প্রকাশ:
২০২৪-০৪-০৮ ১২:৪৫:৪৯
আপডেট:২০২৪-০৪-০৮ ১৩:০৪:২৬
অফিসারসহ তিন কর্মচারীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দা হতদরিদ্র ১৯০ জন প্রান্তুিক জেলে জনগোষ্ঠীকে সরকারিভাবে জেলে কার্ডের নিবন্ধনভুক্ত করার প্রলোভন দেখিয়ে ৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা আত্মসাত করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জেলেদের পক্ষে জামাল উদ্দিন (৫৮) ও বশির আহমদ (৬০) নামের দুইজন জেলে বাদি হয়ে ইতোমধ্যে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে উপজেলা মৎস্য বিভাগের মেরিন ফিশারিজ অফিসারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পৃর্থক
দুইটি মামলা রুজু করেছেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে, চকরিয়া উপজেলা মৎস্য বিভাগের মেরিন ফিশারিজ অফিসার এজেএম মোছাদ্দেকুল ইসলাম, মৎস্য বিভাগের দুই অফিস সহকারী ইকবাল ও জাহাঙ্গীর। তাদের মধ্যে অফিস সহকারী ইকবাল চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট এলাকার মো: ফারুক মিস্ত্রির ছেলে ও জাহাঙ্গীর উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের এনাম উল্লাহর ছেলে। অপরদিকে বাদি জামাল উদ্দিন চকরিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড পালাকাটা এলাকার মৃত আবুল কাশেম এর ছেলে এবং অপর বাদি বশির আহমদ উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমান গনির ছেলে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) আদালতে মামলা রুজু করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদিপক্ষের কৌশলী চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের আইনজীবী এডভোকেট মিজবাহ উদ্দীন। তিনি বলেন, আদালতে দুইজনের ফৌজদারি অভিযোগ আমল নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করতে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) রাকিব উর রাজাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদি ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবি জেলে সমিতি চকরিয়া উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, বিগত সময়ে চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জেলেদের নিবন্ধনভুক্ত করার কার্যক্রম শুরু হলে আমি সমিতির সদস্য এবং জেলে কাজে সম্পৃক্ত মোটর১৫৩ জন পান্তিক জেলেকে সরকারিভাবে নিবন্ধনভুক্ত করত: জেলে কার্ড দিতে চকরিয়া উপজেলা মৎস্য বিভাগে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে সুপারিশ করি। এই অবস্থায় অভিযুক্তরা গোপনে আমাকে জানায়, সবাইকে নিবন্ধনভুক্ত করে জেলে কার্ড দেওয়া হবে। সেইজন্য জনপ্রতি ২ হাজার টাকা করে দিতে হবে।
বাদি জামাল উদ্দিন এজাহারে বলেন, অভিযুক্তদের সাড়া পেয়ে আমি প্রতিজন থেকে ২ হাজার টাকা করে তুলে ২০২২ সালের ৮ জুন তারিখ সকাল আনুমানিক দশটার দিকে চকরিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে ১৫৩ জনের বিপরীতে নগদ ৩ লাখ ২৬ হাজার ঘুষ প্রদান করি। এরপর অনেকদিন চলে যায়। কিন্তু জেলে কার্ড হয়না। এই অবস্থায় সর্বশেষ চলতি ২০২৪ সালের ৪ মার্চ তারিখে উপজেলা মৎস্য অফিসে গিয়ে জেলে কার্ড এতদিন কেন হচ্ছে না জানতে চাই আসামিদের কাছে। উত্তরে তাঁরা আমাকে বলে, আর কিছুদিন সময় লাগবে। অপেক্ষা করতে হবে। এই অবস্থায় আমি কার্ড দিতে হবে না, আমার জমা দেওয়া ৩ লাখ ২৬ হাজার টাকা ফেরত চাই। এরই একপর্যায়ে অভিযুক্তরা আমার কাছ থেকে ঘুষ বাবত নেওয়া ৩ লাখ ২৬ টাকার বিষয়ে অস্বীকার করে। এতে আমি নিরুপায় হয়ে গত ১৮ মার্চ আদালতে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছি। এখন আমি হতদরিদ্র জেলেদের জমা দেওয়া টাকা ফেরত পেতে বিজ্ঞ আদালত ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
একইধরনের প্রতারণার শিকার হয়ে একই আদালতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে একইদিন আরও একটি মামলা রুজু করেছেন ভুক্তভোগী বশির আহমদ। তিনি বলেন, আমার এলাকার ৩৭ জন জেলেকে সরকারিভাবে নিবন্ধনভুক্ত করে জেলে কার্ড দেয়ার কথায় প্রতিজন থেকে ৩ হাজার টাকা করে মোট ১ লাখ ১১ হাজার টাকা নিয়েছেন অভিযুক্তরা৷ কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও তাঁরা জেলে কার্ড দিচ্ছে না। কেন গড়িমসি করা হচ্ছে চকরিয়া উপজেলা মৎস্য অফিসে গিয়ে জানতে চাইলে উল্টো অভিযুক্তরা আমাকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। এখন তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করায় আমি এবং অপর মামলার বাদি জামাল উদ্দিনকে মানহানি মামলা করে জেলের ভাত খাওয়াবে বলেও শাসাচ্ছেন। আমরা দুর্নীতিবাজ এই কর্মকর্তা কর্মচারীদের কবল থেকে আত্মসাতকৃত গরীবের টাকা উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার দুপুরে চকরিয়া উপজেলা পরিষদে গিয়ে অভিযুক্ত মেরিন ফিশারিজ অফিসার এজেএম মোছাদ্দেকুল ইসলাম এর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তাঁর অফিসকক্ষ তালাবদ্ধ থাকায় তাঁকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে কল দেওয়া হলেও সংযোগ লাইন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে নিজ কার্যালয়ের তিনজন কর্মকর্তা কর্মচারীর দুর্নীতি ও মামলার বিষয়ে কথা বলেছেন চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারহান তানজিম। তিনি বলেন, বাদি জামাল উদ্দিন ও বশির আহমদ মামলা করার আগে উল্লেখিত ঘটনা নিয়ে আমার কাছে এসেছিলেন। ওইসময় আমি বাদি দুইজনের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত তিনজনের কাছে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাই। উত্তরে আমার তিন কর্মকর্তা কর্মচারী জেলে কার্ড দেয়ার বিনিময়ে টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আবারও দুই বাদি কীভাবে কখন অভিযুক্তদের হাতে টাকা দিয়েছে, তার সঠিক প্রমাণ দিতে পারেননি।
তিনি বলেন, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে এখন আদালতে মামলা হয়েছে। তদন্তের জন্য পুলিশের এএসপিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দেখা যাক তদন্তে সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
- চকরিয়ায় আলোচিত ডাবল মার্ডার মামলার দুই পলাতক আসামি গ্রেফতার
- চকরিয়ায় মাষ্টার মাইন্ড অটো ব্রিকস ফ্যাক্টরিতে ২ নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
- ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে বন্যপ্রাণী শিকার করতে গিয়ে বন্দুক রেখে পালালো ২ জন
- প্রশাসনকে সকল দলের প্রতি বৈষম্যহীন আচরণ করতে হবে
- চকরিয়ার এক ব্যক্তিকে বাঁশখালীতে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া গেছে
- চকরিয়ায় বনের জমিতে অবৈধ গরুর হাট, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি
- মানিকপুর বেগম আয়েশা হক উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেন ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ার ঢেমুশিয়া জলমহালে লবণ পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ
- খুটাখালীতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান: জরিমানা, মেশিন আর পাইপ ধ্বংস
- কক্সবাজার প্রেসক্লাব থেকে পদত্যাগ করলেন রয়টার্সের সাংবাদিক মুহম্মদ নূরুল ইসলাম
- চকরিয়ায় হারবাংয়ে কৃষিজমি কেটে সাবাড়, নিরব প্রশাসন
- চকরিয়ার ঢেমুশিয়া জলমহালে লবণ পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ
- কক্সবাজার প্রেসক্লাব থেকে পদত্যাগ করলেন রয়টার্সের সাংবাদিক মুহম্মদ নূরুল ইসলাম
- চকরিয়ায় বনের জমিতে অবৈধ গরুর হাট, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি
- চকরিয়ায় কলেজ ছাত্র জিহাদ হত্যা মামলার আসামীকে পিটিয়ে হত্যা, আহত ২
- কক্সবাজার পৌর, সদর ও রামু উপজেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত, নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন
- খুটাখালীতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান: জরিমানা, মেশিন আর পাইপ ধ্বংস
- চকরিয়ায় হারবাংয়ে কৃষিজমি কেটে সাবাড়, নিরব প্রশাসন
- মানিকপুর বেগম আয়েশা হক উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেন ইউএনও আতিকুর রহমান
- প্রশাসনকে সকল দলের প্রতি বৈষম্যহীন আচরণ করতে হবে
- চকরিয়ার এক ব্যক্তিকে বাঁশখালীতে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া গেছে
- ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে বন্যপ্রাণী শিকার করতে গিয়ে বন্দুক রেখে পালালো ২ জন
পাঠকের মতামত: