বুধবার ২য় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে কুতুবদিয়া ও সদর উপজেলা
এম.এ আজিজ রাসেল ::
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কক্সবাজার পৌরসভা আয়োজিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনাল দেখতে ফুটবল প্রেমীদের ঢল নামে স্টেডিয়ামে। এই ভীড় সামাল দিতে হিমশিম খেয়ে উঠে আয়োজক কমিটির সদস্যরা। খেলা শুরুর ৩০ মিনিট আগে দুই দলের সমর্থকে টুইটুম্বুর হয়ে উঠে গ্যালারি। মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) বিকালে কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নামে শক্তিশালী রামু ও টেকনাফ। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় রামুকে ১-০ গোলে পরাস্ত করে জেলার ইতিহাসে প্রথম বারের মতো কোন টুর্নামেন্টে ফাইনালে যাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ।
প্রথমার্ধের শুরুতে আক্রমনাত্মক হয়ে উঠে টেকনাফের খেলোয়াড়েরা। তবে তাদের ছাড় দিতে নারাজ শক্তিশালী রামু। কিন্তু ৬ মিনিটের মাথায় হতাশায় ডুবে রামুর সমর্থকেরা। এসময় রামুর ডিবক্সে বল পেয়ে টেকনাফের ৯নং জার্সিধারী শেখ আহমদ বল বাড়িয়ে দেয় খানিক দুরে থাকা নাইজেরিয়ান খেলোয়াড় জেরি। এসময় ক্রস শটে রামুর গোল রক্ষক শামীমকে বোনা বানিয়ে জালে বল পাঠিয়ে দেন তিনি। এতে তুমুল উল্লাসে ফেটে পড়ে টেকনাফের হাজারো সমর্থক। ১৪ নং জার্সিধরাী জেরির এই গোলটি ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ঘুরিয়ে দেয়। ১-০ গোলের স্কোরলাইন পরিবর্তনে বিরতির আগে ২টি গোলের সুযোগ আসে রামুর কাছে। তবে টেকনাফের রক্ষন ভাগের চৌকষ উগান্ডার খেলোয়াড় বিশাল দেহের ইকাঙ্গার প্রাচীর টপকাতে বেশ হিমশিম খেতে হয় তাদের।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে টেকনাফ ডিফেন্সিভ খেলতে থাকে। তবে গোল শোধের নেশায় একের পর এক আক্রমণে যায় রামু। বিশেষ করে রামুর মিডফিল্ডার জাহাঙ্গীর, ফরোয়ার্ড পারভেজ ও ইকুয়েডরের খেলোয়াড় এরিক কয়েকটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। ম্যাচের ৪৭ ও ৬০ মিনিটে সোহেল বড়ুয়া ও রিদুয়ানের নিশ্চিত গোলের ২টি হেড নিরাপদে তালুবন্দি করেন টেকনাফের গোল রক্ষক ফয়সাল। তারমধ্যে একটি হেডও এদিক-সেদিক হলে ফলাফল হয়তোবা পাল্টে যেত। তবে এইদিন মনে হয় ভাগ্য বিধাতা রামুর পক্ষে সহায় ছিলেন না। না হয় ম্যাচের ৬৪ মিনিটে স্ট্রাইকার পারভেজের একটি চমৎকার শটে বল চলে যায় টেকনাফের জালে। কিন্তু তার আগে থেকেই ম্যাচ রেফারি ফরহাদ হোসেন চৌধুরী অফসাইডের বাঁশি দিয়েছিলেন। ফলে ক্ষণিকের আনন্দে ভাটা পড়ে রামু সমর্থকদের। রেফারির শেষ বাঁশিতে মলিন হয়ে যায় রামু খেলোয়াড়দের চেহারা। আর জেলার ইতিহাসে প্রথম শ্রেণীর কোন টুর্নামেন্টে প্রথমবার ফাইনালে যাওয়ার গৌরবে উৎসবে মাতে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের খেলোয়াড়, কর্মকর্তা ও সমর্থকেরা।
অলরাউন্ডার নৈপূণ্যে ম্যাচ সেরা হয় টেকনাফের শেখ আহমদ। তাকে ম্যান অব দ্যা ম্যাচের ট্রফি তুলে দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, টুর্নামেন্ট কমিটির আহবায়ক প্যানেল মেয়র-২ হেলাল উদ্দিন কবির, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সাংবাদিক এম.আর মাহবুব, টুর্নামেন্টের মিডিয়া ও প্রচার কমিটির সদস্য সাংবাদিক এম.এ আজিজ রাসেল।
টেকনাফ উপজেলা ঃ ফয়সাল, ইব্রাহিম, তৈয়ব, এনাম, হারুন, মকবুল, দিদার, মেহেদী, শেখ আহমদ, জাহাঙ্গীর, রবিন, স্টিভিং, ইকাঙ্গা, জেরী, শাওন, কায়সার, নুরুল ইসলাম, মনজুর, আবু হানিফ, ম্যানেজার জিয়াউর রহমান ও কোচ বাবুল শর্মা।
রামু উপজেলা ঃ শামীম (গোলরক্ষক), ফেবার, এরিক, দিদার, জাহাঙ্গীর, মোহাম্মদ রিদুয়ান, ইমন বড়ুয়া, সোহেল বড়ুয়া, পারভেজ, আবদুল্লাহ, দুর্জয় বড়ুয়া, দিদার-২, সাইফুল ইসলাম, আরিফ, ইমন বড়ুয়া-২, জমির, সুমন, ম্যানেজারঃ গিয়াস উদ্দিন কোম্পানী ও কোচ শিপন বড়ুয়া।
রেফারি ঃ ফরহাদ হোসেন চৌধুরী সহকারি রেফারি ঃ মো. হেলাল, বিশ^জিৎ শাহা ও সাইফুল ইসলাম।
বুধবার (২০ জানুয়ারী) দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে কুতুবদিয়া ও সদর উপজেলা।
পাঠকের মতামত: