আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে গৃহকর্মীর কাজে আগ্রহ হারাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। ঢাকার বিশেষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নাম লেখানো এক-তৃতীয়াংশ বাংলাদেশিই সৌদি আরবে কাজ করতে চান না। সৌদি আরবের জাতীয় দৈনিক আল-মদিনার বরাত দিয়ে সৌদি গ্যাজেট সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেন, সৌদি আরবে কাজে যেতে ইচ্ছুক এমন গৃহকর্মীরা রিয়াদে যাওয়ার জন্য ঢাকায় বিশেষ প্রশিক্ষণ শেষে দ্বিতীয়বারের মতো চিন্তা-ভাবনা করেন।
এর পেছনে ভাষাগত, রীতিনীতি ও ঐতিহ্যগত ভিন্নতার মতো বেশ কিছু কারণ কাজ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, দেশ ত্যাগের আগে শ্রমিকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়ার মতো পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা নেই প্রাইভেট ট্রেইনিং সেন্টারগুলোর। নতুবা সৌদি আরবে বসবাসের নিয়মাবলি সম্পর্কে ওই প্রতিষ্ঠানগুলো জানে না।
‘তবে কীভাবে বেশি অর্থ উপার্জন করা যাবে সাধারণভাবে সেই প্রশিক্ষণ দেয় এসব প্রতিষ্ঠান’- বলেন তিনি।
তিনি বলেন, সৌদিগামী বাংলাদেশি জনশক্তিকে প্রশিক্ষণ দিতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল ঢাকার। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণের মেয়াদ ৩০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৯০ দিন করার পরিকল্পনা আছে।
‘নিবন্ধিত সব গৃহকর্মীর জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হবে। যারা এই কর্মসূচি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হবে তাদের কাজের জন্য সৌদি আরবে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে না।’
বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র বলছে, সৌদি আরবে পৌঁছানো প্রায় ৫০ শতাংশ বাংলাদেশি গৃহকর্মী কাজ করতে অস্বীকৃতি জানান। তারা দেশে ফিরে যেতে চান।
শ্রমিক নিয়োগকারী জেদ্দাহ’র একটি কোম্পানির মালিক আব্দুল্লাহ আল-ঘামদানি বলেন, সৌদিতে কাজের অস্বীকৃতি জানানো বাংলাদেশি গৃহকর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে এ বিষয়টি আরো জটিল আকার ধারণ করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী নিয়োগ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ হাজার গৃহকর্মীকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। সৌদিতে পৌঁছানোর পর গৃহকর্মীর কাজ করতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তাদের ফেরত পাঠানো হয়।
আব্দুল্লাহ আল-ঘামদানি বলেন, সৌদি জীবন-ধারা, ঐতিহ্য ও রীতি-নীতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম না হওয়ার কারণে গৃহকর্মীর কাজে অস্বীকৃতি জানানোর এ উচ্চ হার দেখা দিয়েছে।
তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, বাংলাদেশের শ্রম মন্ত্রণালয়ের জারি করা ৬০ শতাংশ শ্রমিক ভিসার সমস্যা শুরু হয় হয় নিয়োগ অফিসে। বাংলাদেশের নিয়োগকারী অফিসগুলো ভিসা ফি বৃদ্ধি ও অন্যায্য শর্তারোপের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত জটিল করে তুলছে।
পাঠকের মতামত: