না করে উল্টো হাকাবকা শুরু করেন। এসময় তিনি প্রতিবাদ জানালে তাকে মারধর করে ডিলার আমিন উল্লাহর সহযোগি জসিম উদ্দিন, এবাদুল্লাহ ও এরশাদ উল্লাহ। এসময় তারা পন্য কিনতে আসা মজিবুর রহমান, জসিম উদ্দিন ও রুবেল নামের আরো ৩জনকে মারধর করেন।
এ ঘটনায় রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলেও জানান ডিলার কর্তৃক নাজেহাল হওয়া ওসমান গনি। তিনি এ ডিলালের অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান- সীমান্তবর্তী হওয়ায় এ ইউনিয়নের পরিবর্তে পাশর্^বর্তী সদর উপজেলার লোকজনও এখানে থেকে পন্য কিনে নিয়ে যান। এমনকি অনেক ব্যবসায়িকে পাইকারিভাবেও পন্য বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় ইউপি সদস্য ছৈয়দ নুর ডিলার আমিন উল্লাহর চাচাতো ভাই। একারণে ইউপি সদস্য ছৈয়দ নুর নিজের ওয়ার্ডের লোকজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে পন্য বিক্রি করেন। এর উদ্দেশ্য আসন্ন নির্বাচনে ছৈয়দ নুর যেন এলাকায় জনপ্রিয়তা অর্জন করে। কিন্তু এ অনিয়মের কারণে অন্যান্য ওয়ার্ডের লোকজন এখানে টিসিবি’র পন্য ক্রয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: