প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, সংবিধান সুপ্রিম কোর্টকে জুডিশিয়াল রিভিউ করার ক্ষমতা দিয়েছে। সংবিধানের ৫ম, ৭ম, ৮ম ও ১৩তম সংশোধনী সংবিধানের মূল স্তম্ভের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় তা বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ভবিষ্যতেও যদি এ ধরনের কোনো বিধান বা আইন হয় এবং তা যদি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় তা বাতিলে পিছপা হবে না সুপ্রিম কোর্ট। সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে এখানে কোনো দ্বি-মত নেই। গতকাল রোববার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভূমি আইন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও প্রথম ব্যাচের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের সংবিধানে আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের কথা বলা হয়েছে। একটি বিভাগ আরেকটি বিভাগের উপর প্রাধান্য বজায় না করে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ এটাই হলো সংবিধানের নীতি। এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু পরিপূরক হিসেবে কিভাবে কাজ করব প্রশ্নটা সেখানে? তিনি বলেন, সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ক্ষমতার উৎস জনগণ। প্রশ্ন হচ্ছে যদি কোনো আইন অন্য প্রচলিত আইনের পরিপন্থি হয় সেটি বেআইনি হয়ে যাবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রণীত সংবিধানে আইনের শাসন ও জুডিশিয়াল রিভিউ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আর এই জুডিশিয়াল রিভিউর একমাত্র ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের। এখন যদি একটি আইন আরেকটি আইনের পরিপন্থি হয় সেটি অবৈধ ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি বলেন, জাতীয় সংসদের দুই তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্য ঐকমত্য হলেই সংবিধান সংশোধন করতে পারেন। শুধু দুই-তৃতীয়াংশ নয় সকল সংসদ সদস্যরা সংবিধানকে স্ক্র্যাপ (বাতিল) করতে পারেন সেই ক্ষমতা আছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট যদি দেখে এতে সংবিধানের মূল ভিত্তি নষ্ট হয়ে গেছে, আইনের শাসনের প্রতি আঘাত এসেছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে জনগণের ফান্ডামেন্টাল রাইটস যেসব অধিকার রয়েছে, তাহলে আমরা ততটুকু বেআইনি বলে দেব।
প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি দেশের উন্নয়নের মাত্রা যদি শুধু টাকা দিয়ে নির্ণয় করা হতো তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশই সেই স্বীকৃতি পেতো। তবে এর পূর্ব শর্ত হলো আইনের শাসন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে সরকার এবং জনগণকে আইন মেনে চলতে হবে। আমি আইন মানবো না, আরেক জনকে বলবো তুমি আইন মেনে চলো এটা একতরফা হয়ে যায়। পুলিশকেও আইন মানতে হবে। প্রতি পদে পদে আইনের শাসন মেনে চলতে হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী হোক যদি আইন অমান্য করে তাহলে পুলিশের ক্ষমতা থাকবে জরিমানা করার। যদি এই জরিমানা করার পর ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে তিরস্কার বা আইজিপির কাছে নালিশ করি বা আদালত অবমাননার রুল জারি করি তাহলে তার চাকরি চলে যাবে। জন মেজর নিজে গাড়ি চালিয়ে গিয়ে কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছে- এটাই হবে আইনের শাসন। এজন্য আমাদের অনেক কিছুতেই পরিবর্তন আনতে হবে। সংস্কার করতে হবে আইনের।
তিনি বলেন, আজকে বলা হচ্ছে দেশে ডিজিটালাইজেশন করা হবে। এটা ছাড়া কোনোভাবেই উন্নয়ন হবে না। কিন্তু আমরা ডিজিটালাইজেশনের অর্থ জানি না। এভিডেন্স অ্যাক্টে ডিজিটালাইজেশনের সংজ্ঞা বা ব্যাখ্যা নেই। প্রধান বিচারপতি বলেন, আমেরিকার সিনেটের ৯০ ভাগ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৮০ ভাগ সদস্যই ল’ ব্যাকগ্রাউন্ডের। বৃটেনের অধিকাংশ প্রধানমন্ত্রী একই পেশার। আপনি যত ক্ষমতাধরই হোন না কেন যেমন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিবাসী ইস্যুতে এত হুমকি-ধামকি দিলো, তাকে সারা বিশ্বের প্রেসিডেন্ট বলা হয়। এরা আকার ইঙ্গিতে যা বলে সেগুলো আমরা মেনে চলি। সে দেশে কেউ অপরাধ করলে পালিয়ে গেলে অন্য দেশ থেকে ধরে নিয়ে যায়। এত ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্টের অভিবাসী ইস্যুতে জারি করা আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন একজন বিচারক। আইনের শাসন হলো সেটাই। এজন্য আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে। যত ক্ষমতাধরই হোন না কেন টুঁ-শব্দ করেন না।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা যখন কোনো রায় দেই তাতে অনেক সময় প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়। তখন কষ্ট লাগে। এটা কিন্তু সংবিধান না মানারই শামিল। আমরা কোনোমতেই নিজেদের সভ্য হিসেবে দাবি করতে পারবো না যতদিন পর্যন্ত সংবিধান ও আইনের শাসন না মেনে চলি। এমনকি সিদ্ধান্ত আমার বিরুদ্ধে গেলেও আমি মাথা পেতে নেব।
তিনি বলেন, সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। এর অভিভাবক সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট যে ব্যাখ্যা দেবে সেটা মানতে হবে। সংবিধানই সুপ্রিম কোর্টকে এই ক্ষমতা দিয়েছে। তিনি বলেন, সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে সুপ্রিম কোর্ট সময়ে সময়ে যে নির্দেশনা দিয়ে থাকে এটা মেনে চলতে হবে। তখনই আমরা নিজেদেরকে পৃথিবীর বুকে সভ্য দেশ হিসেবে দাবি করতে পারবো। ভূমি আইন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান রিচার্ডসনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, ট্রেজারার অধ্যাপক মো. সেলিম ভূঁইয়া এবং আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সরকার আলী আককাস উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশ:
২০১৭-০৫-০১ ১৪:৪৩:৫৯
আপডেট:২০১৭-০৫-০১ ১৪:৪৩:৫৯
- চকরিয়ায় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ
- ইসলামের বৃহৎ স্বার্থে চকরিয়া জামায়াতে ইসলামীর সাথে একটেবিলে বসতে চায়
- চকরিয়ায় চিংড়িঘের দখল নিয়ে দু-গ্রুপে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১, অস্ত্রসহ ৪ সন্ত্রাসী আটক
- চকরিয়ায় পৌরশহরের তিনটি আবাসিক হোটেল ও চারটি রেস্টুরেন্টে অভিযান
- কিশলয় শিক্ষা নিকেতন স্কুলে বিলুপ্ত কমিটির স্বাক্ষর নিয়ে বিল ভাউচার করার অভিযোগ
- শীতের কম্বল দিতে বেড়িয়ে পড়েন চকরিয়ার মানবিক ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি মেম্বারসহ আহত ৪
- কক্সবাজার সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আকতার চৌধুরী
- পেকুয়ায় রব্বত আলী পাড়া সড়কে গাড়ি চলে না ২০ বছর!
- চকরিয়ায় বাস চাপায় বৃদ্ধ নিহত
- চকরিয়ায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণরর মামলার অন্যতম আসামি ফারুককে গ্রেফতার করেছে র্যাব
- চকরিয়ায় সংঘবদ্ধ কিশোরী ধর্ষণকাণ্ডে ৭ জন গ্রেফতার, ৩ জন জেলহাজতে
- জমজম হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু ডাক্তারের বক্তব্য
- খুটাখালীতে শতাধিক পরিবারে শীতবস্ত্র বিতরণ
- সঙ্গী হাতির আক্রমণে কৃষক নিহত চকরিয়ায়
- পেকুয়ায় রব্বত আলী পাড়া সড়কে গাড়ি চলে না ২০ বছর!
- কক্সবাজার প্রেসক্লাবকে বৈষম্য মুক্ত করতেই হবে
- নাইক্ষ্যংছড়িতে হতদরিদ্রদের মাঝে বিজিবির শীতবস্ত্র বিতরণ
- কক্সবাজার সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আকতার চৌধুরী
- চকরিয়ায় পৌরশহরের তিনটি আবাসিক হোটেল ও চারটি রেস্টুরেন্টে অভিযান
- চকরিয়ায় রেল স্টেশন মাস্টারকে ছুরিকাঘাত করেছে দুবৃর্ত্তরা
- চকরিয়ায় মৎস্য অধিদপ্তরের উদোগে নৌযান মালিক ও সারেং দের নিয়ে কর্মশালা
পাঠকের মতামত: