ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

সেন্টমার্টিনের বেওয়ারিশ কুকুর সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে অন্যত্র

জসিম মাহমুদ, টেকনাফ ::  সেন্টমার্টিনে জুড়ে বেওয়ারিশ কুকুরের বিচরণ বেড়ে গেছে কিছুদিন ধরে। ফলে দ্বীপে ভ্রমণে আসা পর্যটকরাও থাকেন কুকুরের আতঙ্কে। অন্যদিকে সমুদ্র সৈকতে ডিম পাড়তে আসা মা কচ্ছপের ওপর প্রায় সময় ঝাঁপিয়ে পড়ে কুকুরের দল । এতে অনেক সময় মারা যাচ্ছে মা কচ্ছপ। এ নিয়ে দ্বীপে বেওয়ারিশ কুকুরদের নিয়ে আলোচনা চলছিল বেশ কয়েক দিন ধরে।

রোববার (২৭ মার্চ) বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুসারে সেন্টমার্টিন থেকে কুকুর পুনর্বাসনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী।
উপজেলা পরিষদ ও প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহতায় এ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন সদ্য যোগদানকারী ইউএনও কাইছার খসরু, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহিব উল্লাহ, এমওডিসি ডা. প্রণয় রুদ্র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম প্রমুখ।
এদিকে ২০১৪ সালে একটি বেসরকারি সংস্থার রিট আবেদনের প্রেক্ষাপটে কুকুর নিধন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এতে কুকুর নিধন কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে কুকুরকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার কাজ শুরু করে। সর্বশেষ আজ রোববার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেন্টমার্টিন থেকে কুকুর পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা হয়।

নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের (নেকম) সুপারভাইজার মাহে আলম সোহাগ জানান, সেন্টমার্টিনে ১০ হাজার মানুষের বসবাস, পাশপাশি প্রতিদিন কয়েক হাজার পর্যটকদের আনাগোনা। কিন্তু দ্বীপে বেওয়ারিশ কুকুর আছে ২ হাজারের বেশি। ফলে প্রতিনিয়ত পর্যটক ও সাধারণ মানুষ কুকুরের আতঙ্কে রয়েছেন। বিশেষ করে সৈকতে ডিম পাড়তে আসা মা কচ্ছপকে খেয়ে ফেলছে কুকুর।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহিব উল্লাহ জানান, ‘এতগুলো কুকুরকে একসঙ্গে কোনো একটি অঞ্চলে ছেড়ে দেওয়া হলে সেখানে অবশ্যই খাদ্যসংকট দেখা দেবে। ফলে কুকুরগুলোকে স্থানান্তরিত করা হবে যেখানে খাবারের সংকট তৈরি না হয় । অর্থাৎ যেখানে মানুষের বসবাস রয়েছে তেমন কোনো এলাকায় নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। প্রথম দিনে দ্বীপ থেকে ৩০টি খাঁচায় করে কুকুর নিয়ে ট্রলারে করে টেকনাফে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে।’
ইউএনও পারভেজ চৌধুরী চকরিয়া নিউজকে জানান, ‘সেন্টমাটিনে কুকুর বৃদ্ধি পাওয়ায় ভ্রমণে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ স্থানীয়দের কামড় দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া সৈকতে ডিম পাড়তে আসা কচ্ছপ গুলো হুমকির মুখে রয়েছে। ফলে সুন্দর উপায়ে দ্বীপ থেকে কুকুর পুনর্বাসন কাজ শুরু করা হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ‘আমাদের চেষ্টা থাকবে দ্বীপ থেকে অন্তত অর্ধেক কুকুর সরানো। কুকুর গুলো সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ ও বাহারছড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় পুনর্বাসন করা হবে। ’

পাঠকের মতামত: