পিবিডি : বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা একটি আত্মজীবনীমূলক বই প্রকাশ করেছেন যেখানে তিনি দাবি করছেন তাকে সরকারের চাপ এবং হুমকির মুখে দেশত্যাগ করতে হয়েছে। বিচারপতি সিনহার বই ‘এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেমোক্রেসি” মাত্রই প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি এখন আমাজনে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।
এই বইতে বিচারপতি সিনহা সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন কোন পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সঙ্গে তার বিরোধ তৈরি হয়েছিল, এবং কিভাবে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়, এবং তারপর কেন তিনি প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন।
তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের হুমকি ও ভীতি প্রদর্শনের মুখে তিনি দেশে ছেড়েছেন। বিচারপতি সিনহা লিখেছেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়টি যেন সরকারের পক্ষ যায়, সেজন্যে তার ওপর ‘সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে চাপ তৈরি করা হয়েছিল।’
মি. সিনহার পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছিল ২০১৭ সালে সংবিধানের ১৬শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত একটি মামলার আপীলের রায়কে কেন্দ্র করে। এ রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং সরকারের কাছ থেকে প্রচণ্ড চাপের মুখে বিচারপতি সিনহা দেশ ছেড়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।
এখানে বইটির মুখবন্ধের কিছু অংশের অনুবাদ দেয়া হলো।
মি. সিনহা লেখেন, প্রধানমন্ত্রী এবং তার দলের অন্যান্য সদস্য ও মন্ত্রীরা পার্লামেন্টের বিরুদ্ধে যাবার জন্য আমার কঠোর নিন্দা করেন। প্রধানমন্ত্রী সহ ক্যাবিনেট মন্ত্রীরা আমার বিরুদ্ধে অসদাচরণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ এনে বদনাম করতে শুরু করেন। আমি যখন আমার সরকারি বাসভবনে আবদ্ধ, আইনজীবী এবং বিচারকদের আমার সাথে দেখা করতে দেয়া হচ্ছিল না, তখন সংবাদমাধ্যমকে বলা হয় – আমি অসুস্থ. আমি চিকিৎসার জন্য ছুটি চেয়েছি।
একাধিক মন্ত্রী বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবো। অক্টোবরের ১৪ তারিখ, যখন আমি দেশ ছাড়তে বাধ্য হই – তখন একটি প্রকাশ্য বিবৃতিতে আমি পরিস্থিতি স্পষ্ট করার চেষ্টায় একটি বিবৃতি দেই যে আমি অসুস্থ নই এবং আমি চিরকালের জন্য দেশ ছেড়ে যাচ্ছি না।
আমি আশা করছিলাম যে আমার প্রত্যক্ষ অনুপস্থিতি এবং আদালতের নিয়মিত ছুটি – এ দুটো মিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সহায়ক হবে, এবং শুভবুদ্ধির উদয় হবে, সরকার ওই রায়ের যে মর্মবস্তু – অর্থাৎ বিচারবিভাগের স্বাধীনতা যে জাতি ও রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর – তা বুঝতে পারবে। শেষ পর্যন্ত দেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা – যার নাম ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স – তাদের ভীতি প্রদর্শন এবং আমার পরিবারের প্রতি হুমকির সম্মুখীন হয়ে আমি বিদেশ থেকে আমার পদত্যাগপত্র জমা দেই।
মি. সিনহা লেখেন, তার এ বইতে তার ব্যক্তিগত ও বিচার বিভাগে কর্মজীবনের কথা, বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রতি চ্যালেঞ্জসমূহ, বিচারবিভাগ ও রাজনীতিবিদদের মূল্যবোধের অবক্ষয়, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, পুলিশের বাড়াবাড়ি, জরুরি অবস্থার প্রভাব, এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ডিজিএফআইয়ের অর্থ আদায়ের বিবরণ আছে।
বিচারপতি সিনহার বই-এর একটি মুখবন্ধ রয়েছে – যাতে তিনি সংক্ষেপে “বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের দ্বন্দ্ব” বর্ণনা করেছেন এবং তার ভাষায় কী পরিস্থিতিতে তিনি প্রধান বিচারপতির পদ ত্যাগ করে বিদেশে গিয়েছিলেন তা লিখেছেন।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এ নিয়ে বিবিসি বাংলাকে সাক্ষাতকারও দিয়েছেন। গত বছরের নানা নাটকীয় ঘটনাবলীর পর কোন গণমাধ্যমে এটিই ছিল তার প্রথম সাক্ষাৎকার।
‘আপনাকে বলা হলো বিদেশে যাবেন, কিন্তু যাচ্ছেন না’
তিনি সাক্ষাতকারে বলেন, আমাকে যখন কমপ্লিটলি হাউজ এ্যারেস্ট করা হলো, …তখন বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিদিন একজন করে ডাক্তার আমার কাছে পাঠানো হতো। আমি নি:শ্বাস নিতে পারছিলাম না। এর মধ্যে ডিজিএফআইয়ের চিফ এসে বললেন, হ্যাঁ আপনাকে বলা হলো আপনি বিদেশ যাবেন, আপনি যাচ্ছেন না।
আমি বললাম: কেন যাবো আমি বিদেশে?
আপনি চলে যান, আপনার টাকা পয়সার আমরা ব্যবস্থা করছি।
আমি বললাম, এটা হয় না, আমি আপনাদের টাকা নেবো না। আর আপনারা বললেই আমি ইয়ে করবো না। আমি চাই সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমি আলাপ করি । ব্যাপারটা কি হয়েছে আমি জানতে চাই। (তিনি) বলেন যে প্রধানমন্ত্রী আপনার সাথে কথা বলবেন না।
বাংলাদেশের পার্লামেন্টে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের ইমপিচ করার ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পরিবর্তে পার্লামেন্টের সদস্যদের দেবার পর ২০১৬ সালের ৫ই মে হাইকোর্ট ডিভিশনের একটি বিশেষ বেঞ্চ ওই সংশোধনীকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেয়। সরকার এর বিরুদ্ধে আপীল করে, এবং সাত সদস্যের একটি বেঞ্চে আপীলের শুনানী হয়।
বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার বইতে লেখেন, “জুলাইয়ের ৩ তারিখ প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ আপীল খারিজ করে হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় বহাল রাখে। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের ১ তারিখ সর্বসম্মত রায়ের পূর্ণ বিবরণ প্রকাশিত হয়।
সেখানে তিনি লেখেন, ওই সিদ্ধান্তের পর সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখে পার্লামেন্ট একটি প্রস্তাব পাস করে – যাতে সেই রায়কে বাতিল করার জন্য আইনী পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়।
- চকরিয়ায় সড়ক বিভাগের জায়গা থেকে ৯০ অবৈধ দোকান উচ্ছেদ
- চকরিয়ায় নয়াবাদি খাল দখলমুক্ত ও সংস্কার দাবি কৃষকদের
- চকরিয়ায় সংরক্ষিত বনে বন্যাহাতির আক্রমণে শ্রমিক নিহত, আহত ১
- চকরিয়ায় টিআইবি সনাকের মানববন্ধন
- কক্সবাজার প্রেস ক্লাবকে সংষ্কারের দাবিতে সাংবাদিকদের সভা অনুষ্ঠিত
- অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যু, বিভিন্ন মহলের শোক
- জেলায় ডা:শফিকুর রহমানের আগমন ও সম্মেলন সফল করতে চকরিয়া জামায়াতের প্রস্তুতি সভা
- সড়কবাতি স্থাপন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ
- নাইক্ষ্যংছড়ি’র ফুলতলী পয়েন্টে ১১বিজিবির হতে ৩১টি বার্মিজ গরু জব্দ!
- চকরিয়ায় অভিযোগের ৪ মাসেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের তদন্ত হয়নি
- জেলার শীর্ষ গরুচোর বহু মামলার আসামী নবী হোছাইনসহ তার বাহিনীকে গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন
- পেকুয়ায় ব্যবসায়ীর উপর হামলার ঘটনায় দুই আ’লীগ নেতা জেল হাজতে
- জেলার শীর্ষ গরুচোর বহু মামলার আসামী নবী হোছাইনসহ তার বাহিনীকে গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন
- চকরিয়ায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা মানছে না পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা
- সড়কবাতি স্থাপন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ
- জেলায় ডা:শফিকুর রহমানের আগমন ও সম্মেলন সফল করতে চকরিয়া জামায়াতের প্রস্তুতি সভা
- নাইক্ষ্যংছড়ি’র ফুলতলী পয়েন্টে ১১বিজিবির হতে ৩১টি বার্মিজ গরু জব্দ!
- অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যু, বিভিন্ন মহলের শোক
- চকরিয়ায় অভিযোগের ৪ মাসেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের তদন্ত হয়নি
- কক্সবাজার প্রেস ক্লাবকে সংষ্কারের দাবিতে সাংবাদিকদের সভা অনুষ্ঠিত
- চকরিয়ায় টিআইবি সনাকের মানববন্ধন
- চকরিয়ায় সংরক্ষিত বনে বন্যাহাতির আক্রমণে শ্রমিক নিহত, আহত ১
পাঠকের মতামত: